কাল থেকে বন্ধ থাকবে ছনুয়ার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ

সাইফি আনোয়ারুল আজিমঃ
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বনবিভাগের বিরোধের কারণে আগামীকাল সোমবার থেকে বন্ধ থাকবে বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ। বন বিঅগের বাধা এবং আপত্তির কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড সোমবার থেকে ফোল্ডার ৬৪/সি এর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক কে এম জুলফিকার তারেক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বন বিভাগের জায়গা থেকে মাটি নিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে দাফতরিক জটিলতা তৈরি হওয়ায় কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে আজ সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভায় খুদুকখালীর বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন বাঁশখালীর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম। তিনি সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসককে দ্রুত বেড়িবাঁধ নির্মাণের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান। সমন্বয় সভায় চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, ছনুয়ায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ নিয়ে বনবিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যে বিরোধ তৈরী হয়েছে। সরকারি দুই দফতরের জটিলতার কারণে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ করা যাচ্ছেনা। তিনি উপকূলবাসীর জীবন জীবিকা রক্ষায় আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এসময় সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক কে এম জুলফিকার তারেক। তিনি বলেন, বন বিভাগের বাধার কারণে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ করা যাচ্ছেনা।
এসময় উপকূলীয় বন বিভাগের ডিএফও হুমায়ুন কবির জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড বন বিভাগের অনুমতি না নিয়ে ইচ্ছেমতো বনভুমির চর এলাকায় রিং বাঁধ দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে। বেড়িবাঁধ নির্মাণের আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড বনবিভাগকে এব্যাপারে অবহিতও করেনি। সমন্বয় সভায় ডিএফও আরো বলেন, আমি বন মন্ত্রানালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়া রিজার্ভ ফরেস্টের ভূমি ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারিনা। এটা সম্পূর্ণ মন্ত্রানালয়ের এখতিয়ার। পরে জেলা প্রশাসক জিললুর রহমান চৌধুরী পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বনবিভাগকে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করতে তাগাদা দেন।
এদিকে, আগামীকাল সোমবার সকালে বাঁশখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মোল্লা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক কে এম জুলফিকার তারেক , উপকূলীয় বন বিভাগের রেঞ্জার অসিত কুমার খুদুকখালীর নির্মাণাধিন বেড়িবাঁধের এলাকা পরিদর্শন করবেন। পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বনবিভাগের আপত্তি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।
উল্লেখ্য, গত দুই সপ্তাহ আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড নিযুক্ত টিকাদার মশিউর রহমান চৌধুরী খুদুকখালীর ৬৪/সি ফোল্ডারে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। তারা উপকূলীয় বনবিভাগের বিস্তীর্ণ সাগর চরে রিংবাঁধ দিয়ে মাটি উত্তোলনের কাজও করেন। পরে বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তাঁদের রিজার্ভ ফরেস্ট্রি ভূমি থেকে মাটি উত্তোলনের কাজ বন্ধ রাখতে পত্র জারি করেন। পত্র প্রাপ্তির পর পানি উন্নয়ন বোর্ড বিরোধ মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ