গাজী গোফরানঃ
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তৈরি করছেন দেশের অনেক প্রতিভাবান তরুণ। এসব স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তরুণরা তুলে ধরছেন সমাজের বিভিন্ন অসংঙ্গতির চিত্র।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করে অনেক তরুণ বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগের পাশাপাশি পাচ্ছেন পরিচিতি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মান। বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামেও অনেক প্রতিভাবান তরুণ তৈরি করছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। তেমনি একজন আবরার চৌধুরী, ডাকনাম জিপসি রুদ্র। জন্ম ১২ জুলাই ১৯৮৮, বেড়ে উঠা বাঁশখালিতে, স্নাতক শেষ করেছেন ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কাজ করেন চট্টগ্রামের একটি মাল্টিন্যাশানাল কোম্পানিতে।
সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, পথশিশুদের অধিকার সচেতন করতেই তার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে আসা। জিপসি রুদ্রর প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র- Story of the street child (পথশিশুর গল্প)। এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন একজন পথশিশুর মনের আকুতি, দৈনিক জীবনযাপনের চিত্র।
জিপসি রুদ্র বলেন, ‘সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরও আছে সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার, এদের প্রতি কোনো অবহেলা নয়। আমার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এই বিষয়গুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করি। আমাদের চট্টগ্রামে অনেক প্রতিভাবান তরুণ আছে যারা চেষ্টা করছে ভালো স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে। যারা নতুন আসছে শর্টফিল্ম বা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানাতে তাদেরকে বলব তারা যেন বেশি বেশি চলচ্চিত্র দেখে। একটি গল্প থেকে কিভাবে স্ক্রিপ্ট লিখতে হয়, স্ক্রিপ্ট থেকে কিভাবে শর্ট ডিভিশন করতে হয় এই বিষয়গুলো জানতে হবে। ক্যামেরা আর সিনেমাটোগ্রাফি সম্পর্কে ধারণা থাকা চাই, সম্পাদনা যুতসই ভাবে করতে হবে।
বাঁশখালী নিউজকে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের প্রধান প্রতিবন্ধকতা অর্থ, বিশেষ করে প্রাথমিক অবস্থায় অর্থনৈতিক সাপোর্ট কেউ দেয় না, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করতে হয়। আমরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করলেও ভালোভাবে প্রদর্শনের সুযোগ হয় না। প্রদর্শনীর যে কয়টি জায়গা রয়েছে সেগুলোর খরচ অনেক বেশি, তাই আমাদের একমাত্র মাধ্যম হলো ইউটিউব এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। প্রাথমিক অবস্থায় আমি যখন কাজ শুরু করি কিছুটা হতাশা কাজ করেছিল, পরবর্তীতে মোটামুটি টুকটাক সাহায্য পেয়েছি। ধীরে ধীরে ক্যামেরা ক্রু, বিশ্বস্ত একটা টিম, বন্ধুদের সাপোর্ট।’
তরুণ এই নির্মাতার প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র- পথ শিশুর গল্প, দ্বিতীয়টি- ক্যামেলিয়ার স্বপ্ন, তৃতীয়টি- সময়ের গল্প। শিগগির চতুর্থটির কাজ শুরু করবেন তিনি।
রুদ্র বলেন, ‘আমার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে যে বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পায় তা হলো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের অধিকার, দেশপ্রেম এবং মুক্তচিন্তা। স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণকারীদের আমি একটা কথাই বলব, তারা যেন মৌলিক গল্পের ওপর নতুন চিন্তার চলচ্চিত্র নির্মাণ করে। এসব স্বল্পদের্ঘ্য চলচ্চিত্রের দৈর্ঘ্য ছোট হলেও উগ্র ধর্মান্ধ মৌলবাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য যেন শক্তিশালী হয়। যে ভাবে নির্মাণ করুক না কেন আমাদের একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, সমাজ পরিবর্তনে যাতে ভালো কোনো বার্তা থাকে। আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমি এমন একটি সিনেমা বানাব যে সিনেমা দেখে দর্শক হল থেকে বের হবে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে।’
0 মন্তব্যসমূহ