বাঁশখালীর ক্ষুদে বিজ্ঞানী আসিরের বিমান উড়ল আকাশে (ভিডিও)


মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনঃ বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের লোসাই পাড়া গ্রামে মোঃ আসিরের জন্ম। তার বাবার নাম মোঃ শাহাব উদ্দিন। দীর্ঘদিন ধরে আসিরের কৌতূহলের শেষ নেই।অদম্য ইচ্ছা শক্তির প্রয়াস ঘটিয়ে শেষবধি ১ঘন্টার উপর সময় ধরে রিমোট কন্ট্রোলের নিয়ন্ত্রণে বিমানটি আকাশে উড়িয়েছে সে। এদিকে দৃশ্যটি এলাকায় অনেকের কাছে কৌতূহলের সৃষ্টি করে।বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে তার বিমান উড্ডীয়নের দৃশ্যটা ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। সে কৌতূহল বশত ছোটবেলা থেকে আকাশে বিমান উড়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবতো। যেই ভাবা সেই কাজ। সে ২০১৫ সালের পর থেকে এবিষয়ে কাজ করছে নিষ্টা ও দক্ষতার সাথে। অবশেষে দীর্ঘ ৩বছরের গবেষণার ফলে ২০১৭সালের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে তার আবিষ্কৃত ছোট বিমানটি সফলভাবে আকাশে উড়াতে সক্ষম হয়েছে। 
বাঁশখালী নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের পর থেকে বিভিন্ন পরিত্যক্ত খেলনা সামগ্রীর যন্ত্রাংশ সংগ্রহের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ তৈরী করেছেন। বিমানটি তৈরী করতে গিয়ে ২০১৫ সালের পর থেকে সে প্রায় ৩০বারের মতো উড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। অবশেষে ২০১৭সালের ডিসেম্বর মাসে আকাশে বিমান উড়ার স্বপ্ন পূরণ হয়।দুই থেকে ৩বছরের সাধনায় আবিষ্কৃত বিমানটির ওজন ৮০০গ্রাম বলে জানান তিনি।বিমানটির পাখাগুলো তৈরী করেছে সে ককসিট দিয়ে।পুরো বিমানের বডি তৈরী করতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করতো ঢাকার একটি দোকান থেকে।লেখাপড়ার পাশাপাশি সে হাত খরচার টাকা জোগাড় করে বিমানের প্রয়োজনীয় অংশের ব্যয় নির্বাহ করতেন।আসিরের বানানো বিমানের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন,বিমানটি তৈরীর পর নাম দিয়েছি FTRC AROPLANE।বিমানে যে মোটর তিনি ব্যবহার করেছেন তার ওজন ৩৩গ্রাম।এটি ১কিলোগ্রাম ওজন পরিবহন করতে সক্ষম।সে যে মোটরটি ব্যবহার করেছেন তার নামBrusless Motor।তাতে ব্যবহৃত ব্যাটারি ২২০০ এ্যাম্পিয়ার(Lepo Battery)।বিমানে ব্যবহৃতMin Spen পাখা ১২০ সেন্টিমিটার Body Spen ৪০ সেন্টিমিটার।ক্ষুদে এই প্রতিভার অন্যান্য আবিষ্কারের মধ্যে রয়েছে FTRC Aroplane,DC Water,Pump,Electric car,Electric Boot,Soler Bank,DC Motor Dron।বিমান কন্ট্রোলার সম্পর্কে আসির বলেন,এটি আসলে ড্রোনের কন্ট্রোলার।এই কন্ট্রোলার দিয়ে মূলত ড্রোন,বিমান,গাড়ি,ইত্­যাদি চালানো যায়।আমি সেটি বিমান নিয়ন্ত্রণের কাজে উপযুক্ত করেই ব্যবহার করেছি।
এবিষয়ে ধারণা কোথা পেল জানতে চাইলে তিনি এপ্রতিবেদককে বলেন,একটা বিমান তৈরী করতে কি কি প্রয়োজন,কিভাবে কোথায় কি সংযোজন করতে হবে তা আমি ইন্টারনেটের মাধ্যমে জেনে তারপর কাজ করতাম।রিমোট কন্ট্রোলার ছাড়া বাকি সবকিছুই আমি সংযোজন করে ক্ষুদে বিমানটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি।আমার লক্ষ্য এখন একটাই,আজকে ৩৩গ্রাম ওজনের মোটর দিয়ে বিমান তৈরী করেছি।ভবিষ্যতে বড় বিমান তৈরীর প্রচেষ্টায় আছি।তিনি আরো বলেন,আগামীতে আমি একটা ৫/৬ কিলোগ্রাম ওজনের মোটর দিয়ে বিমান তৈরী করব।বিমানটি ৬০-৭০কেজি ওজন নিয়ে আকাশে উড়তে সক্ষম হবে।এটি তৈরী করতে অনেক টাকার প্রয়োজন।তাই আমি আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছি।কিন্তু গবেষণা নিরন্তর চালিয়ে যাচ্ছি।কোন ইলেকট্রনিক্স সংস্থা বা অন্য কেউ তার আবিষ্কারের পেছনে সহযোগিতা করলে ভবিষ্যতে তিনি আরো বড় বিমান আকাশে উড়াতে সক্ষম হবেন বলে জানান।তবে সম্প্রতি ৮০০ গ্রাম ওজনের বিমানটি বানাতে ১২ থেকে ১৪ হাজারের অধিক খরচ হয়েছে এবং এরকম ক্ষুদ্র বিমান তৈরী করতে ৭দিন সময় লাগবে বলে তিনি জানান।ইতিমধ্যে তার ক্ষুদ্র বিমানটি আবিষ্কার করে উড়ানোর পর এলাকার জনসাধারণের মাঝে কৌতূহলের সূষ্টি করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ আসির বাঁশখালী আলাওল সরকারি কলেজের একাদশ প্রথম বর্ষের ছাত্র।পুঁইছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এম.এ কাশেমের খালাতো ভাই।
আসিরের তৈরী বিমান আকাশে উড়ার ভিডিও..

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ