বিএন ডেস্কঃ
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার ইদিলপুর পাইলট
উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে যুবলীগের স্থানীয় এক নেতার পারিবারিক অনুষ্ঠান আয়োজন
করতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আজ শনিবারের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশাসনকে না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে
অভিযোগ উঠেছে।
গোসাইরহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান
মিয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। কোনো
অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা স্থগিত রেখে কোনো ব্যক্তির অনুষ্ঠান করার
অনুমতি দিতে পারেন না। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াহ ইয়া খান
বলেন, ‘ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান করার জন্য স্কুলমাঠ ব্যবহারের কোনো তথ্য আমার
জানা নেই। ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা বন্ধ রেখে এমন কাজ করা অন্যায়। প্রধান
শিক্ষক কেন এ কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন, তাঁকে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্র জানায়, গোসাইরহাট উপজেলার বিভিন্ন
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার।
উপজেলার সব বিদ্যালয়ে একই সময়সূচিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু ইদিলপুর
পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শনিবারের বাংলা ও ইংরেজি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
গোসাইরহাট পৌরসভার যুবলীগের আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন সরদারের
একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান স্কুলমাঠে অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর মায়ের মৃত্যু হওয়ায় এ
উপলক্ষে আজ শনিবার ওই মাঠে একটি ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। মাঠে প্যান্ডেল
তৈরি করে পাঁচ হাজার মানুষকে খাওয়ানো হবে। এ কারণে আজ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা
স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। গত বৃহস্পতিবার
শিক্ষার্থীদের নোটিশ দিয়ে পরীক্ষা বন্ধ থাকার কথা জানানো হয়।
বিদ্যালয়ের ১ হাজার ৫৫০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দুটি পালায় (শিফট) পরীক্ষা নেওয়া
হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাবা আ. আউয়াল
সরদার বলেন, ‘হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধ রাখার খবর পেয়ে আমরা উদ্বিগ্ন হয়েছি। পরে
খবর নিয়ে জানতে পারলাম, মাঠে এক নেতার পারিবারিক অনুষ্ঠান হবে। এভাবে কোনো
ব্যক্তির পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য পরীক্ষা বন্ধ রাখা উচিত হয়নি।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান বলেন, ‘কামাল
উদ্দিন সরদার আমাদের বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য। তিনি মাঠে অনুষ্ঠান
করার অনুমতি চাইলে শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপ করি। সবাই সম্মতি দেওয়ায় আমি
অনুমতি দিয়েছি। অনুষ্ঠানে অনেক লোকজন উপস্থিত হবে, শিক্ষার্থীরা বিরক্ত
হবে, এমন চিন্তা করে পরীক্ষা বন্ধ রেখেছি। সব পরীক্ষা শেষ হলে স্থগিত হওয়া
পরীক্ষা নিয়ে নেব।’
গোসাইরহাট পৌরসভা যুবলীগের আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন সরদার
বলেন, ‘আমরা সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো খোলা মাঠে করে থাকি। আমার বাড়িতে জায়গা
কম থাকায় স্কুলমাঠ ব্যবহার করছি। সামাজিক একটি কাজের জন্য শিক্ষার্থীদের
একটু অসুবিধা হয়েছে।’
সূত্রঃ প্রথম আলো
0 মন্তব্যসমূহ