বিএন ডেস্কঃ
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি–বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ
জয় বলেছেন, স্বাধীন মতপ্রকাশ বন্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা (আইসিটি) আইন করা
হয়নি। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তারক্ষাসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি
ছড়ানো এবং জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ করতেই এ আইন করা হয়েছে।
রোববার
দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দুই দিনব্যাপী বিজনেস
প্রসেসিং আউটসোর্সিং (বিপিও) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির
বক্তব্যে সজীব ওয়াজেদ জয় এসব কথা বলেন। তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক আউটসোর্সিং
নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে সরকারের তথ্য ও
যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল
সেন্ডার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য)।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন,
‘স্বাধীন মতপ্রকাশ করা একজন মানুষের নাগরিক অধিকার। তবে বিভ্রান্তিকর কোনো
খবর বা গুজব দ্বারা যেকোনো ব্যক্তি, বিশেষত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আক্রান্ত
হতে পারে। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর খবর বা বক্তব্য আমরা প্রকাশ করতে পারি না।
এটি স্বাধীন মত নয়, ঘৃণা ছড়াতেই করা হয়ে থাকে। এ ধরনের বিদ্বেষ ছড়ানো
বন্ধ হওয়া উচিত। যারা এটি করছে, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি দ্রুত সংসদে পাস করার
আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশকে বিশ্বের অন্যতম আইটি হাব উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যম ‘ফেসবুক’কে কোনো খারাপ কাজে ব্যবহার না করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ফেসবুকে অনেক সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়। এর জন্য আমরা
ফেসবুক বন্ধ করে দিতে পারি না। ইন্টারনেটে বাংলাদেশ থেকে যেন ক্ষতিকর
কনটেন্ট না দেখা যায়, সে জন্য প্রয়োজনীয় টুলস উদ্ভাবন ও ব্যবস্থা নিতে
সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তিনি অনুরোধ জানান । তরুণদের চাকরির জন্য
অপেক্ষায় না থেকে আইটি খাতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রীর এই
উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) প্রতিবছর মাত্র
তিন থেকে চার হাজার তরুণ-তরুণীকে নিয়োগ দেয়। এর বাইরে বিপুল
চাকরিপ্রার্থীরা থেকে যাচ্ছে। আমি তাদের বলব, আপনাদের চাকরির জন্য আর
সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থানের
অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রশিক্ষণ নিন এবং ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে
আইটি সেক্টরে নিজে কর্মসংস্থান করে নিন।’
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আমি এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের সিইওকে (প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা) খুঁজে পেয়েছি, যাঁরা জানেন না কীভাবে ই-মেইল ব্যবহার করতে হয়।
তাঁরা ই-মেইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাঁদের সহকারীর সাহায্য নিয়ে থাকেন। আমি
চাই, দেশের তরুণেরা, শিশুরা আগে থেকেই জানবে কীভাবে কম্পিউটার ব্যবহার করতে
হয়। তারা কম্পিউটারের ভাষা বুঝবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০০৮ সালে যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা
ছিল ২৪ লাখ, বর্তমানে সেই সংখ্যা ৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। কেবল গ্রাহকের
সংখ্যা বাড়ানোই নয়, ব্যবহারকারীদের জন্য ইন্টারনেট যেন নিরাপদ হয়, সে
জন্যও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০০৫ সালে যে ব্যান্ডউইডথের দাম ছিল ৭৫ হাজার
টাকা, সরকার এখন তা এক হাজার টাকার নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। তিনি
জানান, তথ্যপ্রযুক্তির প্রশিক্ষণ প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে পৌঁছে দিতে
প্রথমবারের মতো শিশু প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।
এবার সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘সৃজনশীল অর্থনীতি’। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও
তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক,
টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির
চেয়ারম্যান ইমরান আহমেদ,তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ
আহ্মেদ, তথ্যপ্রযুক্তিসচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী বক্তব্য দেন।
0 মন্তব্যসমূহ