বিনোদন ডেস্কঃ
জি বাংলার সেই ‘রাশি’কে মনে আছে? এটাই ছিল ছোট পর্দায় মেয়েটির প্রথম
কাজ। নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে তাকে। অল্প দিনেই রাশির
লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে যান দর্শক। রাশির সুখ-দুঃখ আর আনন্দ-কষ্ট অনুভব করে
সবাই। একদিন ‘রাশি’র গল্প শেষ হয়, কিন্তু এরপর ‘রাশি’ চরিত্রের গীতশ্রী
রায়কে কোথাও পাওয়া যায়নি। অনেক দিন একই চরিত্রে কাজ করতে করতে ‘রাশি’র মাঝে
হারিয়ে যায় মেয়েটি। এরপর দেড় বছর টানা বিরতি। গত বছরের জানুয়ারি মাসে
যুক্ত হন আরেকটি সিরিয়ালের সঙ্গে, স্টার জলসার ‘দেবীপক্ষ’। ‘রাশি’ যেভাবে
দর্শকহৃদয়ে নিজের স্থান করে নিয়েছিল, ‘দেবীপক্ষ’ কিন্তু তেমনটা পারেনি।
দর্শক মনে রেখেছে ‘রাশি’কে।
সেই ‘রাশি’ গীতশ্রী রায়কে এবার পাওয়া গেল বড় পর্দায়। চলচ্চিত্রে অভিনয়
করছেন। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর প্রথম ছবি। নাম ‘অন্তর সত্তা’। পরিচালক
ঋক চট্টোপাধ্যায়। ছবিতে গীতশ্রীর চরিত্রের নাম ‘মিষ্টি’। ছবির গল্প গড়ে
উঠেছে উজান আর মিষ্টিকে নিয়ে। জীবনের নানা পর্যায়ে চলতে চলতে উজান ক্রমেই
একা হয়ে যায়। মিষ্টির সঙ্গে তার জীবন যোগসূত্রে বাঁধা পড়েও ছিন্ন হয়ে যায়।
উজানের একাকিত্বের সুরে বাঁধা এই ছবিতে গীতশ্রী ছাড়াও অভিনয় করছেন সৌমিত্র
চট্টোপাধ্যায়, তুলিকা রায়, রাজদীপ সরকার প্রমুখ।
প্রথম ছবি নিয়ে গীতশ্রীর অভিমত, ‘যাঁরা ছবিটি দেখেছেন, তাঁরা যখন সিনেমা
হল থেকে বের হয়েছেন, তখন তাঁদের চোখ ছিল ভেজা। ছবিতে গীতশ্রী বাস্তববাদী
মেয়ে। মিষ্টির সঙ্গে বাস্তবের গীতশ্রীর তেমন মিল নেই।’
‘রাশি’ শেষ হয়েছে অনেক দিন হলো। কিন্তু দর্শক এখনো মনে রেখেছে রাশি
নামের সেই সংগ্রামী মেয়েকে। গীতশ্রী বললেন, ‘যাঁরা আমাকে ছোট থেকে গীতশ্রী
বলে ডাকতেন, তাঁদের কাছে আমি আজও গীতশ্রী বা গীত। অন্যরা অবশ্য রাশি বলেই
ডাকেন।’মাধুরী দীক্ষিতের নাচের এক্সপ্রেশন নকল করতেন গীতশ্রী। মাধুরী দীক্ষিতের
দারুণ ভক্ত। খুব ইচ্ছা হতো মাধুরীর মতো করে নাচবেন। তাঁর এই ইচ্ছাকে
গুরুত্ব দেন অভিভাবক। ভর্তি করে দেন নাচের স্কুলে। সেখানে তিনি শিখেছেন
কত্থক, ভরতনাট্যম আর পাশ্চাত্যের নাচ। এই নাচের স্কুলের বন্ধু আর শিক্ষকদের
অনুপ্রেরণায় নাকি অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে বলেন,
বন্ধু আর শিক্ষকদের অনুরোধে কলকাতার ভারতলক্ষ্মী স্টুডিওতে যান। ‘রাশি’
সিরিয়ালের জন্য অডিশন দেন। সুযোগও পেয়ে যান।
‘রাশি’ জনপ্রিয় হওয়ার পর পাল্টে যায় গীতশ্রীর লাইফস্টাইল। বললেন, ‘অনেক
কিছু বদলে গেছে। এই যেমন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করতে পারি না,
রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খেতে পারি না, ফুটপাতে দাঁড়িয়ে শপিং করতে পারি না।’
শোবিজে সবাই যখন ‘জিরো’ ফিগারের দিকে ছুটছেন, তখন গীতশ্রী বলেন, ‘জিম’
শব্দটি নাকি তাঁর অভিধানে নেই। শব্দটি তাঁর কাছে যমের মতো। বললেন, ‘যখন
নিয়মিত নাচ করেছি, তখন আলাদা করে শরীরচর্চা করতে হয়নি। কিন্তু মেগা শুরু
হওয়ার পর, নাচের চর্চায় ব্যাঘাত ঘটে। ফলে মোটা হয়ে যাই। কিন্তু এখন পাওয়ার
যোগা করছি। বাড়িতেই যোগা টিচার আসেন।’
নিজের রোজগারের অর্থ গীতশ্রী কীভাবে খরচ করেন? বললেন, ‘আমার আয়ের
সিংহভাগ বেরিয়ে যায় শপিং করতে আর ঘুরতে যেতে। মাসের শেষে বাবা আমাকে হাত
খরচ দিয়ে সাহায্য করেন। তবে পূজা বা বড়দিনে কোনো অনাথ আশ্রম বা বৃদ্ধাশ্রমে
কিছু অর্থ দান করি।’শাড়ি তাঁর প্রিয় পোশাক। জিনস আর টি-শার্টেও স্বচ্ছন্দবোধ করেন। কাঁধ
চওড়া বলে ‘অফ শোলডার’ পোশাক পরেন না। কিন্তু পা সুন্দর বলে হট প্যান্টে
নাকি তাঁকে বেশ মানিয়ে যায়।
নিজের আগামী কাজ নিয়ে বললেন, ‘আড্ডা টাইমসের একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয়
করছি। সুদেষ্ণা রায় ও অভিজিৎ গুহর পরিচালনায় এই ওয়েজ সিরিজের নাম “ভার্জিন
মোহিতো”। দেখা যাবে এপ্রিলের শেষে। মেগা সিরিয়ালে ফিরতে আপত্তি নেই। মেগার
কথা চলছে। এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। তবে এখন অন্য রকম চরিত্রে কাজ করতে
চাই।’
0 মন্তব্যসমূহ