বাঁশখালীর লোকালয়ে মুরগির খামার দুর্গন্ধে পরিবেশ বিপর্যয়

বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ও খানখানাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন লোকালয়ে গড়ে উঠেছে মুরগির খামার। এতে জনবসতি এলাকায় মুরগির উচ্ছিষ্ট মল, বিষ্ঠার দুর্গন্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে রোগব্যাধি দেখা দিচ্ছে। এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পদোন্নতিজনিত বদলি হওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মো. চাহেল তস্তুরী চৌধুরী ঘাটে লেয়ার মুরগির খামারটি পরিবেশসম্মত স্থানে ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া গড়ে তোলায় তদন্তে গিয়ে মালিক পক্ষকে খামারটি বন্ধের জন্য মৌখিক নির্দেশ দেন। কিন্তু লেয়ার মুরগির খামারটি এখনও মুরগির ডিম উৎপাদনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে উঠা খামারগুলোর দুর্গন্ধের ব্যাপারে প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডা. ওয়ারেছ কামাল বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।
জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলায় বাহারছড়া, খানখানাবাদ ও সাধনপুর এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণি সম্পদ বিভাগের অনুমতি ছাড়াই লেয়ার মুরগীর খামার গড়ে তোলায় হয়েছে। জনবসতি এলাকায় মুরগীর গড়ে তোলা নিষেধ থাকলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন অজুহাতে মুরগীর খামার গড়ে তুলেছে। রায়ছটা চৌধুরী ঘাট এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি জায়গায় ১/২ বছরের জন্য নজরুল ইসলাম ও সোনিয়ারা বেগম ডোবা পুকুরে মাছ চাষের জন্য লিজ নিয়ে পুকুর পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে লেয়ার মুরগীর খামার। ২টি শেডে সাড়ে ৪ হাজার লেয়ার মুরগীর খামারটি পরিচালনা করছেন ভূমি অফিসে চাম্বল সহকারী তহশিলদার দিদার উদ্দিন ও তার পুত্র মো. শাহেদ। পুকুরের স্থানে রায়ছটা পুলিশ বিট অফিস, মসজিদ ও চৌধুরী ঘাট বাজারসহ দুই শতাধিক বসতবাড়ি। কিছু দূরবর্তী স্থানে রয়েছে ৪টি শেডে ৮ হাজার মুরগির শাহ আমানত পোলট্রি ফার্ম। বেশ কিছুদিন মুরগীর উচ্ছিষ্ট মল, বিষ্টার দুর্গন্ধে চলাচলরত সাধারণ মানুষসহ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকার জনসাধারণ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। পুকুরের পাড়ে ২টি শেডের মুগরীর বিষ্টা ৬ শতক ডোবা জমিতে ফেলে রাখায় ভরাট হয়ে গিয়েছে।
স্থানীয়রা বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে গড়ে তোলা মুরগীর খামারগুলো বন্ধের জন্য অভিযোগ করার পর দিদারুল হক গত দুইদিন মুরগীর বিষ্টাগুলো নাড়াচড়া করে ফেলে রাখে। সম্পূর্ণভাবে মুরগীর মলগুলো পরিস্কার না করায় পরিবেশ আরও দুর্গন্ধময় হয়ে পড়েছে।
খামারের মালিক দিদারুল ইসলাম বলেন, মুরগীর খামারের জন্য সরকারিভাবে আবেদন করা হয়েছে। মল বা বিষ্টাগুলো জমি থেকে সরিয়ে ফেলা হবে। বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, বাহারছাড়া এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধভাবে মুরগীর খামার, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। তবুও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাসিক সমন্বয় সভায় খামারগুলো বন্ধের জন্য অভিযোগ তোলা হয়েছে। বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওয়ারেছ কামাল বলেন, বাঁশখালীতে যে সমস্ত লেয়ার মুরগীর খামার রয়েছে তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। বিষ্টার দুর্গন্ধ জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বিধায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান মোল্লা বলেন, পরিবেশের ক্ষতি হয় এ ধরনের কোন মুরগির খামার গড়ে তোলা যাবে না।
সুত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ