গণতন্ত্রের মানদণ্ড কি আমাদের জার্মানদের কাছ থেকে শিখতে হবে?: এইচ টি ইমাম

বিএন ডেস্কঃ
বাংলাদেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং সেখানে গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদণ্ড পর্যন্ত মানা হচ্ছে না বলে একটি জার্মান গবেষণা প্রতিষ্ঠান যে মন্তব্য করেছে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার।
বিশ্বের ১২৯টি দেশে গণতন্ত্র, বাজার অর্থনীতি এবং সুশাসনের অবস্থা নিয়ে এক সমীক্ষার পর জার্মান প্রতিষ্ঠান ‘বেরটেলসম্যান স্টিফটুং’ তাদের রিপোর্টে এই মন্তব্য করে। রিপোর্টটি শুক্রবার প্রকাশ করা হয়েছে।
এই রিপোর্টটির ব্যাপারে বিবিসি বাংলা কথা বলেছে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সঙ্গে।
বিবিসি বাংলার মাসুদ হাসান খানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি রিপোর্টটি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন।’
রিপোর্টটির ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘যে সমীক্ষার ভিত্তিতে রিপোর্টটি করা হয়েছে, সেটির তথ্য তারা কোথায় পেয়েছে? রিপোর্টটি যদি ২০১৫ সাল থেকে নেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হয়ে থাকে, তাহলে সেবছর তো বাংলাদেশে উল্টো ঘটনা ঘটছিল।’
‘বাংলাদেশে বিরোধী দল বিএনপি যে অগ্নি-সন্ত্রাস শুরু করেছিল, তখন বাংলাদেশে সাধারণ মানুষ চরমভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছিলেন, তাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় হত্যা করা হচ্ছিল, আহত করা হচ্ছিল।’
এইচ টি ইমাম বলেন, বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্র বা নির্বাচন নিয়ে কাজ করেন, তাদের কারও কাছে কখনো তিনি এরকম কোনো সমীক্ষা হচ্ছে বলে শোনেননি।
বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদণ্ড পর্যন্ত রক্ষা করা হচ্ছে না বলে রিপোর্টে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সে প্রসঙ্গে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘গণতন্ত্রের মানদণ্ড কি আমাদের জার্মানদের কাছ থেকে শিখতে হবে? হিটলারের দেশ থেকে?’
২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে যেসব প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সেসব পরবর্তীকালে বিশ্বের সব দেশ মেনে নিয়েছে বলে দাবি করেন এইচ টি ইমাম।
তিনি বলেন, ‘ঐ নির্বাচন সঠিকভাবে হয়েছে, সবাই অংশ নিয়েছে। ঐ নির্বাচনের পরে যদি এই সমীক্ষা হয়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে এর পেছনে অন্য কারণ আছে।’
বাংলাদেশে নাগরিক অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে রিপোর্টে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তার জবাবে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন ঢাকা থেকেই প্রকাশিত হয় প্রায় তিনশোর বেশি দৈনিক। প্রত্যেকটি সংবাদপত্র কিভাবে লিখছে আপনারা দেখতে পারেন।’
‘প্রত্যেকটি টেলিভিশনের টক শো যদি আপনি দেখেন, সেখানে কি মত প্রকাশের অধিকার নেই, স্বাধীনতা নেই? বাংলাদেশে মোটেই কোনো কিছু সেন্সর করা হচ্ছে না।’
রিপোর্টে ১২৯টি দেশের মধ্যে ৫৮টি দেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং ৭১টি দেশকে গণতান্ত্রিক বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
বেরটেলসম্যান স্টিফটুং-এর সমীক্ষায় ২০১৬ সালে তাদের আগের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, বিশ্বের ৭৪টি দেশে গণতান্ত্রিক এবং ৫৫টি দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন চলছে।
সূত্রঃ বিবিসি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ