নিউজ ডেস্কঃ
গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকায় সোমবার বিকালের এই সংঘর্ষে ১১ পুলিশসহ কমপক্ষে ১৯ জন আহত হন বলেও জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) হাবিবুর রহমান।
বাঁশখালীর এ ঘটনা তদন্তে এক সদস্যের একটি কমিটি করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মমিনুর রশিদ জানান, তাকে এই তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে।
কয়লাভিত্তিক বেসরকারি ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জমি নেওয়াকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ ছিল। তবে একটি অংশ ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে অবস্থান নিলে দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়।
বাঁশখালীর এ ঘটনা তদন্তে এক সদস্যের একটি কমিটি করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মমিনুর রশিদ জানান, তাকে এই তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে।
কয়লাভিত্তিক বেসরকারি ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জমি নেওয়াকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ ছিল। তবে একটি অংশ ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে অবস্থান নিলে দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতাকারীরা সোমবার ‘বসতভিটা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিলে অন্য পক্ষও পাল্টা সমাবেশ ডাকে। উত্তেজনা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া সার্কেলের এএসপি এ কে এম এমরান ভুইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুপুরে ওই এলাকায় পুলিশ অবস্থান নিলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। পুলিশ চলে আসতে চাইলে রাস্তা অবরোধ করে হামলা চালায় তারা।”
এসময় বিক্ষুব্ধরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালায় দাবি করে এমরান বলেন, “পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। দু’পক্ষের গোলাগুলিতে সাত পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) হাবিবুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে-বিপক্ষের লোকদের সংঘর্ষ থামাতে গেলে পুলিশের উপর হামলা হয়। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে।”
বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধীদের উপর হামলায় পুলিশের সঙ্গে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষের লোকজনও অংশ নিয়েছিল বলে স্থানীয়রা জানান।
তখন কয়েকজন নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লেও পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েক ঘণ্টা তা স্বীকার করা হয়নি।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- মর্তুজা আলী (৫০), আনোয়ার হোসেন ওরফে আংকুর আলী (৪৫) ও জাকির আহমেদ (৩৫)।
রাত সোয়া ১১টার দিকে হাবিবুর জানান, সংঘর্ষে মো. জাকের (৫৫) নামে আরেকজন মারা গেছেন। তিনজনের লাশ বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং একজনের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেলে রয়েছে।
বাঁশখালী থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদারসহ ১১ পুলিশ সদস্য আহত হন বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর।
বাঁশখালীর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রেজাউল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত ১৯ জনকে ভর্তি করা হয়; তাদের অধিকাংশই পুলিশ।
আহতদের মধ্যে এক আনসার সদস্যসহ ছয়জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর কথা জানান তিনি।
আহত জাকিরকে রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান চমেক পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই পংকজ বড়ুয়া।
আহত আরও পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছয়জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ জাকিরকে মৃত ঘোষণা করেন।”
হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আবু খান (৫০), আবদুল খালেক (২৫), মোহাম্মদ জহির (৩০), আনসার উদ্দিন (৩০) ও মজিবুর রহমান (২০)।
সন্ধ্যার আগেই বড়ঘোনা এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বলে জানান সাতকানিয়া সার্কেলের এএসপি এমরান।
স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, গত রোববার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। এর প্রতিবাদেই সোমবার সমাবেশ ডেকেছিল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধীপক্ষ।
গণ্ডামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনায় ‘১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র’ যৌথভাবে নির্মাণ করছে এস আলম গ্রুপ ও চীনের একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ভূমি অধিগ্রহণ চলছে।
ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়রা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করছে। তাদের অভিযোগ, এস আলম গ্রুপ পুনর্বাসনের সুযোগ না দিয়ে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হলে বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নের লবণ ও চিংড়ি চাষিরা বেকার হয়ে পড়বেন বলেও স্থানীয়দের আশঙ্কা।
জোর করে জমি নেওয়ার বিষয়ে এস আলম গ্রুপের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
সূত্রঃ বিডিনিউজ২৪
সূত্রঃ বিডিনিউজ২৪
0 মন্তব্যসমূহ