বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রবেশ মুখ, পাশেই ডাস্টবিন ও জরুরি
বিভাগের পাশে জমাট ময়লার দুর্গন্ধে পরিবেশ ভারী হয়ে থাকার দৃশ্য দেখলেই
বুঝা যাবে এখানে রোগীর সেবার মান কেমন হবে? প্রতিদিন এখানে প্রচুর রোগীর
আনাগোনা হয়। রোগীরা এলেই দালালদের খপ্পরে পড়তে হয়। দালালরা চিকিৎসার
পূর্বেই রোগীদেরকে অনেকসময় ভুলিয়ে ভালিয়ে অনুমোদনহীন ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে
উঠা প্যাথলজি, ল্যাব, ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে
বাধ্য করান। বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলা
থেকে বদলী হয়ে আসা ৬ জন চিকিৎসক প্রতিদিন হাসপাতাল গেইটের সামনেই প্রাইভেট
চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন রোগীদেরকে। সকাল ৮ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত
অফিসের সময়সূচি থাকলেও সকাল ১০টায় গিয়েও বহির্বিভাগে চিকিৎসকের খোঁজ পাওয়া
যায় না। জিজ্ঞেসকরলে বলে স্যার আছেন ১ নং রুমে অথবা উপরে। বাস্তবে স্যার
কোথায় তার কোন হদিস মিলে না। অভিযোগ উঠেছে টিকেট নিতে আসা রোগীরা
বহির্বিভাগ কাউন্টারে গেলে রোগীর কথা আমল করার সময়ই হয়না (পুরুষ/মহিলা) ২জন
টিকেট দাতার খেয়ালীতে। গরীব অসহায় রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য
প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগকে সচেতনমহল স্বাগত জানালেও বাস্তবে তার উল্টো চিত্র
পরিলক্ষিত হয় এ হাসপাতালে। জানা যায়, ১৯৮১ সালে বাঁশখালী ৩১ শয্যা বিশিষ্ট
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপিত হলেও বর্তমান সরকার রোগীর সেবার মান বাড়ার
জন্য উপকূলীয় এলাকা বিবেচনা করে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উন্নীত করেন। রোগীদের
সেবার কথা বিবেচনা করে বর্তমান সরকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহ ৩১জন চিকিৎসক
নিয়োগ দিলেও বর্তমানে রয়েছেন মাত্র ১১ জন । গাইনী বিভাগের নবজাতক শিশু
ডেলিভারী রোগীদের জন্য আলাদা যন্ত্রপাাতি মজুদ থাকলেও চিকিৎসকের
অনুপস্থিতিতে রোগীরা সে সেবা হতে বঞ্চিত। অজুহাত শুধু এনেসথেসিয়া
চিকিৎসকের শূন্য পদ। এ হাসপাতালে নতুন এক্স- রে, মেশিন থাকলেও সেবা পায়
মাত্র সপ্তাহে ১দিন। ই.সি.জি মেশিনের কার্যক্রম থাকলেও রোগীরা সেবা থেকে
বঞ্চিত হচ্ছে। গর্ভবতী মহিলারা চিকিৎসা সেবা নিতে এসে পদে পদে ভোগান্তির
শিকার হয়। গাইনী বিভাগে অপারেশন থিয়েটার থাকলেও সেবা পায়না কোন রোগী। এ
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা নিজেরাই হাসপাতালের সিটে ভর্তি হয়ে
ক্লান্ত হয়ে পড়েন। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন প্রাইভেট চিকিৎসা
গ্রহণ করেই বাড়ি ফিরে যান। গরীব অসহায় রোগীরা দালালদের খপ্পরে পড়ে রীতিমতো
অসহায় হয়ে পড়েছে। বাঁশখালী হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও)
ডাক্তার কমরুল আযাদ বলেন, বাঁশখালী হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছে ১১
জন, ৪/৫জন ছুটিতে। পূর্বের তুলনায় চিকিৎসা সেবা অনেক ভাল। সরকারিভাবে
বরাদ্দকৃত ঔষধগুলো রোগীদের প্রদান করা হয়ে থাকে।
সুত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ
0 মন্তব্যসমূহ