দক্ষিণ চট্টগ্রামের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের ও বান্দরবান জেলাকে ঘিরে আবর্তিত
সাঙ্গু নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৯৪ কিলোমিটার ও গড় প্রস্থ ১১৯ মিটার এবং
নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। পাউবো কর্তৃক পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী হিসেবে
প্রদত্ত পরিচিতি নং-১৫ বলে জানা যায়। সাঙ্গুর প্রবহমান ধারা বঙ্গোপসাগরে
মিলিত হয়েছে। নদীটির প্রবহমান এলাকা হিসেবে বাঁশখালী প্রত্যন্ত তিনটি
ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের জীব-বৈচিত্র্য সাঙ্গু ঘিরে চলমান। প্রাকৃতির
বিপর্যয়ের সাথে মনুষ্যসৃষ্ট ক্ষতিসাধন এখন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সরেজমিন
পরিদর্শনে দেখা যায় খানখানাবাদ ইউনিয়নের প্রেমাশিয়া, সাধনপুর ইউনিয়নের
রাতাখোর্দ্দ ও রাতা মৌজা, পুকুরিয়া ইউনিয়নের তেচ্ছিপাড়া নদীর গর্ভে
ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে অপরপ্রান্তে জেগে ওঠা
চরগুলো দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। এই দখল প্রতিযোগিতা অসংখ্য মানুষের সলিল
সমাধি হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠা
দুর্বৃত্তদের দখল থেকে উদ্ধারের কোন দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ এখনো দেখা
যায়নি। অথচ ইংরেজ শাসনামলের পূর্ব হতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আশির দশকেও
সাঙ্গু নদী আঞ্চলিক নৌপথ হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিল। তাছাড়া এই নদীপথ
দিয়ে অভ্যন্তরীণ নৌপথের যাত্রীপরিবহন ও ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে আসত তৎকালীন
জমিদাররা। এই সাঙ্গু বর্ষা মৌসুমে নদীর কূল-কিনারা ভাঙনের ফলে হাজারো
পরিবার বিলীন হয়েছে। মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে মূল স্রোত ধারা। বর্তমানে
দখল ছাড়া সাঙ্গুর পাড়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন শিল্পকলকারখানা। খামারের উচ্ছিষ্ট
এবং মলমূত্র যত্রতত্র আবর্জনা ফেলার কারণে সাঙ্গুর পানি দূষিত হয়ে মাছ
উৎপাদনে ধস নেমেছে।
ঐতিহ্যবাহী জলকদর খাল : ঐতিহ্যবাহী জলকদরখাল বাঁশখালীর উপজেলার উত্তরে খানখানাবাদ ইউনিয়নের ঈশ^র বাবুর হাট সীমান্তে সাঙ্গুর মোহনা থেকে জলকদর খালের উৎপত্তি হয়ে চকরিয়া সীমান্তের ছোট ছনুয়া পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণ প্রায় ২২/২৪ কিলোমিটার বিশাল এলাকাজুড়ে জলকদর খালের বিস্তৃতি। এই খালটি বিভক্ত হয়ে একটি অংশ ছোট ছনুয়া এবং অপর অংশ শেখেরখিল ফাঁড়ির মুখ থেকে গ-ামারা খাটখালি ঘাট হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। জোয়ার ভাটার এই আভ্যন্তরীণ নৌপথে স্টিমার, লঞ্চযোগে একসময় কুতুবদিয়া, মহেষখালী, চকরিয়া, উখিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ স্থানীয় জনসাধারণসহ দেশ-বিদেশের যাত্রাপথের গুরুত্ব পয়েন্ট হয়ে হিসেবে ব্যবহার হয়েছিল। ইংরেজ, মোগল ও আরাকান শাসনামলে জমিদার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ এই জলকদরখাল ব্যবহার করে সামাজিক অর্থনৈতিক কর্মকা-ের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। অথচ বর্তমানে খালের দুই পাড় দখল করে প্রভাবশালীরা খানখানাবাদ, বাহারছড়া, কাথারিয়া, সরল, গ-ামারা, চাম্বল, শেখেরখিলে হাটবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি নির্মাণ করে অংশবিশেষ দখল করে ফেলেছে। দখলের সাথে সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে স্থানীয় ছোট কলকারখানার নির্গত বর্জ্যখালের মধ্যে ফেলার কারণে। খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও তাদের কোন কর্মকা- কখনো চোখে পড়েনি। পরিবেশবাদীদের মতে এভাবে চলতে থাকলে জনগুরুত্বপূর্ণ এই খালটি ভরাট ও বিলীন হয়ে একসময় মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যাবে ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক জলকদর খাল।
ঐতিহ্যবাহী জলকদর খাল : ঐতিহ্যবাহী জলকদরখাল বাঁশখালীর উপজেলার উত্তরে খানখানাবাদ ইউনিয়নের ঈশ^র বাবুর হাট সীমান্তে সাঙ্গুর মোহনা থেকে জলকদর খালের উৎপত্তি হয়ে চকরিয়া সীমান্তের ছোট ছনুয়া পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণ প্রায় ২২/২৪ কিলোমিটার বিশাল এলাকাজুড়ে জলকদর খালের বিস্তৃতি। এই খালটি বিভক্ত হয়ে একটি অংশ ছোট ছনুয়া এবং অপর অংশ শেখেরখিল ফাঁড়ির মুখ থেকে গ-ামারা খাটখালি ঘাট হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। জোয়ার ভাটার এই আভ্যন্তরীণ নৌপথে স্টিমার, লঞ্চযোগে একসময় কুতুবদিয়া, মহেষখালী, চকরিয়া, উখিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ স্থানীয় জনসাধারণসহ দেশ-বিদেশের যাত্রাপথের গুরুত্ব পয়েন্ট হয়ে হিসেবে ব্যবহার হয়েছিল। ইংরেজ, মোগল ও আরাকান শাসনামলে জমিদার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ এই জলকদরখাল ব্যবহার করে সামাজিক অর্থনৈতিক কর্মকা-ের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। অথচ বর্তমানে খালের দুই পাড় দখল করে প্রভাবশালীরা খানখানাবাদ, বাহারছড়া, কাথারিয়া, সরল, গ-ামারা, চাম্বল, শেখেরখিলে হাটবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি নির্মাণ করে অংশবিশেষ দখল করে ফেলেছে। দখলের সাথে সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে স্থানীয় ছোট কলকারখানার নির্গত বর্জ্যখালের মধ্যে ফেলার কারণে। খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও তাদের কোন কর্মকা- কখনো চোখে পড়েনি। পরিবেশবাদীদের মতে এভাবে চলতে থাকলে জনগুরুত্বপূর্ণ এই খালটি ভরাট ও বিলীন হয়ে একসময় মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যাবে ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক জলকদর খাল।
সুত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ
0 মন্তব্যসমূহ