কিছুদিন আগের কথা। যাচ্ছি গ্রামের বাড়িতে। রাহত্তারপুল থেকে টিকেট
কাটলাম বাঁশখালী স্পেশাল সার্ভিসের। ১১ টায় গাড়ি ছাড়ার কথা টিকেটে উল্লেখ
থাকলেও সেই গাড়ি র্টামিনাল থেকে রাহত্তারপুল পৌছে ১১টা ৩৫ মিনিটে। অথচ
র্টামিনাল থেকে রাহত্তারপুল আসতে বড়জোর সময় লাগে ৭-৮ মিনিট। উঠে বসলাম
গাড়িতে। ওরে বাপরে! সিটের সাইজ এতো ছোট যে হাঁটু দুইটাও ঠিক মত রাখতে পারছি
না। কি আর করা কোন রকম কষ্ট করে বসেই পড়লাম।
খুব ধীর গতিতেই গাড়ি চলছে। রাজাখালী আসার পর দেখি গাড়ি থামলো। ভাবলাম এখানে তো কোন টিকেট কাউন্টার নেই। তাহলে গাড়ি থামলো কেনো? ভালো করে লক্ষ্য করলাম গাড়ির ছাদের উপর প্রায় ৫০ কেজি ওজনের ১০টা সুপারীর বস্তা তোলা হল। কোন মালিক নেই। এখান থেকে একটি ঠিকানা দিল, ঐ জায়গায় বাস হেলপার নামিয়ে দিবে। বস্তা তুলতে প্রায় ২০ মিনিট সময় গেলো, আর পেছনে আটকে গেল গোটা ৫০টার মত গাড়ি। কিন্তু ড্রাইবার সাহেবের এসব দেখার সময় নাই। গাড়ি আবার চলা শুরু করলো। এবার ঠিক কর্ণফুলি ব্রিজের আগে এসে থামলো। টিকেটের যাত্রি উঠবে তাই ২০ মিনিটের মত গাড়ি থেমেই রইলো। এবার আবার যাত্রা শুরু। ব্রিজ পার হতেই আবার তেল নেওয়ার জন্য ১০ মিনিট বিরতি। এরপর খুব ভালোই চলছিল গাড়ি। কিন্তু ফিটনেস বিহীন গাড়ির যা হয় আরকি! কোমর ধরে গেল। গাড়ির মধ্যে বেশ কিছু নীতি বাক্য লেখা দেখে বেশ ভালো লাগলো। লিখা আছে ‘ব্যবহারে বংশের পরিচয়’। আবার কোথাও লেখা ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’। এর মধ্যে হঠাৎ চোখে পড়লো হেলপার মনের সুখে সিগারেট খাচ্ছে আর কানে আসতে লাগলো বেশ কিছু অশোভন কথাবার্তা। হেলপারের সাথে এক যাত্রির কথোপকথন। যাত্রি তার অধিকার নিয়ে বলছিল, এটা কোন সিট দিলি? ভাড়াটা তো ঠিকই আদায় করে নিস। কিন্তু হেলপার যাত্রির চেয়ে গরম। বলে, জেইল্লা আছে এইল্লা বইও, বেশি কথা ন কইও। হেলপারের আচরণ দেখে মনে হলো আসলেই যাত্রি হিসেবে আমরা এদের কাছে গোলাম হয়ে গেলাম। ঐ নীতি বাক্যগুলোর সাথে এদের আচরণ মিলানোর চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হলাম। সাঙ্গু নদী পার হয়ে যখন বাণীকগ্রাম পার হচ্ছে দেখি আস্তে আস্তে নতুন যাত্রি উঠার শুরু করছে। যদিও স্পেশাল সার্ভিসে সিটের বাইরে যাত্রি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই তবুও দাঁড়িয়ে যাত্রি নিলো গোটা ১৫ জনের উপরে। আর গাড়িতে অবস্থানরত যাত্রিগুলোর নামতে, ও রে কষ্ট কারে বলে!
এই কষ্ট শুধু আমি একা ভোগ করিনি। বাসে অবস্থানরত গোটা ৫০জন যাত্রি ভোগ করেছে। আর, এভাবে প্রতিদিন ঘন্টায় চারটা করে শহর থেকে ৫০ বার ও বাঁশখালী থেকে ৫০ বার গাড়ি আসা যাওয়া করে। আর ৫০ জন করে ১০০ গাড়ির প্রায় ৫ হাজার যাত্রি এভাবে কিছু অশিক্ষিত হেলপার ও ড্রাইভারের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। উল্লেখ্য, বাঁশখালী সড়কে চলাচলরত গাড়ির ড্রাইভারদের মধ্যে অধিকাংশ লাইসেন্সবিহীন। প্রকৃত ড্রাইভারগণ চট্টগ্রাম শহর পার হওয়ার পর গাড়ি থেকে নেমে যায় হেলপারকে দিয়ে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ বাঁশখালী চট্টগ্রাম সড়কে যাতায়াতকারী বাস কোস্টার শ্রমিকদের সংগঠন সক্রিয় না থাকলেও গত কিছুদিন আগে নির্বাচনের মাধ্যমে তা সক্রিয় করা হয়েছে এবং মালিক সমিতি সুনির্দিষ্ট কমিটি গঠনের পর স্পেশাল সার্ভিস তদারকির জন্য দু’য়েক জন লোক নিয়োগ করা হলেও বর্তমানে তদারকি বন্ধ রয়েছে।
৪০/৪৪ কিলোমিটার এর দূরত্বে চট্টগ্রাম যেতে বাঁশখালীবাসীর দুই ঘণ্টারও অধিক সময় ব্যয় হয়। বাঁশখালীর একমাত্র আঞ্চলিক মহাসড়কটি সোজা আনোয়ারা হয়ে বাঁশখালীর বুক চিড়ে পেকুয়া টৈটং এর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। বাঁশখালীতে সুনির্দিষ্ট কোন বাস টার্মিনাল না থাকাতে এলোপাতাড়ি গাড়িগুলো পড়ে থাকাতে যানজট থাকে প্রতিনিয়ত। আর অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভারগণ গাড়ি চালানোর ফলে দুর্ঘটনা নিত্যসঙ্গী। সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পটিয়া-আনোয়ারা বাঁশখালী সড়কে ইচ্ছা মাফিক ভাড়া আদায় করছে মালিক-শ্রমিকরা। একসময় মালিক সমিতি স্বাক্ষরিত হিসাব অনুসারে বাঁশখালী আনোয়ারা তৈলারদ্বীপ ফেরীঘাট হয়ে উপজেলা সদরের দূর ছিল ৪৪ কিলোমিটার। পরবর্তীতে শংখ নদীতে সাঙ্গু সেতু নির্মাণ হওয়ার পর তার দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার কমে আসে। কিন্তু মালিক কর্তৃপক্ষ পূর্বের কিলোমিটার অনুসারে ভাড়া আদায় করলেও নেওয়া হচ্ছে তার চেয়েও অতিরিক্ত। যা সরকারি কোন নিয়মে পড়ে না। তা নিয়ে যাত্রি ও কোস্টার শ্রমিকদের মাঝে প্রতিনিয়ত ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকে। বাঁশখালীতে তিনধরনের গাড়ি চলাচল করে বাঁশখালী শেষপ্রান্ত প্রেম বাজার থেকে চট্টগ্রামে পাঁচটি কাউন্টার হয়ে স্পেশাল সার্ভিসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে চট্টগ্রামে যাতায়াত করলেও তাতে যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তা পায় না যাত্রি সাধারণ। টিকেট সিস্টেমের এই গাড়িতে কোন যাত্রী উঠানামা (টিকেট বিহীন) করার নিয়ম না থাকলেও এরা ক্ষণে ক্ষণে যাত্রি উঠানামা ও মালবোঝাই করে থাকে। স্পেশাল গাড়িগুলোর পুকুরিয়া নামক স্থানে চেক কাউন্টার থাকলেও তা ও তাদের (ড্রাইভারের) সাথে আঁতাত করে চলে। অন্য বিরতিহীন গাড়ি বাঁশখালী উপজেলা সদর জলদী থেকে দুইটা কাউন্টার পেরিয়ে চট্টগ্রামে গেলেও তাদের অবস্থাও জীর্ণ।
এরা লোকেল সার্ভিসের মতই পদে পদে। লোক উঠানামা করাতেই থাকে। অন্য অভ্যন্তরীণ সার্ভিস লোকেল হিসাবে বাঁশখালীতে চলাচল করলেও তা প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকার অধিক হারে ভাড়া আদায় করায় প্রতিনিয়ত ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। বাঁশখালীতে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে প্রায় সময় ঝগড়া-বিবাদ হলেও তা নিরসনে প্রশাসন কোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে না। তাছাড়া, চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে অধিকাংশ যাত্রী ৬ কিলোমিটার আগে কর্ণফুলী ব্রিজে নেমে গেলেও ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। অন্যদিকে ৬ কিলোমিটার পরে এসে কর্ণফুলী ব্রিজের কাছে গাড়িতে উঠলেও তাতে টার্মিনাল পর্যন্ত ভাড়া আদায় করতে হয়। তাছাড়া শ্রমিকদের এ ধরনের অযৌক্তিক ভাড়া আদায় নিয়ে বিভিন্ন রকম ঝগড়াবিবাদ লেগে থাকলেও কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন ও মালিক কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে টৈটং থেকে ৯০ টাকা, বাঁশখালীর প্রেমবাজার থেকে ৮৫ টাকা, নাপোড়া থেকে ৮০ টাকা, চাম্বল থেকে ৭৫ টাকা, জলদী থেকে ৬৫ টাকা, বৈলছড়ি থেকে ৬০ গুণাগরী থেকে ৫৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ভাড়া নিয়ে বাঁশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগ থাকলেও অদ্যাবধি প্রশাসন কেন যে কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না! প্রতিদিন শহর থেকে বাঁশখালী ও বাঁশখালী থেকে শহরে মোট ৪৮ টি গাড়ি ১০০ বার চলাচল করে। তার মধ্যে অধিকাংশ গাড়িই ফিটনেসবিহীন। অন্যদিকে বাঁশখালী সুপার সার্ভিস নাম দিয়ে আরেক ধরনের সার্ভিস চালু হয়েছে। তাদের আপাতত সেবাগুলো ভালো হলেও পরর্বতীতে কতটুকু যায় তা দেখার বিষয়। ঘন্টায় ২ টা করে ২৪ বার আশা যাওয়া করে এই সার্ভিসগুলো। চলতি পথে কোন রকমের যাত্রি তোলা হয না। দরজাও বন্ধ থাকে তবে স্পেশালের চেয়ে এর ভাড়া একটু বেশি। এই সার্ভিসে টৈটং থেকে ১০৫ টাকা, বাঁশখালীর প্রেমবাজার থেকে ১০০ টাকা, চাম্বল থেকে ৯০ টাকা, জলদী থেকে ৮০ টাকা, বৈলছড়ি থেকে ৮০ গুণাগরী থেকে ৮০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
ভাড়াটা বেশি হলেও যাত্রিদের এই সার্ভিসের প্রতি চাহিদা রয়েছে। কিন্তু তাদের বাস স্বল্পতার জন্য তা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। তবে বাঁশখালীবাসীর এই দুঃখ কবে শেষ হবে তা খোদা ছাড়া আর কেউ বলতে পারে না।
খুব ধীর গতিতেই গাড়ি চলছে। রাজাখালী আসার পর দেখি গাড়ি থামলো। ভাবলাম এখানে তো কোন টিকেট কাউন্টার নেই। তাহলে গাড়ি থামলো কেনো? ভালো করে লক্ষ্য করলাম গাড়ির ছাদের উপর প্রায় ৫০ কেজি ওজনের ১০টা সুপারীর বস্তা তোলা হল। কোন মালিক নেই। এখান থেকে একটি ঠিকানা দিল, ঐ জায়গায় বাস হেলপার নামিয়ে দিবে। বস্তা তুলতে প্রায় ২০ মিনিট সময় গেলো, আর পেছনে আটকে গেল গোটা ৫০টার মত গাড়ি। কিন্তু ড্রাইবার সাহেবের এসব দেখার সময় নাই। গাড়ি আবার চলা শুরু করলো। এবার ঠিক কর্ণফুলি ব্রিজের আগে এসে থামলো। টিকেটের যাত্রি উঠবে তাই ২০ মিনিটের মত গাড়ি থেমেই রইলো। এবার আবার যাত্রা শুরু। ব্রিজ পার হতেই আবার তেল নেওয়ার জন্য ১০ মিনিট বিরতি। এরপর খুব ভালোই চলছিল গাড়ি। কিন্তু ফিটনেস বিহীন গাড়ির যা হয় আরকি! কোমর ধরে গেল। গাড়ির মধ্যে বেশ কিছু নীতি বাক্য লেখা দেখে বেশ ভালো লাগলো। লিখা আছে ‘ব্যবহারে বংশের পরিচয়’। আবার কোথাও লেখা ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’। এর মধ্যে হঠাৎ চোখে পড়লো হেলপার মনের সুখে সিগারেট খাচ্ছে আর কানে আসতে লাগলো বেশ কিছু অশোভন কথাবার্তা। হেলপারের সাথে এক যাত্রির কথোপকথন। যাত্রি তার অধিকার নিয়ে বলছিল, এটা কোন সিট দিলি? ভাড়াটা তো ঠিকই আদায় করে নিস। কিন্তু হেলপার যাত্রির চেয়ে গরম। বলে, জেইল্লা আছে এইল্লা বইও, বেশি কথা ন কইও। হেলপারের আচরণ দেখে মনে হলো আসলেই যাত্রি হিসেবে আমরা এদের কাছে গোলাম হয়ে গেলাম। ঐ নীতি বাক্যগুলোর সাথে এদের আচরণ মিলানোর চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হলাম। সাঙ্গু নদী পার হয়ে যখন বাণীকগ্রাম পার হচ্ছে দেখি আস্তে আস্তে নতুন যাত্রি উঠার শুরু করছে। যদিও স্পেশাল সার্ভিসে সিটের বাইরে যাত্রি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই তবুও দাঁড়িয়ে যাত্রি নিলো গোটা ১৫ জনের উপরে। আর গাড়িতে অবস্থানরত যাত্রিগুলোর নামতে, ও রে কষ্ট কারে বলে!
এই কষ্ট শুধু আমি একা ভোগ করিনি। বাসে অবস্থানরত গোটা ৫০জন যাত্রি ভোগ করেছে। আর, এভাবে প্রতিদিন ঘন্টায় চারটা করে শহর থেকে ৫০ বার ও বাঁশখালী থেকে ৫০ বার গাড়ি আসা যাওয়া করে। আর ৫০ জন করে ১০০ গাড়ির প্রায় ৫ হাজার যাত্রি এভাবে কিছু অশিক্ষিত হেলপার ও ড্রাইভারের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। উল্লেখ্য, বাঁশখালী সড়কে চলাচলরত গাড়ির ড্রাইভারদের মধ্যে অধিকাংশ লাইসেন্সবিহীন। প্রকৃত ড্রাইভারগণ চট্টগ্রাম শহর পার হওয়ার পর গাড়ি থেকে নেমে যায় হেলপারকে দিয়ে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ বাঁশখালী চট্টগ্রাম সড়কে যাতায়াতকারী বাস কোস্টার শ্রমিকদের সংগঠন সক্রিয় না থাকলেও গত কিছুদিন আগে নির্বাচনের মাধ্যমে তা সক্রিয় করা হয়েছে এবং মালিক সমিতি সুনির্দিষ্ট কমিটি গঠনের পর স্পেশাল সার্ভিস তদারকির জন্য দু’য়েক জন লোক নিয়োগ করা হলেও বর্তমানে তদারকি বন্ধ রয়েছে।
৪০/৪৪ কিলোমিটার এর দূরত্বে চট্টগ্রাম যেতে বাঁশখালীবাসীর দুই ঘণ্টারও অধিক সময় ব্যয় হয়। বাঁশখালীর একমাত্র আঞ্চলিক মহাসড়কটি সোজা আনোয়ারা হয়ে বাঁশখালীর বুক চিড়ে পেকুয়া টৈটং এর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। বাঁশখালীতে সুনির্দিষ্ট কোন বাস টার্মিনাল না থাকাতে এলোপাতাড়ি গাড়িগুলো পড়ে থাকাতে যানজট থাকে প্রতিনিয়ত। আর অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভারগণ গাড়ি চালানোর ফলে দুর্ঘটনা নিত্যসঙ্গী। সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পটিয়া-আনোয়ারা বাঁশখালী সড়কে ইচ্ছা মাফিক ভাড়া আদায় করছে মালিক-শ্রমিকরা। একসময় মালিক সমিতি স্বাক্ষরিত হিসাব অনুসারে বাঁশখালী আনোয়ারা তৈলারদ্বীপ ফেরীঘাট হয়ে উপজেলা সদরের দূর ছিল ৪৪ কিলোমিটার। পরবর্তীতে শংখ নদীতে সাঙ্গু সেতু নির্মাণ হওয়ার পর তার দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার কমে আসে। কিন্তু মালিক কর্তৃপক্ষ পূর্বের কিলোমিটার অনুসারে ভাড়া আদায় করলেও নেওয়া হচ্ছে তার চেয়েও অতিরিক্ত। যা সরকারি কোন নিয়মে পড়ে না। তা নিয়ে যাত্রি ও কোস্টার শ্রমিকদের মাঝে প্রতিনিয়ত ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকে। বাঁশখালীতে তিনধরনের গাড়ি চলাচল করে বাঁশখালী শেষপ্রান্ত প্রেম বাজার থেকে চট্টগ্রামে পাঁচটি কাউন্টার হয়ে স্পেশাল সার্ভিসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে চট্টগ্রামে যাতায়াত করলেও তাতে যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তা পায় না যাত্রি সাধারণ। টিকেট সিস্টেমের এই গাড়িতে কোন যাত্রী উঠানামা (টিকেট বিহীন) করার নিয়ম না থাকলেও এরা ক্ষণে ক্ষণে যাত্রি উঠানামা ও মালবোঝাই করে থাকে। স্পেশাল গাড়িগুলোর পুকুরিয়া নামক স্থানে চেক কাউন্টার থাকলেও তা ও তাদের (ড্রাইভারের) সাথে আঁতাত করে চলে। অন্য বিরতিহীন গাড়ি বাঁশখালী উপজেলা সদর জলদী থেকে দুইটা কাউন্টার পেরিয়ে চট্টগ্রামে গেলেও তাদের অবস্থাও জীর্ণ।
এরা লোকেল সার্ভিসের মতই পদে পদে। লোক উঠানামা করাতেই থাকে। অন্য অভ্যন্তরীণ সার্ভিস লোকেল হিসাবে বাঁশখালীতে চলাচল করলেও তা প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকার অধিক হারে ভাড়া আদায় করায় প্রতিনিয়ত ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। বাঁশখালীতে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে প্রায় সময় ঝগড়া-বিবাদ হলেও তা নিরসনে প্রশাসন কোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে না। তাছাড়া, চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে অধিকাংশ যাত্রী ৬ কিলোমিটার আগে কর্ণফুলী ব্রিজে নেমে গেলেও ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। অন্যদিকে ৬ কিলোমিটার পরে এসে কর্ণফুলী ব্রিজের কাছে গাড়িতে উঠলেও তাতে টার্মিনাল পর্যন্ত ভাড়া আদায় করতে হয়। তাছাড়া শ্রমিকদের এ ধরনের অযৌক্তিক ভাড়া আদায় নিয়ে বিভিন্ন রকম ঝগড়াবিবাদ লেগে থাকলেও কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন ও মালিক কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে টৈটং থেকে ৯০ টাকা, বাঁশখালীর প্রেমবাজার থেকে ৮৫ টাকা, নাপোড়া থেকে ৮০ টাকা, চাম্বল থেকে ৭৫ টাকা, জলদী থেকে ৬৫ টাকা, বৈলছড়ি থেকে ৬০ গুণাগরী থেকে ৫৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ভাড়া নিয়ে বাঁশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগ থাকলেও অদ্যাবধি প্রশাসন কেন যে কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না! প্রতিদিন শহর থেকে বাঁশখালী ও বাঁশখালী থেকে শহরে মোট ৪৮ টি গাড়ি ১০০ বার চলাচল করে। তার মধ্যে অধিকাংশ গাড়িই ফিটনেসবিহীন। অন্যদিকে বাঁশখালী সুপার সার্ভিস নাম দিয়ে আরেক ধরনের সার্ভিস চালু হয়েছে। তাদের আপাতত সেবাগুলো ভালো হলেও পরর্বতীতে কতটুকু যায় তা দেখার বিষয়। ঘন্টায় ২ টা করে ২৪ বার আশা যাওয়া করে এই সার্ভিসগুলো। চলতি পথে কোন রকমের যাত্রি তোলা হয না। দরজাও বন্ধ থাকে তবে স্পেশালের চেয়ে এর ভাড়া একটু বেশি। এই সার্ভিসে টৈটং থেকে ১০৫ টাকা, বাঁশখালীর প্রেমবাজার থেকে ১০০ টাকা, চাম্বল থেকে ৯০ টাকা, জলদী থেকে ৮০ টাকা, বৈলছড়ি থেকে ৮০ গুণাগরী থেকে ৮০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
ভাড়াটা বেশি হলেও যাত্রিদের এই সার্ভিসের প্রতি চাহিদা রয়েছে। কিন্তু তাদের বাস স্বল্পতার জন্য তা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। তবে বাঁশখালীবাসীর এই দুঃখ কবে শেষ হবে তা খোদা ছাড়া আর কেউ বলতে পারে না।
লেখক: সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক
ঊ-সধরষ: ংড়হহবঃফবা১৯৮৯@মসধরষ.পড়স
ঊ-সধরষ: ংড়হহবঃফবা১৯৮৯@মসধরষ.পড়স
0 মন্তব্যসমূহ