বি এন ডেস্কঃ
ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ, তর্ক-বিতর্ক কিংবা রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা
থাকতেই পারে। শুরুতেই প্রশ্ন হলো, কবি সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগ সভাপতি এশা
কি রগ কেটেছিল? যদিও স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের উত্তর ইতোমধ্যে মীমাংসিত
হয়েছে, যার পা দিয়ে রক্ত বের হয়েছিল সেই ছাত্রী উত্তর দিয়েছে তার রগ
কাটেনি, সে লাথি দিয়ে পা কেটেছে। তারপরেও অস্বাভাবিক বাস্তবতা হচ্ছে, শুধু
রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতার কারণে বিরোধী একটা শ্রেণীর লোকের চোখে এশা
এখনো সেই রগ কাটার অভিযোগে অভিযুক্তই আছে।
আরেকটা বিষয় বেগম খালেদা জিয়ার মামলাটা দেখুন, সকল প্রকার আইনি লড়াই
সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে দীর্ঘ ১০ বছর মামলা মোকাবেলা করে বেগম খালেদা জিয়া
যখন জিয়া এতিম খানা মামলায় অভিযুক্ত প্রমাণিত হলো, সেটা নিয়েও এক শ্রেণীর
লোকের আছে প্রশ্ন আছে। কিন্তু কেন? উত্তর খুব সাধারণ। শুধুই রাজনৈতিক
মতাদর্শের কারণে অর্থাৎ তাদের মতামত হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া অপরাধী নয়,
সরকার অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে। এই যদি হয় বাস্তবতা তাহলে
কিভাবে সেই সব লোকেরা একেবারে আটঘাট বেধে নো সাউন্ড সিকিউরিটি ক্যামেরার
ফুটেজ দেখে রনিকে চাঁদাবাজ হিসেবে জাজমেন্ট করে?
পৃথিবীব্যাপী প্রচলিত আছে, কোনো মেয়ের ইচ্ছায় ফিজিক্যাল সম্পর্ক হলে
সেটাকে বলা হয় রোমান্স, অপরদিকে মেয়েটির অনিচ্ছায় ফিজিক্যাল হলে সেটাকে বলা
হয় ধর্ষণ। তদ্রূপ এমন চড়-থাপ্পড়ের হাজারো লক্ষ ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে এই
বাংলায়। সে বিষয়ে নো কমেন্টস। যেহেতু সেইসব ধারণ হচ্ছে না কোনো সিকিউরিটি
ক্যামেরায়, যেটা ধারণ হয়েছে এবং ভাইরাল হয়েছে সেটাকে এভিডেন্স হিসেবে দেখলে
অবশ্যই রনি অপরাধী শারীরিক আঘাতের কারণে।
আর চাঁদাবাজির অভিযোগ? এক পক্ষের অভিযোগে তো আর আইন চলে না, বিবাদী কি
বলতে চাচ্ছে সেটাও শুনতে হবে, আর দুই অভিযোগ যখন আদালত শুনবে বা আমলে নিবে
তখন দু’জনেরই সেটা প্রমাণ করতে হবে যে রনি তার বিনিয়োগের টাকা ফেরত চাইতে
গিয়েছিল নাকি কোচিং এর মালিকের কাছে চাঁদা চাইতে গিয়েছিল। উক্ত দুই বিষয়
এখনো বহু দূরের পথ। কাজেই এর আগে রনি কে চাঁদাবাজ হিসেবে জাজমেন্ট করে কথা
বলা কতটা যৌক্তিক সেটা ভেবে দেখার অনুরোধ করবো।
ছাত্রলীগ কর্মী রনির সাংগঠনিক ধ্যান-ধারনা ভাবনা নিয়ে অনেকটুকু বলার
আছে। যেহেতু এই বক্তব্য কোনো দলীয় ফোরামের নয়, সেহেতু সেই বিষয়ে এখানে
বক্তব্য দিয়ে কোনো লাভ হবে না। তবে এটা বলতে হবে যে, রনি ছাত্রদের অধিকার
রক্ষা ও অর্জনের জন্য যেসব ভূমিকা পালন করেছে আমরা সেসব করতে পারিনি। আর
তাই বয়সে ছোট হলেও রাজনৈতিকভাবে রনি সিনিয়র।
এমন একটা সময়ে দাঁড়িয়ে রনির জন্য বলতে হচ্ছে যখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের
মূল স্লোগান শিক্ষা শান্তি প্রগতি ধারণ করা আদর্শিক কর্মীর সংখ্যা ক্রমেই
কমে আসছে। বহিরাগত অনুপ্রবেশকারীদের দাপটে আদর্শিক অনেক নেতা কর্মী পেছনের
সারিতে চলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে রনির মত হাজারো রনির
খুব দরকার আছে। তাই বলছি, রনির চাঁদাবাজির অভিযোগ পুরোটাই গুজব।
একটা প্রশ্ন করতে চাই, রনির বিরুদ্ধে যেই ব্যক্তি চাঁদাবাজির অভিযোগ
তুললো অর্থাৎ ইউনিএইড কোচিং সেন্টারের মালিক রাশেদ বাংলাদেশের রাজস্ব খাতে
বছরে কত টাকা আয়কর দেন? এটা জানতে চাই? কারণ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের
২৮ তারিখে এই কোচিং সেন্টারের মালিক রাশেদ চট্টগ্রামের একটি থানার পুলিশ
কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৭০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছিল। এক বছরের মধ্যে
রনির বিরুদ্ধে আনলো ২০ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ। এই পর্যায়ে
প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হলো, প্রতি বছর যে নামীদামী লোকদের বিরুদ্ধে রাশেদ
চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলছে, সত্যিকারে রাশেদ কোনো ঠকবাজ চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী
নয় তো? আশাকরি গুজবে কান দেওয়া পাবলিক খুঁজে দেখবে রাশেদের ইনকাম সোর্স কী,
বছরে কত টাকা আয়কর দেন?
রনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্পদ। কেউ মানুক আর না মানুক তাতে কিচ্ছু যায়
আসে না। আবার কেউ যদি বলে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ কিভাবে ছাত্রলীগের সম্পদ হয়?
তাদের কে অনুরোধ করবো গুজবে কান না দিয়ে চট্টগ্রাম যান, সাধারণ শিক্ষার্থী ও
তাদের অভিভাবকদের কাছে খোঁজ নিন। রনি কেমন? উত্তরটা অবশ্যই পেয়ে যাবেন বলে
বিশ্বাস করি। মূল বিষয় হলো- চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে
জামায়াত-শিবির উচ্ছেদে তার ভূমিকা অপরিসীম। এ কারণে তিনি জামায়াত-শিবিরের
চক্ষুশূল। এছাড়া জামায়াত-শিবির তোষণের কারণে সেখানকার বর্তমান মেয়রসহ আরও
অনেকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় রনি তাদের একমাত্র টার্গেট। তাকে
কোনোভাবে চাঁদাবাজ প্রমাণ করে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে পারলে চট্টগ্রামে
আবারও জামায়াত-শিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে পারবে।
অথচ কিছু লোককে আমি জানি যারা রনি সম্পর্কে এক লাইনও জানে না, রনির
পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিটি সম্পর্কে মিনিমাম ধারণা রাখে না, বসবাস করে সৌদি
ইউরোপ বা আমেরিকাতে, সেই তারা নো সাউন্ড একটা ভিডিও দেখে কিভাবে তারা কারণে
রনি চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী গুণ্ডা জাজমেন্ট করে। তাদেরকে শুধু এইটুকু বলছি,
রনির বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগ তুলেছেন তার বক্তব্যকে কুরআন-হাদিস-বাইবেলের
বক্তব্যের মত আমলে না নিয়ে রনির বক্তব্য শুনুন। কারণ রনির সেদিনের
বক্তব্যের মাঝেই রয়েছে অনেক প্রশ্নের সুন্দর উত্তর।
ছাত্রলীগ থেকে রনি অব্যাহতি নিয়েছে যাতে তার কারণে ছাত্রলীগ কে কথা
শুনতে না হয়। এর মানে এটা বুঝায় না রনি চাঁদাবাজ। আশা করি চাঁদাবাজির গুজব
কাটিয়ে রনি অবশ্যই ফিরবে এবং সম্মান নিয়েই ছাত্রলীগে ফিরবে সেই প্রত্যাশায়
আছি।
সুত্রঃচ্যানেল আই অনলাই
0 মন্তব্যসমূহ