আজ জাপানের মুখোমুখি বাংলাদেশের মেয়েরা

প্রতিপক্ষকে ১০ গোল দেওয়ারও অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবলারদের। ব্যপারটা গর্বেরই। গত বছর এএফসি অনূর্ধ্ব১৬ ফুটবলেরসিগ্রুপের বাছাইয়ে কিরগিজস্থানকে ১০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব১৬ নারী ফুটবল দল। শুধু কিরগিজস্থান কেন, সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই দাপট দেখিয়েছিল গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। পাঁচ প্রতিপক্ষকে দিয়েছিল সবমিলিয়ে ২৬ গোল, হজম করেছিল মাত্র গোল। পুরুষ জাতীয় দলের ক্রমাগত ব্যর্থতার মাঝে কৃষ্ণাসানজিদাস্বপ্নারা হয়ে উঠেছিল দেশের ফুটবলের আশা ভরসার প্রতীক। কিন্তু থাইল্যান্ডের চলমান চ্যাম্পিয়নশীপে মূল পর্বের লড়াইয়ে নামতেই পাল্টে গেলো চিত্র। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই উত্তর কোরিয়ার কাছে গোলে হেরে গেছে লালসবুজের প্রতিনিধিরা। ম্যাচের আগে লড়াইয়ের যে প্রত্যয়, তা ¯্রফে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। প্রতিপক্ষ প্রবল শক্তিশালী। কিন্তু এক বছরের প্রস্তুতিও যে বিফলে গেলো। অবশ্য এমনটা হতেই পারে। কিরগিজস্থানকে ১০ গোল দেওয়া আর উত্তর কোরিয়ার মতো চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে লড়াই এক কথা নয়। চ্যাম্পিয়নশীপে সেদিন ছিল বাংলাদেশের মেয়েদের প্রথম ম্যাচ। আজ জাপানের বিরুদ্ধে, টানা এক বছরের প্রস্তুতি জাপানের মাটিতে প্রীতি ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতাকতটা কাজে এলো সেটা বোঝা যাবে আজ। জাপানের বিপক্ষে লড়াইয়ের প্রত্যয় প্রকাশ করেছেন ছোটন। উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে হার থেকেই শিক্ষা নিয়ে মাঠে নামবেন বলে জানান তিনি, ‘এখন আমাদের সব মেয়েরা ওয়ার্ল্ড লেভেলের ফুটবলটা বুঝতে পারছে। এই টুর্নামেন্ট আমাদের সামনে উন্নতির জন্য সাহায্য করবে।এএফসি অনূর্ধ্ব১৬ নারী ফুটবলের মূল পর্বের আসরটি এক অর্থে এশিয়ার সেরা আটের লড়াই
এক বছর আগে যেখানে বাংলাদেশ নিজেদের যোগ্য প্রমাণ করেই জায়গা নেয়। এখন বাংলাদেশের জন্য সফরটি এক রকম শিক্ষা সফর। কৃষ্ণাসানিজিদাদের প্রেরণা নেওয়ার। গোলাম রব্বানী ছোটন মেয়েদের ফুটবলে বেশ বছর ধরেই কাজ করছেন। তার অধীনেই একের পর এক সাফল্য পেয়েছে নারী ফুটবল। কিশোরী মেয়েদের এএফসি কাপে তুলেছেন। নারী সাফ ফুটবলে বাংলাদেশকে রানার্সআপ করেছেন। সেই কোচ উত্তর কোরিয়ার কাছে হারের কারণ ব্যাখ্যায় বলছেন, ‘তারা বয়স ভিত্তিক সব পর্যায়েই চ্যাম্পিয়ন দল। আমাদের বেশ কিছু খেলোয়াড় নিজেদের সেরাটা দিতে পারেননি। এবং আমাদের গোলকিপার বেশ কিছু ভুল করেছে। অন্যথায় ম্যাচের ফলে গোল কম হতে পারতো। গোল কম হওয়া মানে গোলে হারলেও বাংলাদেশ হয়তো সেটিকেই বড় প্রাপ্তি হিসেবে দেখতো। কিন্তু হাস্যকর সব ভুল করা এক গোলকিপারকেই কি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায়? মেয়েদের ফুটবলে গোল কিপিং সমস্যটা নতুন নয়। এর আগেও এই পজিশনের দুর্বলতায় ভুগেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এক বছরের প্রস্তুতিতেও সেই পজিশনে আসেনি উন্নতি। ঘরের মাঠে গত বছরের বাছাই পর্বে বাংলাদেশের গোল কিপিং পজিশন শুধু দাঁড়িয়ে থেকেই সময় পার করেছে। রক্ষন এমন কি বাংলাদেশের অর্ধে বলই এসেছে হাতে গোনা। প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে সারাক্ষণ তাদের অর্ধেই বল নিয়ে দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচে ২৬ গোল তো তারই প্রমাণ। তবে ওই খেলার গর্বটা যেমন চিরন্তন, তেমননি অপ্রিয় হলেও এটাও সত্য, পরবর্তি এক বছরে বাংলাদেশ উত্তর কোরিয়ার কাছে গোল খাওয়া থেকে বিরত থাকার শক্তিও অর্জন করতে পারেনি। যদিও সংবাদ মাধ্যমে খবর হয়েছে, বছর জুড়ে সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছে দলের পেছনে। বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে কোন টুর্নামেন্টের আগে এক বছরের প্রস্তুতি নিতেও দেখা যায়নি কোন দলের। মেয়েরা বিদেশে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে। কিন্তু ফলাফল২০১৬ এর সেই শঙ্কাই। তখন মূল পর্বে উত্তির্ণ হওয়ার পর মেয়েরা কেমন করবে বড় দলের সঙ্গে এই আলোচনায় যে ভয় ছিল, এক বছর পর সেটিই ঘোরতর বাস্তব
সুত্র : দৈনিক পূর্বকোণ


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ