মোহাম্মাদ আলী হোছাইনঃ
আন্দোলনে-সংগ্রামে শেখ মুজিবুর রহমানকে দমাতে বার বার কারাগারে পাঠায় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা করা হয়।তেমনই এক মামলা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার অভিযোগ আনে, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন রাজনীতিক, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং গুটিকয় সাধারণ সৈনিক সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পূর্ববাংলাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। এই মিথ্যা মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানসহ মোট ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। ৩৫ জন আসামির সবাইকে পাকিস্তানি সরকার গ্রেফতার করে। মিথ্যা মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানকে সাজা দেওয়ার পরিকল্পনা টের পেয়ে বাঙালি জাতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং স্বৈরাচারী আইয়ুবের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলে। ছাত্র-জনতার মিছিলে রাজপথ উত্তাল হয়ে ওঠে। গণআন্দোলনে নতিস্বীকার করে আইয়ুব খান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবুর রহমানসহ অভিযুক্ত সব আসামিকে মুক্তি প্রদানের ঘোষণা দেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয় এবং ওই সভায় তৎকালীন ডাকসুর সভাপতি, বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। বাংলার জনগণের কাছে শেখ মুজিবুর রহমান নাম ছাপিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিটি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে।
0 মন্তব্যসমূহ