ঐতিহ্যবাহী বারুণী মেলা অঙ্গারখালী


বি,এন ডেস্কঃ
সমুদ্রের পাড়ে অবস্থিত আমাদের গ্রাম "খানখানাবাদ" যা গুনাগরী খাসমহল থেকে মোশরফ আলী মিয়ার বাজার হয়ে মাত্র ৩ মাইল সোজা পশ্চিমে এবং গ্রাম থেকে চট্টগ্রাম শহর মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যাতায়াত ব্যবস্থা এবং অন্যান্য ধরনের সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে এটিকে আমরা একটি সহজ যোগাযোগ ও অতিথি পরায়ন গ্রাম বলতে পারি। আমাদের গ্রামের "বারুণী মেলা" একটা ঐতিহ্যবাহী উৎসব। প্রতি বছর চৈত্র মাসে বারুণী তিথিতে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেই অনুসারে এ বছর ১৫ মার্চ মেলার প্রধান দিন। এ মেলার ব্যপ্তি কাল তিন দিন হলেও খুব জমবে এক দিন। হিন্দু ধর্মের প্রথা অনুসারে বারুণী তিথিতে এখানে স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। কথিত আছে যে এ তিথিতে এখানে স্নান করে এক মনে ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা প্রার্থনা করলে ঈশ্বর সব পাপ ক্ষমা করে দেয় এবং সে ঈশ্বরের অপার কৃপা লাভ করে। গ্রামের পার্শ্বেই জোয়ারে সরোবর সমুদ্রে এ স্নান উৎসব আনুষ্ঠিত হয়। যেখানে মহিলাদের জন্য করা হয় স্নানের সু-ব্যবস্থা। যদিও এটা হিন্দুদের একটা ধর্মীয় উৎসব। একে কেন্দ্র করে মেলাটা অনুষ্ঠিত হয় তবে এখানে হিন্দু-মুসলিমের থাকে সমান অংশ গ্রহণ। প্রতিটি বাড়িতে একটা উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। প্রতিটি ঘরে শুরু হয় আত্নীয়-স্বজনদের আনাগোনা। এ যেন এক অন্য রকম উৎসব যেখানে আশ-পাশের কয়েক গ্রমের মানুষের থাকে সমান অংশগ্রহণ এবং আন্তরিকতার মিলন মেলা যা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। কবে এই মেলা শুরু হয়েছে তা সঠিক ভেবে কেউ বলতে পারে না। তবে ধারনা করা হয় এটা শত বছরেরও অধিক সময় ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। খানখানাবাদ বারুণী উদযাপন কমিটির সার্বিক ব্যবস্থপনায় এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। আজ থেকে ২৮ বছর আগে এই মেলাটা আরও সৌন্দর্য্যমন্ডিত ছিল। তখন মেলা প্রাঙ্গণ ছিল আরও সু-বিশাল। ১৯৯১ সালের জলোচ্ছ্বাসের পর বেশ কিছু ভূমি/ চরের অংশ বিলীন হয়ে যাবার পর নতুন করে স্থাপিত হওয়া স্কুল মাঠ ও এর আশ-পাশের খালি জায়গাতে মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মৃৎশিল্পের কেনাবেচা, ঘুড়ি উড়ানোর জৌলশ, নাগরদোলা মৌসুমসেরা 'তরমুজ বাংগী, বেত শিল্পিক কারু কাজ, বাশের বাশুরী ইত্যাদি সংগ্রহের এক সহজ সুযোগ থাকছে এই মেলায়। এ বছর ১৫ মার্চ বৃহস্পতিবার ও পরদিন শুক্র বার সরকারী ছুটির দিন থাকায় এবার আশা করা যাচ্ছে লোক সমাগম আরও অনেক বেশি হবে। যদি আপনি আপনার শত ব্যস্ততার মাঝে একটু সময় বার করতে পারেন তবে ঘুরে আসুন আমাদের ছোট্ট এই গ্রামটিতে। উপভোগ করুন গ্রামের এক মহা উৎসব। আমাদের পক্ষ থেকে রইল আন্তরিক নিমন্ত্রন। আশা করি সকালের সাগরের স্নিগ্ধ হাওয়া ভালো লাগার পরশ বুলিয়ে দিবে, সবাইকে।খুঁজে পাবেন দ্বিতীয়/ বিকল্প কক্সবাজার।
লিখাঃ- আলহাজ্ব ক্যাপটেন মনজুরুল হক চৌধুরী

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ