মোঃ দেলোয়ার হোসেন, কলেজ প্রতিনিধি, ফেনীঃ
ফেনী সরকারী কলেজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে উচ্চ মাধ্যমিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদানকারী একটি সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
দক্ষিণ- পূর্ব বাংলার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফেনী সরকারী কলেজ প্রতিষ্ঠার গোড়াপত্তন হয় ১৯১৮ সালে খান বাহাদুর বজলুল হকের নেতৃত্বে একটি ট্রাস্ট বোর্ড গঠনের মাধ্যমে। কলেজের জম্ম- লগ্নে প্রথম গভর্ণিং বডির সদস্য ছিলেন মরহুম খান বাহাদুর আবদুল আজিজ, মরহুম খান সাহেব মৌলভী বজলুল হক, মরহুম মৌলভী আব্দুল খালেক, মরহুম মৌলভী হাছান আলী, মরহুম মৌলভী আবদুস সাত্তার, সর্বপ্রয়াত শ্রীরমণী মোহান গোস্বাামী, সর্বপ্রয়াত শ্রীগুরু দাস কর, শ্রীকালিজয় চক্রবতী প্রমুখ। কমিটির প্রথম সভাপতি ছিলেন ফেনীর তখনকার মহকুমা প্রশাসক জনাব আকরামুজ্জামান খান এবং প্রথম সেক্রেটারী ছিলেন মরহুম মৌলভী আব্দুল খালেক।
তাঁরা ফেনী হাই স্কুল ( বর্তমান ফেনী সরকারী পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়) কর্তৃপক্ষের থেকে বার্ষিক এক টাকা চার আনা খাজনায় বর্তমান মূল কলা ভবনের জায়গাটা পত্তন নিয়ে কলেজ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কলেজ প্রতিষ্ঠা লগ্নে কোলকাতা ও রেঙ্গুন প্রবাসী এ অঞ্চলের কর্মজীবী মানুষেরা কলেজ স্থাপনের জন্য উদারহস্তে বিপুল অর্থ সাহায্য করেছিলেন।
প্রাচ্যের অক্রফোর্ড খ্যাত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাত্র এক বছর পর ১৯২২ সালে ‘ফেনী কলেজ’ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং একই বছর ৮ আগস্ট বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ফার্সি, সংস্কৃত, গণিত, ইতিহাস ও যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে ১৪৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে আই এ ক্লাস চালু হয়। শুরু থেকেই উন্নয়নের লক্ষ্যে দৃঢ়নিষ্ঠ অগ্রগতি অর্জিত হওয়ায় সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাত্র দু’বছরের মধ্যেই ১৯২৪ সালে কলেজটিকে প্রথম শ্রেণির মর্যাদায় উন্নিত করে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরবি ও ইতিহাস বিষয়ে অনার্সসহ ডিগ্রী পর্যায়ে বি.এ কোর্সে পাঠদান অনুমোদন করে ।
সারা জনপদ জুড়ে ব্যাপক গণ-সচেতনতা ছাড়িয়ে দিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। ফলে অনিতকালের মধ্যে প্রয় ২০,০০০/= টাকা অনুদান সংগৃহীত হয়। নোয়াখালী জেলা বোর্ড হিন্দু ও মুসলিম শিক্ষার্থীদের পৃথক ছাত্রাবাস স্থাপনের জন্য ৫০,০০০/- টাকা অনুদান প্রদান করে। ১৯২৬ সালের ১০ আগস্ট তদানিন্তন বৃটিশ ভারতের মহামান্য গভর্ণর স্যার হিউ ল্যন্সডাউন স্টিফেনশন কে সি আই, এস আই সি এস কলেজের মূল ভবনের দোতলা উদ্বোধন করেন। ফেনী কলেজ স্থাপনে শহরের হাজারী বাড়ি ও ছাগলনাইয়ার সাহা পরিবার জমি ও অর্থ প্রদান করে।
সারা ভূ-ভারত জুড়ে অসহযোগ আন্দোলন, খেলাফত ও স্বরাজ আন্দোলন এবং বিশ্বযুদ্বোত্তর অস্থিতিকর পরিস্থিতির মধ্যেও উদ্যোগক্তাগণ ফেনীতে একটি উচ্চ শিক্ষা পাদপীঠ স্থাপনের তাঁদের প্রচেষ্টায় ব্রত থেকে সাফল্য অর্জন করায় ১৯৩৭ সালের ‘ক্যালকাটা গ্যাজেট’ এ প্রকাশিত হয়েছিল. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের সময় ফেনী কলেজ ভক্ষন যুদ্বকালীন মিত্রবাহিনীর সামরিক হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় কলেজের কাজকর্ম অস্থায়ীভিত্তিতে ব্রাক্ষণবাড়িয়াতে স্থানান্তরিত হয় এবং যুদ্ধ শেষে কলেজটি আবার স্ব- স্থানে ফিরে আসে।
কলেজটির ক্রমউন্নয়নের ধারায় ১৯৪১ সালে আই কম ও ১৯৪৭ সালে আই এস-সি কোর্স চালু হয়। ১৯৬২ সালে বি কম এবং ১৯৬৪ সালে বি.এস-সি কোর্স চালুর মধ্যে দিয়ে কলেজটি পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রী কলেজে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭৯ সালের ৭ মে জাতীয়করণ করা হলে ফেনী কলেজটি ফেনী সরকারী কলেজ নামে নব যাত্রা শুরু করে।
এ পর্যায়ে ১৯৯৭-১৯৯৮ শিক্ষা বর্ষে অনার্স এবং ২০১০-২০১১ শিক্ষা বর্ষে মাস্টার্স শেষ পর্বের কোর্স চালু হয়। বর্তমানে ফেনী সরকারী কলেজে মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৬ টি বিষয়ে, স্নাতক (পাস) পর্যায়ে ১৫ বিষয়ে, অনার্স পর্যায়ে ১৫ টি বিষয়ে ( বাংলা, ইংরেজী, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইতিহাস, দর্শন, সমাজকর্ম, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, প্রাণিবিজ্ঞান ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান) এবং মাস্টার্স শেষ পর্বে ৭ টি বিষয়ে ( বাংলা, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও গণিত) কোর্স চালু রয়েছে। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ ১৫ বিভাগে মোট শিক্ষক সংখ্যা ৭২ জন। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক অপার লীলাভূমি ফেনী সরকারী কলেজের মূল ক্যাম্পাস ১০.৫০ একর জমির ওপর অবস্থিত।
পুরাতন ঢাকা - চট্টগ্রাম মহা সড়কের পাশে ১৬.৬৬ একর জমি হুকুম দখল করা হয়। পরবর্তীতে প্রকল্পটি পরিত্যক্ত হয়। বর্তমানে উক্ত ১৬.৬৬ একর জমির মধ্যে ১০.০০ একর জমির উপর ফেনী আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। অবশিষ্ট জায়গার মধ্যে কিছু অংশে বি.এন. সি.সি ১নং ময়নামতি ব্যটালিয়ানের হেড কোয়ারটার, একটি অংশে ফেনী জেলা শিক্ষা অফিস এবং বাকী অংশে ফেনী সরকারী কলেজের ছাত্রাবাস নির্মান করা হয়েছে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ফেনী কলেজের শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের ছিল গৌরবোজ্জল ভূমিকা। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ফজলুল হক. প্রাক্তন ভিপি মৌলান সৈয়দ ওয়ায়েজ উদ্দিন, বীরোত্তম মেজর সালাউদ্দিন মমতাজ, আবু তাহির প্রমুখ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। বীর মুক্তিযোদ্ধা লেঃ কর্ণেল (অবঃ) জাফর ইমাম বীরবিক্রম, প্রাক্তন জি এস ও এমপি জয়নাল আবেদীন হাজারী, প্রাক্তন ভিপি ও এমপি অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন, প্রাক্তন ভিপি জাফর উল্লাহ খান, কমান্ডার মর্তুজা, মোতালেব, কামাল, মোশারফ, কাজী নুরুন নবী, শাজাহন, মোঃ মুছা মিয়া, প্রাক্তন ডিসি আবু তাহের ভূইয়াঁ প্রমুখ ছিলেন ফেনী কলেজের ছাত্র।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় কলেজটি হানাদার বাহিনীর ঘাঁটি গিমেকে ব্যবহৃত হওয়ায় আসবাবপত্র, বই- পুস্তক. বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি প্রায় সব কিছুই ধবংসপ্রাপ্ত হয়।
ফেনী কলেজ তার সুদীর্ঘ ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে বহু বিদগ্ধ ও কিংবদন্তী শিক্ষকের সেবা পাওয়ার সৌভাগ্য পেয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনঃ বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত গবেষক গোপাল হালদার, ড. আহমদ শরীফ, ড. নজমুল করিম. ড. মোজাফফর আহমদ, ড. শামসুল হক, অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন, প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুস সালাম, বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন আই জি ইমাজউদ্দিন, প্রাক্তন সচিব আবদুল আউয়াল, প্রাক্তন সচিব মহিউদ্দিন আহমদ প্রমুখ। এ কলেজের কৃতি ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী, প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শামসুল হক, কেবিনেট মন্ত্রী লে: কর্ণেল (অব:) জাফর ইমাম বীর বিক্রম, প্রখ্যাত সাংবাদিক ওবায়দুল হক, প্রাক্তন ভিসি ছালেহ আহমেদ , প্রাক্তন ভিসি কামাল উদ্দিন, প্রাক্তন ভিসি ড. এ কে আজাদ চৌধুরী ও ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, হাই কোর্টের আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতি কাজী ওবায়দুল হক প্রমুখ।
দক্ষিণ- পূর্ব বাংলার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফেনী সরকারী কলেজ প্রতিষ্ঠার গোড়াপত্তন হয় ১৯১৮ সালে খান বাহাদুর বজলুল হকের নেতৃত্বে একটি ট্রাস্ট বোর্ড গঠনের মাধ্যমে। কলেজের জম্ম- লগ্নে প্রথম গভর্ণিং বডির সদস্য ছিলেন মরহুম খান বাহাদুর আবদুল আজিজ, মরহুম খান সাহেব মৌলভী বজলুল হক, মরহুম মৌলভী আব্দুল খালেক, মরহুম মৌলভী হাছান আলী, মরহুম মৌলভী আবদুস সাত্তার, সর্বপ্রয়াত শ্রীরমণী মোহান গোস্বাামী, সর্বপ্রয়াত শ্রীগুরু দাস কর, শ্রীকালিজয় চক্রবতী প্রমুখ। কমিটির প্রথম সভাপতি ছিলেন ফেনীর তখনকার মহকুমা প্রশাসক জনাব আকরামুজ্জামান খান এবং প্রথম সেক্রেটারী ছিলেন মরহুম মৌলভী আব্দুল খালেক।
তাঁরা ফেনী হাই স্কুল ( বর্তমান ফেনী সরকারী পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়) কর্তৃপক্ষের থেকে বার্ষিক এক টাকা চার আনা খাজনায় বর্তমান মূল কলা ভবনের জায়গাটা পত্তন নিয়ে কলেজ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কলেজ প্রতিষ্ঠা লগ্নে কোলকাতা ও রেঙ্গুন প্রবাসী এ অঞ্চলের কর্মজীবী মানুষেরা কলেজ স্থাপনের জন্য উদারহস্তে বিপুল অর্থ সাহায্য করেছিলেন।
প্রাচ্যের অক্রফোর্ড খ্যাত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাত্র এক বছর পর ১৯২২ সালে ‘ফেনী কলেজ’ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং একই বছর ৮ আগস্ট বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ফার্সি, সংস্কৃত, গণিত, ইতিহাস ও যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে ১৪৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে আই এ ক্লাস চালু হয়। শুরু থেকেই উন্নয়নের লক্ষ্যে দৃঢ়নিষ্ঠ অগ্রগতি অর্জিত হওয়ায় সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাত্র দু’বছরের মধ্যেই ১৯২৪ সালে কলেজটিকে প্রথম শ্রেণির মর্যাদায় উন্নিত করে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরবি ও ইতিহাস বিষয়ে অনার্সসহ ডিগ্রী পর্যায়ে বি.এ কোর্সে পাঠদান অনুমোদন করে ।
সারা জনপদ জুড়ে ব্যাপক গণ-সচেতনতা ছাড়িয়ে দিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। ফলে অনিতকালের মধ্যে প্রয় ২০,০০০/= টাকা অনুদান সংগৃহীত হয়। নোয়াখালী জেলা বোর্ড হিন্দু ও মুসলিম শিক্ষার্থীদের পৃথক ছাত্রাবাস স্থাপনের জন্য ৫০,০০০/- টাকা অনুদান প্রদান করে। ১৯২৬ সালের ১০ আগস্ট তদানিন্তন বৃটিশ ভারতের মহামান্য গভর্ণর স্যার হিউ ল্যন্সডাউন স্টিফেনশন কে সি আই, এস আই সি এস কলেজের মূল ভবনের দোতলা উদ্বোধন করেন। ফেনী কলেজ স্থাপনে শহরের হাজারী বাড়ি ও ছাগলনাইয়ার সাহা পরিবার জমি ও অর্থ প্রদান করে।
সারা ভূ-ভারত জুড়ে অসহযোগ আন্দোলন, খেলাফত ও স্বরাজ আন্দোলন এবং বিশ্বযুদ্বোত্তর অস্থিতিকর পরিস্থিতির মধ্যেও উদ্যোগক্তাগণ ফেনীতে একটি উচ্চ শিক্ষা পাদপীঠ স্থাপনের তাঁদের প্রচেষ্টায় ব্রত থেকে সাফল্য অর্জন করায় ১৯৩৭ সালের ‘ক্যালকাটা গ্যাজেট’ এ প্রকাশিত হয়েছিল. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের সময় ফেনী কলেজ ভক্ষন যুদ্বকালীন মিত্রবাহিনীর সামরিক হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় কলেজের কাজকর্ম অস্থায়ীভিত্তিতে ব্রাক্ষণবাড়িয়াতে স্থানান্তরিত হয় এবং যুদ্ধ শেষে কলেজটি আবার স্ব- স্থানে ফিরে আসে।
কলেজটির ক্রমউন্নয়নের ধারায় ১৯৪১ সালে আই কম ও ১৯৪৭ সালে আই এস-সি কোর্স চালু হয়। ১৯৬২ সালে বি কম এবং ১৯৬৪ সালে বি.এস-সি কোর্স চালুর মধ্যে দিয়ে কলেজটি পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রী কলেজে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭৯ সালের ৭ মে জাতীয়করণ করা হলে ফেনী কলেজটি ফেনী সরকারী কলেজ নামে নব যাত্রা শুরু করে।
এ পর্যায়ে ১৯৯৭-১৯৯৮ শিক্ষা বর্ষে অনার্স এবং ২০১০-২০১১ শিক্ষা বর্ষে মাস্টার্স শেষ পর্বের কোর্স চালু হয়। বর্তমানে ফেনী সরকারী কলেজে মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৬ টি বিষয়ে, স্নাতক (পাস) পর্যায়ে ১৫ বিষয়ে, অনার্স পর্যায়ে ১৫ টি বিষয়ে ( বাংলা, ইংরেজী, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইতিহাস, দর্শন, সমাজকর্ম, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, প্রাণিবিজ্ঞান ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান) এবং মাস্টার্স শেষ পর্বে ৭ টি বিষয়ে ( বাংলা, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও গণিত) কোর্স চালু রয়েছে। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ ১৫ বিভাগে মোট শিক্ষক সংখ্যা ৭২ জন। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক অপার লীলাভূমি ফেনী সরকারী কলেজের মূল ক্যাম্পাস ১০.৫০ একর জমির ওপর অবস্থিত।
পুরাতন ঢাকা - চট্টগ্রাম মহা সড়কের পাশে ১৬.৬৬ একর জমি হুকুম দখল করা হয়। পরবর্তীতে প্রকল্পটি পরিত্যক্ত হয়। বর্তমানে উক্ত ১৬.৬৬ একর জমির মধ্যে ১০.০০ একর জমির উপর ফেনী আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। অবশিষ্ট জায়গার মধ্যে কিছু অংশে বি.এন. সি.সি ১নং ময়নামতি ব্যটালিয়ানের হেড কোয়ারটার, একটি অংশে ফেনী জেলা শিক্ষা অফিস এবং বাকী অংশে ফেনী সরকারী কলেজের ছাত্রাবাস নির্মান করা হয়েছে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ফেনী কলেজের শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের ছিল গৌরবোজ্জল ভূমিকা। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ফজলুল হক. প্রাক্তন ভিপি মৌলান সৈয়দ ওয়ায়েজ উদ্দিন, বীরোত্তম মেজর সালাউদ্দিন মমতাজ, আবু তাহির প্রমুখ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। বীর মুক্তিযোদ্ধা লেঃ কর্ণেল (অবঃ) জাফর ইমাম বীরবিক্রম, প্রাক্তন জি এস ও এমপি জয়নাল আবেদীন হাজারী, প্রাক্তন ভিপি ও এমপি অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন, প্রাক্তন ভিপি জাফর উল্লাহ খান, কমান্ডার মর্তুজা, মোতালেব, কামাল, মোশারফ, কাজী নুরুন নবী, শাজাহন, মোঃ মুছা মিয়া, প্রাক্তন ডিসি আবু তাহের ভূইয়াঁ প্রমুখ ছিলেন ফেনী কলেজের ছাত্র।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় কলেজটি হানাদার বাহিনীর ঘাঁটি গিমেকে ব্যবহৃত হওয়ায় আসবাবপত্র, বই- পুস্তক. বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি প্রায় সব কিছুই ধবংসপ্রাপ্ত হয়।
ফেনী কলেজ তার সুদীর্ঘ ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে বহু বিদগ্ধ ও কিংবদন্তী শিক্ষকের সেবা পাওয়ার সৌভাগ্য পেয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনঃ বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত গবেষক গোপাল হালদার, ড. আহমদ শরীফ, ড. নজমুল করিম. ড. মোজাফফর আহমদ, ড. শামসুল হক, অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন, প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুস সালাম, বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন আই জি ইমাজউদ্দিন, প্রাক্তন সচিব আবদুল আউয়াল, প্রাক্তন সচিব মহিউদ্দিন আহমদ প্রমুখ। এ কলেজের কৃতি ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী, প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শামসুল হক, কেবিনেট মন্ত্রী লে: কর্ণেল (অব:) জাফর ইমাম বীর বিক্রম, প্রখ্যাত সাংবাদিক ওবায়দুল হক, প্রাক্তন ভিসি ছালেহ আহমেদ , প্রাক্তন ভিসি কামাল উদ্দিন, প্রাক্তন ভিসি ড. এ কে আজাদ চৌধুরী ও ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, হাই কোর্টের আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতি কাজী ওবায়দুল হক প্রমুখ।
0 মন্তব্যসমূহ