বাঁশখালীতে পলিথিনের মাধ্যমে উৎপাদিত লবণ মাঠেই চাষীরা প্রতি মণ ৩ শত টাকা থেকে ৩৪০ টাকা দামে বিক্রি করছেন। বাজারে লবণের মূল্য থাকায় চাষীরা লবণ চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েছেন এবার। দীর্ঘদিন বাজারদর কম থাকায় লবণ মাঠ খালি থাকলেও বর্তমানে পুরোদমে চাষাবাদ হচ্ছে। লবণ কেনার জন্য স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা চাষীদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। বাঁশখালীতে উৎপাদিত লবণ সাগর ও নদী পথে চট্টগ্রাম, ঢাকা, ঝালকাঠি, নারায়ণগঞ্জ ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গুদামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদন কাজে ১২/১৩ হাজার শ্রমিক প্রতিনিয়ত লবণ মাঠে কর্মব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালী উপকূলীয় এলাকায় ছনুয়া, শেখেরখীল, পুইছড়ি, গ–ামারা, সরল ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে। লবণ মাঠের জমি উৎপাদন উপযোগী করতে প্লটগুলো প্রখর রোদে ভালভাবে শুকিয়ে রোলার (গাছের গুড়ি) দিয়ে লবণ মাঠকে সমান করে নেয়া হয়। চাষীরা ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিন অথবা সনাতন পদ্ধতিতে পানি সেচের মাধ্যমে প্লটে পানি ভর্তি করেন। সাগরের লবণাক্ত পানি পলিথিনের ওপর রাখার পর চার/পাঁচ দিন প্রখর রোদে শুকানো হয়।
এতে পরিষ্কার লবণ (সাদা) উৎপাদিত হয়। চাষীরা উৎপাদিত লবণগুলো খাঁচা/বস্তা ভর্তি করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। প্রতি লবণ মাঠেই বিক্রি হচ্ছে ৩শত টাকা থেকে ৩৪০ টাকা মণ দরে। লবণ চাষী বদিউল আলম বলেন, প্রতিবছর প্রতি কানিতে ১২০/৩০ মণ লবণ উৎপদিত হয়। চৈত্র মাসে সবচেয়ে বেশি ও ভাল লবণ উৎপাদন হয়। লবণ চাষীরা এই চৈত্র মাস কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। বর্তমানে গ–ামারা, সরল, ছোট ছনুয়া, মৌলভীবাজার, শেখেরখীল ঘাট, খাটখালী ঘাট এলাকায় পাইকারি লবণ ব্যবসায়ীরা ভিড় করছেন। গ–ামারার লবণ চাষী মৌলভী বশির আহম্মদ জানান, এককানি জমিতে পলিথিন লবণ চাষ করে উৎপাদন করতে খরচ পড়ে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। উৎপাদিত লবণের মূল্য পাওয়া যায় ৮০/৯০ হাজার টাকা। আবার কোন কোন চাষী তার ছেয়েও বেশি লাভবান হন। এ বছর লবণ চাষকৃত জমি লাগিয়ত হয়েছে ৪০/৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
বাঁশখালী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় এলাকায় ১ হাজার ২ শতক হেক্টর জমিতে এ বছর লবণ চাষ হচ্ছে। চাষীরা কুয়াশার সময় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরবর্তীতে প্রখর রোদ্রে প্রচুর পরিমাণ লবণ উৎপাদিত হয়েছে।
সুত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ
সুত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ
0 মন্তব্যসমূহ