বিএন ডেস্কঃ
৯৯৯-এ ফোন করে স্থানীয় এক ব্যক্তি সরকারি একটি গাছ পুরোপুরি কেটে ফেলা
থেকে বাঁচিয়েছেন। মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের জায়গা অবৈধ দখলে
নিয়ে প্রভাবশালী একটি মহল একটি কড়ইগাছ কেটে ফেলছে, এমন দৃশ্য দেখে স্থানীয়
এক বাসিন্দা সরকারের টোল ফ্রি ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে তথ্য দেন। এরপর পুলিশের
সহযোগিতায় রক্ষা পেল সওজের গাছটি। আজ শনিবার সকালে মাদারীপুর শহরের ডিসির
ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মাদারীপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবু নাঈম প্রথম আলোকে
বলেন, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে শ্রমিকদের সরকারি
গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একটি মহল গাছটি কাটছিল বলে অভিযোগ করেন
ওই বাসিন্দা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এর
আগেও ওখানে গাছ কাটা দেখে সওজসহ সংশ্লিষ্ট মহলকে অবহিত করি। কিন্তু তারা
কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এরপর প্রথম আলোয় একটি সংবাদ প্রকাশের পর বেশ কিছুদিন
গাছ কাটা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। হঠাৎ আজ (শনিবার) সকালে দেখি আবার ওই
প্রভাবশালী মহলটি বড় একটি কড়ইগাছ কাটছে। পরিবেশের ক্ষতির কথা বিবেচনা করে
আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করি।’ তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে গাছটির বড় দুটি
কাণ্ড কেটে ফেলা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী
(এসও) আমিরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গাছ কাটার বিষয়টি
নিয়ে তাদের একাধিক বার নিষেধ করেছি। এরপর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও
করেছি। আমরা তো ওদের সঙ্গে এখন মারামারি করতে পারব না। পুলিশের কাছে অভিযোগ
জানিয়েছি। এখন যা করার পুলিশ করবে।’
তবে মাদারীপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবু নাঈম বলেন, গাছ
কাটার বিষয়ে সওজের পক্ষ থেকে পুলিশকে কিছু জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে আইন
অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ রয়েছে, মাদারীপুর শহরের সওজ বিভাগের জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে
শহীদ মহসীন স্মৃতি সংঘ নামে একটি ক্লাবঘর। ওই ক্লাবঘরের পরিধি আরও বাড়াতে
এখন কাটা হচ্ছে একটি বড় কড়ইগাছ। এর নেপথ্যে রয়েছেন সংঘের সভাপতি সদর উপজেলা
পরিষদের চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের
সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের চাচাতো ভাই। গত ৩১ মার্চ
শনিবার এ নিয়ে প্রথম আলোর দক্ষিণ সংস্করণে ‘মাদারীপুরে সওজের জায়গায়
ক্লাবঘর, কাটা হচ্ছে গাছ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এদিকে এ বিষয়ে আজ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে
প্রথম আলোকে তিনি বলেন, আজ নতুন করে গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
এর আগে ক্লাবের পরিধি বাড়ানোর জন্য গাছ কাটার যে অভিযোগ করা হয়েছিল, সেটাও
সত্য নয়। সওজের এই গাছটি নিজেদের দাবি করে স্থানীয় বিএনপির দুই মাঝারি
সারির নেতার মধ্য দ্বন্দ্ব রয়েছে। বরং ওই সময় ক্লাবের এক জ্যেষ্ঠ সদস্যের
হস্তক্ষেপে ওই গাছ কাটা বন্ধ হয়।
0 মন্তব্যসমূহ