আব্দুল আলীম নোবেল, কক্সবাজারঃ
মায়ানমারের কারাগার থেকে এক বছর দুই মাসেও ফিরেনি ৬৫ জন মাঝি-মাল্লা। তাঁদের মধ্যে ৬২ জন কক্সবাজার জেলার স্থায়ী বাসিন্দা। স্বদেশ কিংবা বিদেশ কোথাও অপরাধীর তালিকায় নেই তাঁদের নাম। নিষ্ঠুর প্রকৃতিই তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করলো অপরাধীর তালিকায়। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় নাডার কবলে পড়ে দিকভ্রান্ত এই মাঝি-মাল্লারা বাতাসের প্রচ- বেগে অনিচ্ছাকৃতভাবে পৌঁছে যায় পার্শবর্তী রাষ্ট্র মায়ানমারের নৌ-সীমানায়। এরপর সেদেশের নৌ-বাহিনীর হাতে সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধে আটক হয় তাঁরা। তারপর থেকে তাঁদের ঠাঁই মায়ানমারের কারাগারে। এর পর থেকে আসহায় পরিবারের থামছে না কান্নার রোল। খোঁজ খবর নিয়ে জানাগেছে এইসব পরিবারের মাঝে চরম অনহারে দিন কাটছে তাদের।
দীর্ঘ এক বছরের অধিক সময় ধরে মায়ানমারের কারাগারে আটক বাংলাদেশের দরিদ্র এই মাঝি-মাল্লারা এখন রাষ্ট্রীয় অবহেলার শিকার। তাঁদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বন্দী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। স্বদেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একাধিকবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয় চিঠি। কিন্তু সেই চিঠি কার্যকরে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মাসের পর মাস ধরে রয়েছে ফাইল বন্দী। মায়ানমারে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসও এ ব্যাপারে গ্রহণ করছে না কার্যকর কোন পদক্ষেপ। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে মায়ানমারের কারাগারে আটক এদেশের নিরাপরাধ মাঝি-মাল্লারা কখন স্বদেশে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় নাডার কবলে পড়ে সেদেশের কারাগারে বাংলাদেশের মাঝি-মাল্লাদের অন্তরীন থাকার বিষয়টি মায়ানমারের পক্ষ থেকে প্রথম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করা হয়। একপত্রে মায়ানমার ৬৫ জন বাংলাদেশী মাঝি-মাল্লার নাম ও ঠিকানা বাংলাদেশকে প্রেরণ করে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে মায়ানমারে আটককৃতদের নাগরিকত্ব যাচাই করতে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়। কক্সবাজার জেলা পুলিশ তদন্তপরবর্তী ৬২ জনকে কক্সবাজার জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে শনাক্ত করে একটি প্রতিবেদন ঢাকার রাজারবাগস্থ স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করে। বাকী ৩ জনের মধ্যে একজন ভোলা জেলার বাসিন্দা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারলেও দুই জনের নাগরিকত্বের বিষয়টি সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে পারেনি কক্সবাজার জেলা পুলিশ।
২০১৭ সালের ২০ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মুহাম্মদ আবদুর রউফ মিয়া পররাষ্ট্র সচিব এবং মায়ানমারের নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে সরকারিভাবে একটি পত্র প্রেরণ করেন। যে পত্রে মায়ানমারে কারান্তরীন বাংলাদেশী মাঝি-মাল্লাদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নজরে আনা হয়। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই পত্রের আলোকে কারান্তরীন জেলেদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন উদাসিনতা চলমান থাকায় মায়ানমারে কারান্তরীন বাংলাদেশী মাঝি-মাল্লারা কতোদিন পর স্বদেশে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে দেখা দিয়েেেছ সংশয়। এ ব্যাপারে জানার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুনিম হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “এতোদিন একটি ফাইল আটকে থাকার কথা নয়।” কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ফাইল দীর্ঘদিন ধরে আটকে রইলো সে বিষয়ে শীঘ্রই জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
মায়ানমারের কারাগারে অন্তরীন থাকা জেলেদের মধ্যে কক্সবাজার পৌরসভার বাসিন্দারা হলেন,পশ্চিম কুতুবদিয়া পাড়ার ছৈয়দ নূরের পুত্র লুদু মিয়া, গোলাম মাবুদের পুত্র মোঃ মানিক, মৃত মতিউর রহমানের পুত্র মোঃ সেলিম, মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ার নাছির উদ্দিনের পুত্র শাহীন আলম, মোঃ শামশুল আলমের পুত্র মোঃ নূর ছৈয়দ, মৃত শাহ আলম এর পুত্র আজম উদ্দিন, আকবর আলীর পুত্র নূর বাদশা, ছৈয়দ আলমের পুত্র আতা এলাহী, কক্সবাজার পৌরসভার মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ার নুর মোহাম্মদের পুত্র নুরুল আলম, আবু ছৈয়দের পুত্র মুজিবুর রহমান, মোঃ শাহজাহানের পুত্র এরফান, নুরুচ্ছাফার পুত্র নুরুজ্জামান, সুলতান আহমদের পুত্র নুরুল ইসলাম এবং মৃত মোঃ হাছানের পুত্র মোহাম্মদ উল্লাহ্। কুতুবদিয়া পাড়ার ছালেহ আহমদের পুত্র ওসমান গণি প্রকাশ মিন্টু, মৃত নাছির উদ্দিনের পুত্র মোঃ সেলিম, মৃত নজির আহমদের পুত্র এরশাদ, জামাল হোসেনের পুত্র মোঃ নূর, বাচা মিয়ার পুত্র মোঃ মোসলেহ উদ্দিন, আবুল কালামের পুত্র আবদুল করিম, মুহাম্মদ মিয়ার পুত্র মোঃ আজিম, দক্ষিণ কুতুবদিয়া পাড়ার আবু আহমদের পুত্র মোঃ মামুন, ফদনার ডেইলের মোঃ ইলিয়াছের পুত্র মিনহাজ উদ্দিন, জাফর আহমদের পুত্র আনোয়ার, উত্তর কুতুবদিয়া পাড়ার জয়নাল আবেদীনের পুত্র আলী হোসেন, মোঃ ইউনুছের পুত্র ছিদ্দিক আহমদ, সাব্বির আহমদের পুত্র মোঃ রবি আলম, মোঃ হানিফের পুত্র মোঃ হোসেন, আলী আহমদের পুত্র সাইফুল ইসলাম। নাজিরার টেকের মৃত হোসেনের পুত্র আব্দু জব্বার এবং ঝাউতলার কালু মিয়ার পুত্র মোঃ ইলিয়াছ। কক্সবাজার সদর উপজেলার একমাত্র বাসিন্দা হলেন পশ্চিম চৌফলদ-ীর মোঃ সুলতানের পুত্র নুরুল ইসলাম। কুতুবদিয়া উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছেন, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের শামশুল আলমের পুত্র মোঃ হারুন, দক্ষিণ মগডেইল এলাকার আবুল বশরের পুত্র মোঃ আতিকুর রহমান, মোঃ হাসানের পুত্র মোঃ ইসমাইল, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের কাজী পাড়ার আব্দুল মালেকের পুত্র মোঃ করিম, দক্ষিণ ধুরুং এর মৃত আবু মোছার পুত্র মুফিজ মিয়া, নুরুচ্ছাফার পুত্র মোঃ ইউনুছ, বড়ঘোপ ইউনিয়নের আব্দুর রহিমের পুত্র দেলোয়ার হোসেন, দিলুয়ার বর বাড়ীর নুরুল ইসলামের পুত্র মোঃ মাহাবুব আলম, মৃত জাবেদ আহমদের পুত্র আবুল কালাম, এবং লেমশীখালী ইউনিয়নের মোঃ ইদ্রিছের পুত্র মোঃ হারুন। মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা এলাকার মোঃ রশিদের পুত্র ছৈয়দ আলম, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার আব্দুর রহিমের পুত্র মোঃ নুুরুল বশর, একই ইউনিয়নের মাঝের ডেইল এলাকার জাকির হোসেনের পুত্র মোঃ জামাল, সিকদার বাড়ী এলাকার আব্দুর রহিমের পুত্র মোঃ আরাকান, মাইটপাড়ার আলী হোসেনের পুত্র মোহাম্মদ করিম, এবং বাদশা মিয়ার পুত্র মোঃ ছাদেক । গোরকঘাটা ইউনিয়নের মুদির ছড়া এলাকার মৃত দৌলত নূরের পুত্র বাবুল হোসেন, জলিল আহমদের পুত্র মঞ্জুর আলম, মাইজপাড়ার আবদুস সালামের পুত্র সাজেদুল্লাহ্, মৃত ইব্রাহিমের পুত্র লোকমান হাকিম, গোলাম শরীফের পুত্র মোহাম্মদ মাকছুদ, মহেশখালী উপজেলার পশ্চিম চরপাড়া এলাকার মোঃ হোসেনের পুত্র আজিজুল হক।
চকরিয়া উপজেলায় বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে রয়েছেন, বদরখালী ইউনিয়নের উত্তর নতুন ঘোনার মাহমুদুল করিমের পুত্র মোঃ হাছান, আহমদ ছবির পুত্র আবদুল আলী এবং বরইতলী ইউনিয়নের খোরশেদ আলমের পুত্র মোঃ মামুন। পেকুয়া উপজেলার একমাত্র বাসিন্দা হলেন, মগনামা ইউনিয়নের ননাইয়্যার পাড়ার ছৈয়দ নূরের পুত্র নুরুল কাদের। রামু উপজেলার একমাত্র বাসিন্দা হলেন দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের জুম ছড়ির আবুল কাশেমের পুত্র আব্দুল আমিন। উখিয়া উপজেলায় বসবাসকারী একমাত্র ব্যক্তি হলেন, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রতœা পালং এলাকার আব্দুস সামাদের পুত্র আমির হোছাইন। এবং ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলার নিশ্চিতপুর গ্রামের সফি আলমের পুত্র মোঃ আলমগীর।
উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় নাডার কবলে পড়ে এফ.বি সাজ্জাদ, এফ.বি রেশমি এবং এফ.বি হাছান। ওই সময় মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত বোট তিনটিতে ৬৫ জন মাঝি-মাল্লা ছিলো। তাঁরা সবাই ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক। দীর্ঘদিন ধরে যাঁদের কোন খোঁজ-খবর পাওয়া যায়নি।
মায়ানমারের কারাগার থেকে এক বছর দুই মাসেও ফিরেনি ৬৫ জন মাঝি-মাল্লা। তাঁদের মধ্যে ৬২ জন কক্সবাজার জেলার স্থায়ী বাসিন্দা। স্বদেশ কিংবা বিদেশ কোথাও অপরাধীর তালিকায় নেই তাঁদের নাম। নিষ্ঠুর প্রকৃতিই তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করলো অপরাধীর তালিকায়। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় নাডার কবলে পড়ে দিকভ্রান্ত এই মাঝি-মাল্লারা বাতাসের প্রচ- বেগে অনিচ্ছাকৃতভাবে পৌঁছে যায় পার্শবর্তী রাষ্ট্র মায়ানমারের নৌ-সীমানায়। এরপর সেদেশের নৌ-বাহিনীর হাতে সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধে আটক হয় তাঁরা। তারপর থেকে তাঁদের ঠাঁই মায়ানমারের কারাগারে। এর পর থেকে আসহায় পরিবারের থামছে না কান্নার রোল। খোঁজ খবর নিয়ে জানাগেছে এইসব পরিবারের মাঝে চরম অনহারে দিন কাটছে তাদের।
দীর্ঘ এক বছরের অধিক সময় ধরে মায়ানমারের কারাগারে আটক বাংলাদেশের দরিদ্র এই মাঝি-মাল্লারা এখন রাষ্ট্রীয় অবহেলার শিকার। তাঁদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বন্দী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। স্বদেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একাধিকবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয় চিঠি। কিন্তু সেই চিঠি কার্যকরে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মাসের পর মাস ধরে রয়েছে ফাইল বন্দী। মায়ানমারে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসও এ ব্যাপারে গ্রহণ করছে না কার্যকর কোন পদক্ষেপ। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে মায়ানমারের কারাগারে আটক এদেশের নিরাপরাধ মাঝি-মাল্লারা কখন স্বদেশে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় নাডার কবলে পড়ে সেদেশের কারাগারে বাংলাদেশের মাঝি-মাল্লাদের অন্তরীন থাকার বিষয়টি মায়ানমারের পক্ষ থেকে প্রথম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করা হয়। একপত্রে মায়ানমার ৬৫ জন বাংলাদেশী মাঝি-মাল্লার নাম ও ঠিকানা বাংলাদেশকে প্রেরণ করে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে মায়ানমারে আটককৃতদের নাগরিকত্ব যাচাই করতে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়। কক্সবাজার জেলা পুলিশ তদন্তপরবর্তী ৬২ জনকে কক্সবাজার জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে শনাক্ত করে একটি প্রতিবেদন ঢাকার রাজারবাগস্থ স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করে। বাকী ৩ জনের মধ্যে একজন ভোলা জেলার বাসিন্দা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারলেও দুই জনের নাগরিকত্বের বিষয়টি সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে পারেনি কক্সবাজার জেলা পুলিশ।
২০১৭ সালের ২০ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মুহাম্মদ আবদুর রউফ মিয়া পররাষ্ট্র সচিব এবং মায়ানমারের নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে সরকারিভাবে একটি পত্র প্রেরণ করেন। যে পত্রে মায়ানমারে কারান্তরীন বাংলাদেশী মাঝি-মাল্লাদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নজরে আনা হয়। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই পত্রের আলোকে কারান্তরীন জেলেদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন উদাসিনতা চলমান থাকায় মায়ানমারে কারান্তরীন বাংলাদেশী মাঝি-মাল্লারা কতোদিন পর স্বদেশে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে দেখা দিয়েেেছ সংশয়। এ ব্যাপারে জানার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুনিম হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “এতোদিন একটি ফাইল আটকে থাকার কথা নয়।” কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ফাইল দীর্ঘদিন ধরে আটকে রইলো সে বিষয়ে শীঘ্রই জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
মায়ানমারের কারাগারে অন্তরীন থাকা জেলেদের মধ্যে কক্সবাজার পৌরসভার বাসিন্দারা হলেন,পশ্চিম কুতুবদিয়া পাড়ার ছৈয়দ নূরের পুত্র লুদু মিয়া, গোলাম মাবুদের পুত্র মোঃ মানিক, মৃত মতিউর রহমানের পুত্র মোঃ সেলিম, মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ার নাছির উদ্দিনের পুত্র শাহীন আলম, মোঃ শামশুল আলমের পুত্র মোঃ নূর ছৈয়দ, মৃত শাহ আলম এর পুত্র আজম উদ্দিন, আকবর আলীর পুত্র নূর বাদশা, ছৈয়দ আলমের পুত্র আতা এলাহী, কক্সবাজার পৌরসভার মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ার নুর মোহাম্মদের পুত্র নুরুল আলম, আবু ছৈয়দের পুত্র মুজিবুর রহমান, মোঃ শাহজাহানের পুত্র এরফান, নুরুচ্ছাফার পুত্র নুরুজ্জামান, সুলতান আহমদের পুত্র নুরুল ইসলাম এবং মৃত মোঃ হাছানের পুত্র মোহাম্মদ উল্লাহ্। কুতুবদিয়া পাড়ার ছালেহ আহমদের পুত্র ওসমান গণি প্রকাশ মিন্টু, মৃত নাছির উদ্দিনের পুত্র মোঃ সেলিম, মৃত নজির আহমদের পুত্র এরশাদ, জামাল হোসেনের পুত্র মোঃ নূর, বাচা মিয়ার পুত্র মোঃ মোসলেহ উদ্দিন, আবুল কালামের পুত্র আবদুল করিম, মুহাম্মদ মিয়ার পুত্র মোঃ আজিম, দক্ষিণ কুতুবদিয়া পাড়ার আবু আহমদের পুত্র মোঃ মামুন, ফদনার ডেইলের মোঃ ইলিয়াছের পুত্র মিনহাজ উদ্দিন, জাফর আহমদের পুত্র আনোয়ার, উত্তর কুতুবদিয়া পাড়ার জয়নাল আবেদীনের পুত্র আলী হোসেন, মোঃ ইউনুছের পুত্র ছিদ্দিক আহমদ, সাব্বির আহমদের পুত্র মোঃ রবি আলম, মোঃ হানিফের পুত্র মোঃ হোসেন, আলী আহমদের পুত্র সাইফুল ইসলাম। নাজিরার টেকের মৃত হোসেনের পুত্র আব্দু জব্বার এবং ঝাউতলার কালু মিয়ার পুত্র মোঃ ইলিয়াছ। কক্সবাজার সদর উপজেলার একমাত্র বাসিন্দা হলেন পশ্চিম চৌফলদ-ীর মোঃ সুলতানের পুত্র নুরুল ইসলাম। কুতুবদিয়া উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছেন, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের শামশুল আলমের পুত্র মোঃ হারুন, দক্ষিণ মগডেইল এলাকার আবুল বশরের পুত্র মোঃ আতিকুর রহমান, মোঃ হাসানের পুত্র মোঃ ইসমাইল, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের কাজী পাড়ার আব্দুল মালেকের পুত্র মোঃ করিম, দক্ষিণ ধুরুং এর মৃত আবু মোছার পুত্র মুফিজ মিয়া, নুরুচ্ছাফার পুত্র মোঃ ইউনুছ, বড়ঘোপ ইউনিয়নের আব্দুর রহিমের পুত্র দেলোয়ার হোসেন, দিলুয়ার বর বাড়ীর নুরুল ইসলামের পুত্র মোঃ মাহাবুব আলম, মৃত জাবেদ আহমদের পুত্র আবুল কালাম, এবং লেমশীখালী ইউনিয়নের মোঃ ইদ্রিছের পুত্র মোঃ হারুন। মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা এলাকার মোঃ রশিদের পুত্র ছৈয়দ আলম, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার আব্দুর রহিমের পুত্র মোঃ নুুরুল বশর, একই ইউনিয়নের মাঝের ডেইল এলাকার জাকির হোসেনের পুত্র মোঃ জামাল, সিকদার বাড়ী এলাকার আব্দুর রহিমের পুত্র মোঃ আরাকান, মাইটপাড়ার আলী হোসেনের পুত্র মোহাম্মদ করিম, এবং বাদশা মিয়ার পুত্র মোঃ ছাদেক । গোরকঘাটা ইউনিয়নের মুদির ছড়া এলাকার মৃত দৌলত নূরের পুত্র বাবুল হোসেন, জলিল আহমদের পুত্র মঞ্জুর আলম, মাইজপাড়ার আবদুস সালামের পুত্র সাজেদুল্লাহ্, মৃত ইব্রাহিমের পুত্র লোকমান হাকিম, গোলাম শরীফের পুত্র মোহাম্মদ মাকছুদ, মহেশখালী উপজেলার পশ্চিম চরপাড়া এলাকার মোঃ হোসেনের পুত্র আজিজুল হক।
চকরিয়া উপজেলায় বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে রয়েছেন, বদরখালী ইউনিয়নের উত্তর নতুন ঘোনার মাহমুদুল করিমের পুত্র মোঃ হাছান, আহমদ ছবির পুত্র আবদুল আলী এবং বরইতলী ইউনিয়নের খোরশেদ আলমের পুত্র মোঃ মামুন। পেকুয়া উপজেলার একমাত্র বাসিন্দা হলেন, মগনামা ইউনিয়নের ননাইয়্যার পাড়ার ছৈয়দ নূরের পুত্র নুরুল কাদের। রামু উপজেলার একমাত্র বাসিন্দা হলেন দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের জুম ছড়ির আবুল কাশেমের পুত্র আব্দুল আমিন। উখিয়া উপজেলায় বসবাসকারী একমাত্র ব্যক্তি হলেন, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রতœা পালং এলাকার আব্দুস সামাদের পুত্র আমির হোছাইন। এবং ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলার নিশ্চিতপুর গ্রামের সফি আলমের পুত্র মোঃ আলমগীর।
উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় নাডার কবলে পড়ে এফ.বি সাজ্জাদ, এফ.বি রেশমি এবং এফ.বি হাছান। ওই সময় মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত বোট তিনটিতে ৬৫ জন মাঝি-মাল্লা ছিলো। তাঁরা সবাই ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক। দীর্ঘদিন ধরে যাঁদের কোন খোঁজ-খবর পাওয়া যায়নি।
0 মন্তব্যসমূহ