কলেজ জীবনের প্রথম দিনের অনুভূতি ছিলো অসাধারণ। স্কুল জীবনের স্বপ্ন ছিলো কবে কলেজে ভর্তি হবো? কবে স্কুল ছাত্রের পরিচয় ছেড়ে কলেজ ছাত্র বলে নিজেকে পরিচয় দেবো। আর সেই হলো এস,এস,সি পাশের পরে। দিনটি ছিলো ২০১৬ সালের ৭ ই জুন। এই দিনেই স্কুল জীবন শেষ করে নতুন আরেক জীবনে পা রেখেছিলাম। কিন্তু স্কুল জীবননের সেই কৌতুহল অনুভব করছিলাম না, বরং তখন এক ধরনের আনন্দে শিহোরিত হয়ে উঠেছিলাম। এই অনুভুতির রং-রূপ বা আকার কত বড় তা বলে বুঝাতে পারবো না। তবে, তার অস্তিত্ব বেশ জোরালো।যেহেতু, কলেজে যাওয়ার প্রথম দিন ছিলো ৭ ই জুন তাই সেইদিন খুব ভোরেই ঘুম থেকে উঠেছিলাম। তখন কলেজের নির্ধারিত পোশাক বানানো হয়নি। কলেজ জীবনের প্রথম দিন তাই বাড়িতে ভালো ভালো খাবার রান্না করেছিলো আম্মু। আমি সেই খাবার খেয়ে তৈরি হলাম। খাতা এবং কলম সংগে নিলাম। বাড়ি থেকে কলেজের দূরুত্ব ছিলো সামান্য দূরে। আব্বু সি এন জি থেকে নামিয়ে দিলেন আলাওল ডিগ্রী কলেজের গেটে। যে কলেজে আমি ভর্তি হয়েছি। একা একা কলেজের ভিতরে দল ঢুকতে একটু সংকোচ হচ্ছিল। তবুও ঢুকলাম। কলেজের সেই মনোরম পরিবেশ আজও মনে পরে। চারপাশে বিশাল বিশাল ভবন,সুসজ্জিত পরিবেশ। তারপর কলেজ মাঠে দাঁড়ালাম। কয়েকজন বন্ধু এসে টেনে নিয়ে গেলো ক্লাসে। ক্লাস তখনো শুরু হয়নি, তবে ক্লাসের বেশিরভাগ বন্ধুদের মুখই আমার পরিচিত ছিলো কারণ আমি যে হাই স্কুলে পড়তাম সেই স্কুলের বেশিরভাগ বন্ধুরাই একি কলেজেই ভর্তি হয়েছে। তবুও কিছু মুখ অপরিচিত দেখলাম। নাম -পরিচয় দিয়ে তাদের সাথে পরিচিত হলাম।ইতিমধ্যে, ঘন্টা পরলো, প্রথম ক্লাসে এলেন আমাদের বাংলা প্রভাষক এনামুল হক (জামালী) স্যার । যদিও আগে থেকে চিনতাম না। তিনি আমাদের রোলগুলো নোট করে, তার নিজের পরিচয় দিয়ে আমাদের সবার সাথে পরিচয় পর্ব সেরে নিলেন। এরপর তিনি জীবনের অতি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিলেন। একে একে ৪ জন শিক্ষক আমাদের ক্লাস নিলেন। সবাই আমাদের ভালো ভালো পরামর্শ এবং উপদেশ দিলেন কিভাবে জীবনের সফলতা অর্জন করতে হয়। সেই দিন এর সেই দিকনির্দেশনা শুনে আসলেই মুগ্ধ হয়েছিলাম এবং স্যার দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলাম। তারপর ছুটির ঘন্টা পরলো যথারীতি ক্লাস শেষ হলো। বাড়ি ফিরে হৃষ্টমনে বার বার স্যার দের সেই উপদেশমূলক বানী গুলো মনে পরছিলো। তখন থেকেই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে, স্যার দের সকল কথা মেনে চলবো। কারণ জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে অবশ্যই স্যার দের দিকনির্দেশনা কাজে লাগবে। আজ কলেজ জীবন শেষ হওয়ার পথে। আর মাত্র ১ মাস পনেরো দিন পরেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই কলেজে ক্লাস নেই। তবে,কলেজের জীবনের স্মৃতিগুলো সারা জীবন মনে থাকবে। মনে থাকবে শিক্ষকদের সেই দিকনির্দেশনা গুলো। কখনো ভুলতে পারবো না।
মোহাম্মাদ আলী হোছাইন (আলী)
সহ-সভাপতি
সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন
আলাওল ডিগ্রী কলেজ
বাঁশখালী,চট্টগ্রাম।
0 মন্তব্যসমূহ