ইয়াবা গডফাদারা টেকনাফ সীমান্ত পার হওয়ার গুঞ্জন : চুনোপুঁটিরা এলাকায়


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশজুড়ে ইয়াবাসহ মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকলেও কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে অনেকটা ধীর গতীতে চলছে এ অভিযান। ওই এলাকার কাউন্সিলর একরামুল হক নিহতের ঘটনায় ব্যপকভাবে পক্ষ বিপক্ষ নানা প্রশ্নের গোরপার খাচ্ছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লাপাত্তা হয়েগেছে বড় বড় ইয়াবা ব্যপারীরা। এর পর থেকে  এ পর্যন্ত বড় কোনো ইয়াবা কারবারি আটকের খবরও পাওয়া যায়নি। সীমান্তের ইয়াবা গডফাদাররা সীমান্ত পার হয়ে মিয়ানমারে আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে খবর পাওয়া যাচ্ছে কেউ কেউ ভারতেও আশ্রয় নিয়েছে। অথচ টেকনাফ বাংলাদেশের ‘ইয়াবার গেটওয়ে’ হিসেবে পরিচিত। এখানে থেকে ইয়াবা গডফাদার গ্রেপ্তার না হওয়ায় অনেই নানা প্রশ্ন তুলছেন অভিযানকে ঘিরে। মিয়ানমারের প্রায় ৪০টি ইয়াবা কারখানায় উৎপাদিত ইয়াবার চালান আসে একমাত্র টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে। এপারের ইয়াবাকারবারীরা বাঁচার জন্য ওপারে চলে গেছে বিভিন্ন সুত্রে জানা যাচ্ছে।  কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল  বলেন, ‘আমরা কেউ বসে নেই। ইয়াবা কারবারিদের ধরার জন্য সাঁড়াশি অভিযান অব্যহত থাকবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সব শেষ তালিকাভুক্ত ইয়াবা গডফাদার হাজী সাইফুল করিম, এমপি বদির ভাই আব্দু শুক্কুর, জফর চেয়রম্যানের পুত্র দিলদার মিয়া,শাহাজান মিয়া, টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মৌলভি মুজিবুর রহমান, বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৌলভি আজিজ আহমদ, টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবদুল্লাহসহ অনেকেই দেশ ছেড়ে পলিয়েছে, কিউ মিয়ানমার,কেউ আবার ভারত ও সৌদি আরব চলেগেছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্ত শহর এই চুনোপুঁটিরা দিনের বেলায় এখনো এলাকই ঘোরা করতে দেখা যায়। বিশেষ করে খবর পাওয়াগেছে, সাবরাং সিকদার পাড়া এলাকার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট পুলিশের তালিকা ভুক্ত ইয়াবা ব্যবসী সাবেক মেম্বার ছব্বির আহাম্মদ, হারুন রশিদ,আমির হোসেন, আব্দুল গফুর, আহম্মদ হোসেন কালু, রহিম আলী, আব্দু রহিম,মোক্তার হোসেন, শাহজানরা এখনও এলাকাই এখনও দিব্যি ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। তারা অনেকর বিরুদ্ধে ইয়াবার মামলা রয়েছে।
এমনকি ইয়াবা কারবারি হিসেবে তালিকাভুক্ত টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের নুরুল হুদা মেম্বার রাতে লেদা রোহিঙ্গা শিবিরে অবস্থান করে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে দেড় ডজনের মতো ইয়াবার মামলা। এ প্রসঙ্গে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শামসুল হক বাবুল গতকাল রাতে মোবাইলে বলে, ‘আমি বর্তমানে কক্সবাজার শহরে অবস্থান করছি। এলাকা ছেড়ে কোথাও যাইনি। আমার বিরুদ্ধে ইয়াবা কারবারের যে অভিযোগ তা মিথ্যা।’ অন্যদিকে মেম্বার নুরুল হুদার সঙ্গে মোবাইলে বারবার ফোন করে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি মোবাইল ধরেননি। ওই ইউনিয়নের ইয়াবা কারবারি মেম্বার জামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকেও পাওয়া যায়নি। একই ইউনিয়নের মেম্বার মোহাম্মদ আলী জানায়, জামাল হোসেন, বাবুল মেম্বার ও নুরুল হুদা মেম্বারকে মাঝে মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদে বসতে দেখা যায়।
টেকনাফ থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া গতকাল জানান, ‘সীমান্তের ইয়াবা কারবারিদের কোথাও চোখে পড়ছে না। তারা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে বলে জেনেছি। তালিকাভুক্ত কারবারিদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে ইয়াবা কারবারিদের ঘনিষ্ঠজনরা জানান, তালিকাভুক্ত কারবারিরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তারা ঘরে অনুপস্থিত থাকলেও সাবই কিন্তু এলাকা ছেড়ে যায়নি। সীমান্তের লোকজন জানান, ইয়াবা গডফাদাররা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য আপাতত গা ঢাকা দিলেও চুনোপুঁটিরা ক্রসফায়ারের ভয়ে দুবাই এবং সৌদি আরব পাড়ি দিতে বর্তমানে অবস্থান করছে রাজধানী ঢাকায়ও। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৬০ জন গডফাদারসহ ১১৫১ জন মাদক কারবারির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফ সীমান্তেই রয়েছে ৯ শতাধিক ইয়াবা কারবারি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ