বাঁশখালীর প্রধান সড়ক অবশেষে সম্প্রসারণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে
সড়ক ও জনপদ বিভাগ। ইতোমধ্যে গত ১০ জানুয়ারি সড়ক সম্প্রসারণে দরপত্রের কাজ
সম্পন্ন হয়েছে এবং অচিরেই এই সম্প্রসারণ কাজ শুরু হবে বলে জানান সওজ’র
দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
জানা যায়, বাঁশখালীর একমাত্র প্রধান সড়কটি সরু হওয়ায় বিভিন্ন সময় এটি
সম্প্রসারণে দাবি উঠে। এই জনদাবির প্রেক্ষিতে বাঁশখালীর বর্তমান সাংসদ
আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এটি সম্প্রসারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের
সাথে যোগাযোগসহ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে এ কাজের জন্য একনেক
অনুমোদন ও বরাদ্দ প্রদান করে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন জানান,
পিএবি সড়কে পটিয়া-আনোয়ারা অংশে ১৪ কিলোমিটার এবং বাঁশখালী অংশে ১২
কিলোমিটার সম্প্রসারণের জন্য প্রায় ৪৭২ কোটি টাকা একনেকে অনুমোদন হয়েছে। যা
ইতোমধ্যে দরপত্রও সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি অচিরেই এই সম্প্রসারণের কাজ
শুরু হবে। তাছাড়া বর্তমানে বাঁশখালী সড়কের বিভিন্ন অংশের ভাঙন ও ভরাট
কার্যক্রমের জন্য প্রায় ১ কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এই রুটে নিয়মিত চলাচলকারী অনেক যাত্রী জানান, প্রধান সড়কটির সংস্কার কাজ
শেষ হলেও রাস্তা প্রশস্ত না হওয়ায় এখানে ২টি গাড়ি একসাথে চলাচলে যানজট
সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া উপজেলার পুকুরিয়া থেকে প্রেম বাজার পর্যন্ত প্রধান
সড়কের উপরে ৮-১০টি বাজার বসায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকছে এবং এতে নানা
দুর্ঘটনাও ঘটছে। এ সড়কে যানজট নিরসনে বাজারগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি
জানান তারা।
যাত্রীরা আরো জানান, বাঁশখালীর একমাত্র প্রধান সড়কটি পুকুরিয়া থেকে সোজা
পেকুয়ার টৈটংয়ের সাথে সংযুক্ত হলেও অধিকাংশ এলাকায় এটি সরু হওয়ায় প্রায়
এখানে যানজট লেগেই থাকে। তাছাড়া বাঁশখালীতে স্থায়ী কোনো বাস টার্মিনাল না
থাকায় রাস্তার উপর গাড়ি পার্কিং করে রাখায় যানজট এখানকার নিত্য সঙ্গী।
দীর্ঘদিন যাবৎ বাঁশখালীতে একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের দাবি উঠলেও বারবার
তা অজ্ঞাত কারণে হয়ে উঠে না। ফলে একমাত্র প্রধান সড়কের উপর গাড়ি রাখায়
স্কুল কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণের যাতায়াতে চরম
ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এদিকে সড়কটি সম্প্রসারণ হলেও এতে চলাচলরত গাড়িগুলো নিয়ে অভিযোগের শেষ
নেই যাত্রীদের। তারা বলেন, এই রুটের গাড়িগুলোর অবস্থা খুব নাজুক। গাড়ির
সিটগুলো যেমন নড়বড়ে তেমনি ভেতরের পরিবেশটাও অস্বাস্থ্যকর। এখানে ঠিকমত বসা
যায় না। এছাড়া চট্টগ্রাম শহর থেকে বাঁশখালী পর্যন্ত ভাড়াও অনেক।
প্রতি বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত এখানে বেশি ভাড়া আদায়ের জন্য
গাড়ির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রাখেন চালক-মালিকরা। যেখানে অন্যান্য দিন
৩৫-৪০ টাকা ভাড়া সেখানে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত রিজার্ভের নামে
১০০ টাকা আদায় করা হয়। এই সড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলো সুপার, স্পেশাল,
বিরতিহীন, লালবোর্ড নানা নাম দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলেও কার্যত সেবা
পান না যাত্রীরা। অপরদিকে চট্টগ্রাম শহর থেকে আসা-যাওয়াকারী যাত্রীদের
প্রতিনিয়ত বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল ও শাহ আমানত সেতু এলাকায় কাউন্টারে
যাত্রীদের টিকেট পেতে নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
সড়ক সম্প্রসারণ ও বাঁশখালীতে স্থায়ী বাস টার্মিনাল নির্মাণসহ সার্বিক
বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ
অবহেলিত বাঁশখালীর সমস্যাগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে। প্রধান সড়কের
সংস্কার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এখন এটি ২৪ ফুট প্রশস্ত করার জন্য একনেক
অনুমোদন দিয়েছে। শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ কাজ শুরু করবে বলে জানান সাংসদ
মোস্তাফিজ।
সূত্রঃদৈনিক আজাদী
0 মন্তব্যসমূহ