চট্টগ্রামের প্রাচীনতম নির্দশন বাঁশখালীর ৪৫০ বছরের পুরনো বখশি হামিদ জামে
মসজিদ। বখশি হামিদ মসজিদটির প্রতিষ্ঠার ইতিহাস নিয়ে বিভিন্ন জনশ্রুতি
রয়েছে। বাহারছড়ার উপকূলে ইলশা গ্রাম এলাকায় ঝোপঝাড় প্যারাবন ছিল, জনবসতি
ছিল না। ইউসুফ ও কুতুব নামে গৌড়ের দুই জন আমির শাহ্ আবদুল করিম নামক জনৈক
সুফীর সঙ্গে গৌড় ছেড়ে উপযুক্ত বাসস্থানের সন্ধানে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে
বাঁশখালী উপজেলায় বাহারছড়ায় ইলশা গ্রামে আসেন। ইলশা দরগা বাড়ি পৌঁছলে শাহ
সাহেব ইল্লাল্লাহ শব্দ উচ্চারণ করে তার ছড়ি পুঁতে রাখেন। তিনি ওই সময়
সেখানে বসবাসের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। তখন থেকে স্থানটি ইল্লাল্লাহ শাহের
স্থান এবং পরে স্থানটি ইলশা নামকরণ লাভ করেন। বখশি আবদুল হামিদ উক্ত শাহ
শাহের বংশধর ছিলেন।
ইতিহাসবিদদের মতে বঙ্গের পাঠান সুলতান সুলেমান রাজত্বকালে ১৫৬৫-৭২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে বাহারছড়া ইলশা গ্রামে মসজিদটি নির্মিত হয়। মোঘল স্থাপত্য-শৈল্যে নির্মিত তিনটি গম্বুজ রয়েছে, মাঝখানে গম্বুজটি বড় আকারের অন্য দুইট ছোট আকারে। তৎকালীন সময়ে ইট, সুরকি, পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মসজিদটি। মসজিদের নিমার্ণ-শৈলী দেখে যেকোন মানুষের মনে দাগ কাটে। দিঘির পাশে রয়েছে কবর স্থান ও সামনে বিশাল আকৃতির পুকুর। দেশের প্রতœতাত্ত্বিকরা বিভিন্ন স্থাপত্য সরকারের পক্ষ থেকে সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা করেছেন। মসজিদের রক্ষিত ফলকে আরবীতে লেখা আছে : “বনাল মাসজিদুল মোকাররম ফি আহদিল মালিক, ইসনাদুল মিলাত ওয়াদ্দিন সুলতানুল মুয়াজ্জাম সুলাইমান সাল্লামাল্লাহু আনিল ওয়াফাত ওয়াল বলিয়্যাতি মু’রেখাত তিসয়ু রমজান, খামছুন ও সাবরিনা ওয়া তিসআতু মিআ হিজরী নবীজী আলাইহিস সালাম।” বাংলা অনুবাদ : এই পবিত্র মসজিদখানি জাতি এবং ধর্মের স্তম্ভ মহান সুলতান সোলেয়মানের সময়ে নির্মিত। আল্লাহ তাঁকে সকল আপদ বিপদ থেকে রক্ষা করুন। তারিখ ৯৭৫ হিজরীর ৯ রমজান (১৫৬৮ খ্রিস্টাব্দের ৮ মার্চ)। শিলালিপির বক্তব্য মতে, এটি সুলাইমান কররানী প্রতিষ্ঠা করার কথা থাকলেও লোকমুখে এটি বখশি হামিদের নির্মিত মসজিদ বলে পরিচিত। স্থানীয় মুরুব্বীরা বলেন, বখশী হামিদের পুরো নাম মুহাম্মদ আব্দুল হামিদ, বখশি তার উপাধি। বখশি ফার্সী শব্দ। এর অর্থ কালেক্টর বা করগ্রহীতা। বখশি হামিদ তৎকালীন সময়ে প্রশাসক ছিলেন। এলাকার শিক্ষা, সভ্যতা ও সংস্কৃতির ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন। বর্তমানে দারুল কোরান মুহাম্মদিয়া শাহ বখশি হামিদ (রহ.) কমপ্লেক্সের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে বখশি হামিদ (রহ.) জামে মসজিদ এবং শাহ মজিদিয়া আদর্শ দাখিল মদ্রাসা।
বাণীগ্রাম শিখ মন্দির : পাহাড়ি এলাকা পরিবেশিত নদীপথে মুঘল স¤্রাটের আগমন ঘটে বাঁশখালীতে। চট্টগ্রাম শাসনের জন্য ফৌজদার নিযুক্ত হওয়ার পর মুঘল স¤্রাট আমলে ফৌজদারদের সহায়তা করার জন্য শাসন কাজে একজন বকশি এবং রাজস্ব কাজের জন্য একজন দেওয়ান নিয়োগ দেয়া হয়। চট্টগ্রাম ফৌজদার হুসাইন মুহাম্মদ খানের দেওয়ান হিসেবে শিখ বংশীয় মোকেম সিং ১৭৩৬ খ্রিস্টাব্দে নিয়োগ পান । তিনি ছিলেন শিখ ধর্মাবলম্বী। তৎপরবর্তীতে চট্টগ্রামে ফৌজদার মীর আফজল (১৭৪২ খ্রি. ১৭৪৩ খ্রি.) এবং হাসান কলিখান (১৭৪৪ খ্রি.- ১৭৫১ খ্রি.) এর দেওয়ান হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন মহাসিং (১৭৪২ খ্রি.-১৭৫১ খ্রী.)। তিনি জাতিতে পাঞ্জাবী শিখ ধর্মের অনুসারী। পরবর্তীতে মুঘল স¤্রাট তাঁকে ১৭৫৪-৫৬ এবং ১৭৫৬-৫৭ খ্রিস্টাব্দে ফৌজদার হিসেবে নিয়োগ করেন। পরবর্তীতে ১৭৫৮-৬০ খ্রিস্টাব্দে শিখ ধর্মের রাম সিং ফৌজদার মোহাম্মদ রেজা খানের দেওয়ান হিসেবে নিয়োগ পান। দক্ষিণ চট্টগ্রামে হাজারীগণ বিদ্রোহী হয়ে উঠলে তাদেরকে দমন করার জন্য মহাসিংকে চট্টগ্রামে ফৌজদার নিয়োগ করেন। তিনি এসে ১০ জন হাজারীর মধ্যে ৮ জনকে বন্দী করে মুর্শিদাবাদ পাঠান, এ সময় ২জন বশ্যতা স্বীকার করেন। বাণীগ্রামের শিখ মন্দিরটি ফৌজদার মহাসিং এর নামে প্রতিষ্ঠিত হয় বলে প্রচার রয়েছে। ঐ সময় তিনি ধর্মীয় আচার আচরণ পালনার্থে মন্দিরটি স্থাপন করেন । স্বাধীনতার পরবর্তী ২-৩ বছর পর্যন্ত ভারত থেকে আগত শিখ বংশীয় লোকজন মন্দিরটিতে উপাসনা করত বলে জনশ্রুতি রয়েছে। বর্তমানে মন্দিরটি স্থানীয়রা সংস্কার করেছে। বিভিন্ন ধর্মালম্বি লোকজন মন্দিরটি পরিদর্শন করেন।
ইতিহাসবিদদের মতে বঙ্গের পাঠান সুলতান সুলেমান রাজত্বকালে ১৫৬৫-৭২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে বাহারছড়া ইলশা গ্রামে মসজিদটি নির্মিত হয়। মোঘল স্থাপত্য-শৈল্যে নির্মিত তিনটি গম্বুজ রয়েছে, মাঝখানে গম্বুজটি বড় আকারের অন্য দুইট ছোট আকারে। তৎকালীন সময়ে ইট, সুরকি, পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মসজিদটি। মসজিদের নিমার্ণ-শৈলী দেখে যেকোন মানুষের মনে দাগ কাটে। দিঘির পাশে রয়েছে কবর স্থান ও সামনে বিশাল আকৃতির পুকুর। দেশের প্রতœতাত্ত্বিকরা বিভিন্ন স্থাপত্য সরকারের পক্ষ থেকে সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা করেছেন। মসজিদের রক্ষিত ফলকে আরবীতে লেখা আছে : “বনাল মাসজিদুল মোকাররম ফি আহদিল মালিক, ইসনাদুল মিলাত ওয়াদ্দিন সুলতানুল মুয়াজ্জাম সুলাইমান সাল্লামাল্লাহু আনিল ওয়াফাত ওয়াল বলিয়্যাতি মু’রেখাত তিসয়ু রমজান, খামছুন ও সাবরিনা ওয়া তিসআতু মিআ হিজরী নবীজী আলাইহিস সালাম।” বাংলা অনুবাদ : এই পবিত্র মসজিদখানি জাতি এবং ধর্মের স্তম্ভ মহান সুলতান সোলেয়মানের সময়ে নির্মিত। আল্লাহ তাঁকে সকল আপদ বিপদ থেকে রক্ষা করুন। তারিখ ৯৭৫ হিজরীর ৯ রমজান (১৫৬৮ খ্রিস্টাব্দের ৮ মার্চ)। শিলালিপির বক্তব্য মতে, এটি সুলাইমান কররানী প্রতিষ্ঠা করার কথা থাকলেও লোকমুখে এটি বখশি হামিদের নির্মিত মসজিদ বলে পরিচিত। স্থানীয় মুরুব্বীরা বলেন, বখশী হামিদের পুরো নাম মুহাম্মদ আব্দুল হামিদ, বখশি তার উপাধি। বখশি ফার্সী শব্দ। এর অর্থ কালেক্টর বা করগ্রহীতা। বখশি হামিদ তৎকালীন সময়ে প্রশাসক ছিলেন। এলাকার শিক্ষা, সভ্যতা ও সংস্কৃতির ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন। বর্তমানে দারুল কোরান মুহাম্মদিয়া শাহ বখশি হামিদ (রহ.) কমপ্লেক্সের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে বখশি হামিদ (রহ.) জামে মসজিদ এবং শাহ মজিদিয়া আদর্শ দাখিল মদ্রাসা।
বাণীগ্রাম শিখ মন্দির : পাহাড়ি এলাকা পরিবেশিত নদীপথে মুঘল স¤্রাটের আগমন ঘটে বাঁশখালীতে। চট্টগ্রাম শাসনের জন্য ফৌজদার নিযুক্ত হওয়ার পর মুঘল স¤্রাট আমলে ফৌজদারদের সহায়তা করার জন্য শাসন কাজে একজন বকশি এবং রাজস্ব কাজের জন্য একজন দেওয়ান নিয়োগ দেয়া হয়। চট্টগ্রাম ফৌজদার হুসাইন মুহাম্মদ খানের দেওয়ান হিসেবে শিখ বংশীয় মোকেম সিং ১৭৩৬ খ্রিস্টাব্দে নিয়োগ পান । তিনি ছিলেন শিখ ধর্মাবলম্বী। তৎপরবর্তীতে চট্টগ্রামে ফৌজদার মীর আফজল (১৭৪২ খ্রি. ১৭৪৩ খ্রি.) এবং হাসান কলিখান (১৭৪৪ খ্রি.- ১৭৫১ খ্রি.) এর দেওয়ান হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন মহাসিং (১৭৪২ খ্রি.-১৭৫১ খ্রী.)। তিনি জাতিতে পাঞ্জাবী শিখ ধর্মের অনুসারী। পরবর্তীতে মুঘল স¤্রাট তাঁকে ১৭৫৪-৫৬ এবং ১৭৫৬-৫৭ খ্রিস্টাব্দে ফৌজদার হিসেবে নিয়োগ করেন। পরবর্তীতে ১৭৫৮-৬০ খ্রিস্টাব্দে শিখ ধর্মের রাম সিং ফৌজদার মোহাম্মদ রেজা খানের দেওয়ান হিসেবে নিয়োগ পান। দক্ষিণ চট্টগ্রামে হাজারীগণ বিদ্রোহী হয়ে উঠলে তাদেরকে দমন করার জন্য মহাসিংকে চট্টগ্রামে ফৌজদার নিয়োগ করেন। তিনি এসে ১০ জন হাজারীর মধ্যে ৮ জনকে বন্দী করে মুর্শিদাবাদ পাঠান, এ সময় ২জন বশ্যতা স্বীকার করেন। বাণীগ্রামের শিখ মন্দিরটি ফৌজদার মহাসিং এর নামে প্রতিষ্ঠিত হয় বলে প্রচার রয়েছে। ঐ সময় তিনি ধর্মীয় আচার আচরণ পালনার্থে মন্দিরটি স্থাপন করেন । স্বাধীনতার পরবর্তী ২-৩ বছর পর্যন্ত ভারত থেকে আগত শিখ বংশীয় লোকজন মন্দিরটিতে উপাসনা করত বলে জনশ্রুতি রয়েছে। বর্তমানে মন্দিরটি স্থানীয়রা সংস্কার করেছে। বিভিন্ন ধর্মালম্বি লোকজন মন্দিরটি পরিদর্শন করেন।
সুত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ
0 মন্তব্যসমূহ