বি,এন ডেস্কঃ
সিরিয়ায় সরকার ও সরকারবিরোধী বাহিনীর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রতিদিনই অসংখ্য
শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। পাশাপাশি অরও অনেক শিশু আহত হচ্ছে, পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে
সারা জীবনের জন্য। অনেক শিশু তাদের মা-বাবাকে হারাচ্ছে। আর এসব ছবি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তা দেখে যে-কারও চোখ ভিজে
যায়। সিরিয়ার এই শিশুদের জন্য কেঁপে উঠেছে বাংলাদেশের চিত্রনায়িকা অপু
বিশ্বাসের মন। গতকাল শনিবার নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে অপু বিশ্বাস একটি
ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন। এই ভিডিও বার্তার শিরোনাম, ‘আমরা সব অশান্তির
নিরসন চাই, আমরা সব সময় মানবতার গান গাই’। এ সময় অপু বিশ্বাসে চোখ ছলছল
করছিল।
সিরিয়ার শিশুদের ‘সত্যিকারের যোদ্ধা’ আখ্যায়িত করে অপু বিশ্বাস বলেন,
‘এই ভিডিওটি সিরিয়ার শিশুদের উদ্দেশে। আমরা জানি, তোমরা অনেক নির্যাতিত
হচ্ছ। আমি একজন মা। একজন চলচ্চিত্রশিল্পী। জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি অবিরাম।
কিন্তু আমার মতে তোমরাই সত্যিকারের যোদ্ধা। আশা হারিয়ো না। পুরো বিশ্ব
তোমাদের সঙ্গে আছে। আমরাও তোমাদের সঙ্গে আছি। আমিও তোমাদের সঙ্গে আছি।’
এরপর নিজের ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে অপু বিশ্বাস সিরিয়ার এই যুদ্ধ,
শিশুহত্যা আর শিশুদের ওপর অত্যাচার বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি লিখেছেন,
‘সিরিয়ায় যে যুদ্ধ চলছে, তা আমি কেন, পৃথিবীর কেউ মেনে নেবে না এবং নিচ্ছেও
না। সিরিয়ার যুদ্ধে যেভাবে শিশুদের ওপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে এবং তাদের
হত্যা করা হচ্ছে, তা আমার হৃদয়কে প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত করে চলেছে। কারণ
আমিও একজন মা। পৃথিবীর প্রতিটি শিশুই আমার কাছে সন্তানের মতো। তাই আমি
কামনা করি, দ্রুত এই যুদ্ধ, শিশুহত্যা ও তাদের ওপর অত্যাচার বন্ধ হোক।
শিশুদের জন্য পৃথিবীর প্রতিটি স্থানই হোক নিরাপদ স্থান।’
অপু বিশ্বাস আরও লিখেছেন, ‘যুদ্ধের সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। আমরা
ছোটবেলা থেকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিয়ে যুদ্ধ করেছি, পরে
ক্যারিয়ার নিয়ে যুদ্ধে চালিয়েছি। সংসার থেকে শুরু করে কমবেশি সব ক্ষেত্রেই
যুদ্ধ করছি। যেমনটি আমিও। চলচ্চিত্র, সংসারসহ জীবনের অনেকটি সময় যুদ্ধ করতে
হয়েছে আমাকে। সেই যুদ্ধকে মেনেও নিয়েছি।’
এদিকে সিরিয়ার ঘৌতা অঞ্চলে দুই সপ্তাহ ধরে চলা হামলায় অন্তত ৬৭৪
বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। ‘দ্য সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স’ নামের একটি
সংস্থা এ দাবি করেছে। ‘হোয়াইট হেলমেটস’ নামে পরিচিত এই সংস্থার তথ্যের
বরাতে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দেওয়া হয়।
শনিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভায় আন্তর্জাতিক শক্তির দেশগুলোর চাপে
৩০ দিনের অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব পাস হয়। বিল পাসের পরও বন্ধ হয়নি বিমান
হামলা। অস্ত্রবিরতি ঘোষণার পর গত এক সপ্তাহে প্রায় ১০৩ জন নিহত হয়েছে।
এদের মধ্যে ২২ শিশু ও ৪৩ নারী রয়েছে।
২০১৩ সালের মধ্যবর্তী সময়ে পূর্ব ঘৌতা এলাকাটি সিরিয়ার সরকারবিরোধী
দলের দখলে চলে যায়। এরপর থেকে ওই এলাকা বাশার আল-আসাদ সরকারের সেনাবাহিনী
ঘিরে রাখে। প্রায় চার লাখ সাধারণ নাগরিক সেখানে আটকা পড়ে আছে বলে হোয়াইট
হেলমেটস জানায়।
আজ রোববার আরেক খবরে জানা গেছে, সিরিয়ার আফরিনে তুরস্কের বিমান হামলায়
সরকারপন্থী বাহিনীর ৩৬ জন নিহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির এক
প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়। সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমের আফরিনে এই হামলা চালায়
তুর্কি যুদ্ধবিমান। গত ৪৮ ঘণ্টায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে লক্ষ্য করে এ
নিয়ে তিনবার হামলা চালায় তুরস্ক।
0 মন্তব্যসমূহ