জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া দোষী কি না, সেই সিদ্ধান্ত দেবে আদালত; তবে সাজা হলে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত বৃহস্পতিবার সকালে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি
মামলার রায় ঘোষণা করবে। ভোটের বছরের শুরুতে এই রায় ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে ঢাকাসহ
সারা দেশের নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে খালেদা জিয়ার
সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। সেক্ষেত্রে এইচএম এরশাদের পর তিনি হবেন দুর্নীতির
দায়ে দণ্ডিত দ্বিতীয় সরকারপ্রধান।
আশির দশকে এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে গৃহবন্দি হতে হয়েছিল বিএনপি চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়াকে। আর ২০০৭-০৮ সময়ের সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তাকে গ্রেপ্তার
করার পর সংসদ ভবন এলাকার একটি ভবনকে উপ কারাগার ঘোষণা করে সেখানে রাখা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবারের রায় ঘিরে আদালতের নিরাপত্তা যেমন বাড়ানো হচ্ছে, তেমনি কারা
কর্তৃপক্ষও তাদের প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে খবর এসেছে কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে।
সাজা হলে খালেদা জিয়াকে কোথায় রাখা হবে- সেই প্রশ্ন বুধবার সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকেই করেন সাংবাদিকরা।
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,
রায় কী হবে, তা যেহেতু তার জানা নেই, সেহেতু আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে, সে অনুযায়ীই
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“কারাগার যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকে। উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী,
জেল কোড অনুযায়ী যে রকমভাবে রাখার আদেশ আসবে, সেভাবেই রাখা হবে। এখনো জানি না।”
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, “কারা অধিদপ্তর কোথায় কীভাবে রাখবেন, এটা তাদের
ব্যাপার।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কয়েকজনের
সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারের চার তলা
ভবনের ‘শিশু ডে কেয়ার’ এর নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার দুটি কক্ষ এবং গাজীপুরের কাশিমপুরের
কারাগারের মহিলা কারাগারের (কারাগার-৩) কথা রয়েছে তাদের ভাবনায়।
পাশাপাশি গুলশানের কোনো সরকারি বাসাকে ‘সাব-জেল’ ঘোষণার সম্ভাবনা নিয়েও
কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
তাদের কথায় স্পষ্ট কোনো ইংগিত না মিললেও এটা সবাই বলেছেন, যেহেতু খালেদা
জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সেহেতু সাজা হলে নিয়ম অনুযায়ী তাকে ভিআইপি মর্যাদাই
দেওয়া হবে। স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রেও সেসব সুবিধার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
২০০৭ সালে যখন বিএনপি চেয়ারপারসনকে সাব-জেলে রাখা হয়েছিল, সেখানে দায়িত্ব
পালন করতেন দুইজন সাব জেলার।
এদিকে ঢাকার নাজিমুদ্দিন সড়ক থেকে কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানিগঞ্জে স্থানান্তরের
পর সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারেই শিথিল ছিল। অনুসন্ধান বিভাগে একজন কারারক্ষী
আর বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ছাড়া নিরাপত্তার তেমন কড়াকড়ি পুরনো
কারা ভবনে দেখা যেত না। গত কয়েকদিনে সেখানেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
একজন কারা রক্ষী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে
বলেন, মঙ্গলবার শিশু ডে কেয়ারে নিচ তলা ও দোতলায় ঘষা মজা করা হয়েছে। দুটি কক্ষে ফ্যানও
লাগানো হয়েছে।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের নিরাপত্তাও মঙ্গলবার থেকে জোরদার
করা হয়েছে বলে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সুত্রঃবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
সুত্রঃবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
0 মন্তব্যসমূহ