বি,এন ডেস্কঃ
খেলছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ। কিন্তু চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ভাবনায়
২০১৯ বিশ্বকাপ। সেটি তিনি জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে আসার আগে বলেছেন, এখানে
এসেও বলেছেন। হাতে যথেষ্ট সময় আছে। তবুও ২০১৯ বিশ্বকাপ সামনে রেখে এখনই
প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। পেস-নির্ভরতা বাড়িয়ে দেওয়া এর
উদাহরণ। পরের বিশ্বকাপ যে ইংল্যান্ডে।
ভালো কিছু করতে দীর্ঘ প্রস্তুতির বিকল্প নেই। হাথুরুসিংহে শ্রীলঙ্কা
দলের দায়িত্ব নিয়ে সেই কাজটাই শুরু করে দিয়েছেন। ২০১৪ ফুটবল বিশ্বকাপজয়ী
জার্মানি যেটি শুরু করেছিল ২০০৬ বিশ্বকাপের পরই। ২০১১ বিশ্বকাপ জেতা
মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত যেটি শুরু করেছিল ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে। কিন্তু
২০১৯ বিশ্বকাপ নিয়ে বাংলাদেশের ভাবনাটা কী? বলতে পারেন, আগে নিদাহাস
ট্রফিতে কী হবে, সেটা চিন্তা করেন, বিশ্বকাপ তো আরও পরে!
দেশের মাঠে শ্রীলঙ্কার কাছে প্রতিটি সিরিজ যেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ,
মার্চে শ্রীলঙ্কা-ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত কিছুর স্বপ্ন দেখা কঠিনই। তবুও
দেখতে হয়, আশায় বুক বাঁধতে হয়। সে পথ ধরে বিশ্বকাপ নিয়েও ভাবতে হয়।
২০১৫ বিশ্বকাপের আগেও এমন একটা সংকটে পড়েছিল বাংলাদেশের। দেশের মাঠে
২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা বাজে গেল। টুর্নামেন্টের পরই এপ্রিলে কোচ শেন
জার্গেনসেনের বাংলাদেশ-অধ্যায়ও শেষ হলো। জুনে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এলেন।
ভারত-সিরিজটা ‘দর্শক’ হয়েই দেখলেন। আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে শুরু
তাঁর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। বিশ্বকাপে ভালো করার আত্মবিশ্বাস বাংলাদেশ পেল
২০১৪-এর অক্টোবর-নভেম্বরে দেশের মাঠে জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই করে।
তবে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি কাজে দিয়েছিল বিশ্বকাপের আগে ব্রিসবেনে তিন
সপ্তাহের প্রস্তুতি। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সেই প্রস্তুতিপর্ব শেষে অ্যালান
বোর্ডার ওভালে ১ ও ৩ ফেব্রুয়ারি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে দুটি
প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছিল বাংলাদেশ। পরে পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের
বিপক্ষে আইসিসি-নির্ধারিত দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ।
এই যে পরিকল্পনা, প্রস্তুতি—এসবই পরে কাজে দিয়েছিল টুর্নামেন্টে,
বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পা রেখেছিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। হাথুরুর
সঙ্গে বিসিবির চুক্তি ছিল ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বিশ্বকাপ নিয়ে তাঁর
আলাদা পরিকল্পনা নিশ্চয়ই ছিল। যেহেতু হাথুরুর বাংলাদেশ-পর্ব শেষ, বিসিবিকে
নতুন করে ভাবতে হচ্ছে ২০১৯ বিশ্বকাপ নিয়ে। সামনে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব যে
কোচই নেবেন, বিশ্বকাপ নিয়ে তাঁর পরিকল্পনাটা কী হবে, সেটি বেশি অগ্রাধিকার
দেবে বিসিবি।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন অবশ্য বললেন, বিশ্বকাপ তাঁদের
পরিকল্পনার মধ্যেই আছে, ‘২০১৯ বিশ্বকাপ আমাদের পরিকল্পনার মধ্যেই আছে।
হাথুরুর সময় থেকেই পরিকল্পনা হচ্ছে। গত কদিনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা যা হয়েছে
টি-টোয়েন্টি সংস্করণেই। ওয়ানডের তুলনায় এ সংস্করণে আমরা অনেক পিছিয়ে। একটু
সুযোগ দেওয়ার দরকার খেলোয়াড়দের। ওয়ানডেতে ভালো অবস্থানে আছি,
টি-টোয়েন্টিতেও ভালো অবস্থানে আসা দরকার।’
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানও জানালেন, ওয়ানডে
দলটা থিতুই আছে। তাঁর মতে, বিশ্বকাপের আগে খুব বেশি অদলবদল হওয়ার সম্ভাবনা
সীমিত, ‘আমাদের কিছু খেলোয়াড় চোটে পড়েছে। আর দলের পারফরম্যান্স সমুদ্রের
ঢেউয়ের মতো। কখনো উঠবে, কখনো পড়বে। এটা মানতে হবে। এবার অনেক ইতিবাচক দিকও
ছিল, কিছু তরুণ খেলোয়াড়কে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠিত খেলোয়াড়দের মতো
তাদের কাছ থেকে আশা করা ঠিক হবে না। একটু সময় দিতে হবে। যারা ছন্দ
হারিয়েছে, তারা আশা করি ছন্দ ফিরে পাবে। আহামরি কোনো পরিবর্তন না হলে এ
দলটাই হয়তো থাকবে।’
বিসিবির বিশ্বকাপ ভাবনা আপাতত এতটুকুই। বাকিটা হয়তো ভাববেন তিনি, যিনি
সামনে দায়িত্ব নেবেন বাংলাদেশ দলের। তাঁর জন্য কাজটা কঠিন হবে সন্দেহ নেই।
যদিও একটা ভালো সিরিজ আবার সবকিছু ঠিক ছন্দে ফিরে আনবে, এও হয়তো সত্যি।
সুত্রঃ প্রথম আলো
0 মন্তব্যসমূহ