এমন কর্ম করব বিশ্ব আমাকে স্মরণ করবে : হাসান সরকার

বিএন ডেস্কঃ
আজ রবিবার দিবাগত রাত বারোটায় শেষ হচ্ছে সব ধরণের প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থীদের প্রচার প্রচারনাও শেষ পর্যায়ে। নির্বাচনে বড় দুইদল আওয়ামী লীগ ও বিএপির মাঝেই মুলত প্রতিদ্বন্দিতা হবে। অপর দলের প্রার্থীরাও নির্বাচনের মাঠে তাদের গ্রহণ যোগ্যতা যাচাই করে দেখতে চায়। এদিকে খুনলা সিটি নির্বাচন, বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারসহ সম্প্রতিক সময়ের নানা ঘটনায় ভোটারদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ভোট গ্রহন প্রক্রিয়া দেখে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী, ভোটার ও সমর্থকরা
উজ্জীবিত।
অপর দিকে বিএনপি ও অন্যান্য দলের প্রার্থী, ভোটার ও সমর্থকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ ও উৎকন্ঠা তৈরী হয়েছে। নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়াকে বিশ্বাসযোগ্য করতে এবং ভোটারদের আস্থায় আনতে কমিশনকে বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কিছু পদক্ষেপ নেয়া জরুরী বলে সংশ্লিষ্টদের মত।
এদিকে নির্বাচনের সকল সরঞ্জামাদি জেলা নির্বাচন কমিশন এসে পৌছেছে। সেখান থেকে আগামী ২৫ জুন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী মো. হাসান উদ্দিন সরকার বলেছেন, আমাকে প্রশাসনিকভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। মামলা নেই তারপরও আমার লোকজনকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, হয়রানী করা হচ্ছে। আমি এ ব্যাপারে শনিবার সকালে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
আমি এখনও আবেদন করব, আমি এখনও নিবেদন করব, আপনারা সেই শান্তির পরিবেশ রক্ষা করুন। আর তা যদি নয় হয় আমি পূর্বে একটা ঘোষণা দিয়েছি, আমি এমন একটা কর্ম কর যে তা সমাজের ক্ষতি হবেনা, কিন্তু চিরদিন যেন এ বিশ্ব স্মরণ করে নির্বাচনের জন্য হাসান উদ্দিন সরকার ওই কর্ম করেছে।
শনিবার বিকেলে নগরীর পূবাইল এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য প্রদানকালে হাসান উদ্দিন সরকার ওইসব কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, ড্যাব নেতা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। এছাড়া অন্যান্য এলাকায় তার পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়,
হাসান সরকার বলেন, আমার নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে অভিযানের নামে পুলিশ গিয়ে হয়রানী করছে। গেল রাতে গাছা এলাকা থেকে কাউছার নামের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা নগরীরর পোড়াবাড়ি এলাকা থেকে আমার প্রচারণার দুইটি মাইক ছিনিয়ে গেছে।
তিনি বলেন আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা যেন কলহ না করি, বিরোধ না করি, আমার যেন কারো সর্বনাশ করি। আমরা যেন শান্তির পথে চলি। রাজনীতি মানুষের কল্যানের জন্য। রাজনীতি যদি মানুষের মধ্যে সমাজের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়, মুরুব্বীদের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়, সেটা রাজনীতি নয়।
হাসান উদ্দিন সরকারের গণসংযোগ
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শনিবার ২০ দলীয় জোট প্রার্থীর পক্ষে বিএনপিসহ জোট নেতারা নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডোর টু ডোর লিফলেট পৌঁছে দিয়ে ভোটারদের কাছে তাদের প্রার্থী আলহ্জ¦ হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও মিডিয়া সেলের প্রধান ডা. মাজহারুল আলম জানান, ধানের শীষের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ হাসান উদ্দিন সরকার আজ সকাল সাড়ে ৯টায় মহানগরের হায়দরাবাদ থেকে প্রচার কাজ শুরু করেন, পরে মাজুখান বাজার, নন্দীবাড়ি, বিন্দান, পূবাইল, ভাদুন, ইছালী ও কলের বাজার এলাকায় প্রচার কাজ করেন। এসময় তাঁর সাথে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক একেএম ফজলুল হক মিলন, সদস্য সচিব কেন্দ্রীয় নেতা কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, কাপাসিয়া থানা বিএনপির সেক্রেটারী সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ গাজীপুর জেলার সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এদিকে নগরীর ৯নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ। নগরীর ৪০ ও ৪২নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও পেশাজীবী নেতা ডা, এজেড এম জাহিদ হোসেন। সাথে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বেগম জাহানারা, সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অর্পণা রায়, জিয়া ব্রিগেড সভাপতি আবুল হোসেন, পেশাজীবী নেতা ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমীন আকন্দ, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশিদ, স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল বাতেন, সোলায়মান, হাজী রফিক প্রমুখ। নগরীর ৫নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফে. ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। ২৩ নং ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। নগরীর ৩৯নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক প্রফে. ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। ২৭ নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান। ২৮ ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, গাজীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি মীর হালিমুজ্জামান ননী। জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কাজী মাহবুবুল হক গোলাপ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মেহেদী হাসান এলিস, এম এইচ রহমান হাফিজ, হাসিবুর রহমান মুন্না, যুবনেতা জাহিদ, কাউসার মোল্লা, রুবেল হোসেন, ছাত্র নেতা সোহেল রানা, মারজুক আহমেদ আল আমিন, হাসান মাহমুদ প্রমুখ। ২নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন সামসুল আলম তোফা। ৬নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শিল্পী বেবী নাজনিন। ৭নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট সামসুজ্জামান দুদু। ৩নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পদাক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। ৫২,৫৩ নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটি সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান। বিএনপি'র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের নেতৃত্বে গাজীপুরের ১৮নং ওয়ার্ডে গনসংযোগ করেন এ সময় ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, নির্বাজী সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব,ঢাকা উত্তর জাসাসের সাবেক আহ্বায়ক ডাঃ আরিফুর রহমান মোল্লা,স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এম.এ.কালাম,ড,নিজাম উদ্দীন নিজাম। ২৬ নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রফিক শিকদার। ২নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, ব্যাংকিং ও রাজস্ব বিষয়ক সম্পাদক লায়ন হারুনুর রশিদ। ১১ নং ওয়ার্ডে প্রচার করেন কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান। সাথে আছেন সালা উদ্দিন শিশির, এনামুল হক বিপ্লব। ১৭ নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ হেলালুজ্জামান তালুকদার। নগরীর ১নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির পল্লী উন্নয়ন সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, তাঁর সাথে ছিলেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দ দাস অপু, নির্বাহী সদস্য দেবাষীশ রায় মধু। ৩২নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন সেলিম রেজা হাবিব, ছাত্রদলের আনিছুর রহমান, তালুকদার খোকন প্রমুখ। নগরীর ৩১ নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন এর উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ। ৩৭ নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন কর্ণেল লতিফ, ৩৮ নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন। ৩১নং ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স ধানের শীষের পক্ষে ভোট চান।
ধানের শীষের প্রচারণায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ
শনিবার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৬,১৭ও ১৮নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের মানুষের কাছে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাসান উদ্দিন সরকারের ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে অংশ নেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি আহমেদ সাইমুম নির্বাচনী প্রচারণা চালান। তিনি মিথ্যা মামলায় বন্দী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে এবং উন্নয়ন সমৃদ্ধ যানজট,মাদক,সন্ত্রাস ও দুষনমুক্ত শিক্ষাবান্ধ বাসোপযোগি মহানগর গড়তে ২০দলীয় জোট মনোনীত বিএনপির প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষাবন্ধু হাসান উদ্দিন সরকারকে ধানের শীষে ভোট দেয়ার উদাত্ত আহবান জানান।
নির্বাচনী এলাকার ১৬,১৭ ও ১৮নং ওয়ার্ডের ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট প্রার্থণায় অন্যান্যের মধ্যে শাহীনুর সাগর,গোলাম ফারুক,হাসান আল আরিফ,জেসমিন সুলতানা জুঁই,ওয়াসিম মুক্ত,নাহিয়ান মারুফ সহ ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ।। নেতৃবৃন্দ শাসক দলীয় প্রার্থীর লোকজনের অব্যাহত হুমকি ধামকি ও প্রশাসনের একচোখা দৈত্যানুরূপ আচরণের বিষয়ে ভোটারদেরকে সকল বাধা বিপত্তি ডিঙিয়ে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যেয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের উদাত্ত আহবান জানান।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শনিবার দুপুরে নগরীর কাশিমপুর এলাকায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে গণসংযোগে গিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, এখন একটা ট্রেডিশন হয়ে গেছে যে নির্বাচনের কথা বলে আগের দিন রাতে পুলিশ প্রশাসন দিয়ে ব্যালট কেটে বাক্সে ঢুকনো। যে-টা খুলনায় হয়েছে। খুলনায় যে স্টাইলে তারা নির্বাচন করে তাদের মেয়র নির্বাচিত করেছে। আমার মনে হয় গাজীপুরের জনগণ এটা মেনে নেবে না। কারণ এ এলাকার মানুষের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সবার জানা আছে। স্বাধীনতার যুদ্ধে এ এলাকার মানুষ সবার আগে ১৯মার্চ লাঠি-সোটা নিয়ে তৎকালীন পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। আমি মনে করি এ গাজীপুরে যদি খুলনার স্টাইলে ভোট লুট-পাট ও ভোট ডাকাতির ষড়যন্ত্র করা হয়, আমি বিশ্বাস করি গাজীপুরের মানুষ স্বাধীনতাযুদ্ধে যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে, ঠিক একইভাবে গাজীপুরের মানুষ এ নির্বাচন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাস্তায় ঝাপিয়ে পড়বে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমাদের শেষ সাক্ষাতে যখন গিয়েছিলাম তখন নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, আপনাদের জন্য গাজীপুর হচ্ছে শেষ সুযোগ। গাজীপুরের নির্বাচনে আপনারা যদি খুলনার নির্বাচনের ঘটনার পুর্নরাবৃতি করেন তাহলে আপনাদের অধীনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কোন নির্বাচন তো দূরের কথা এমনকি মাদ্রাসায় -স্কুল কমিটির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।
পুলিশি হয়রানি ও গ্রেফতারের প্রতিবাদ
বিভিন্ন ওয়ার্ডে পুলিশি হয়রানি ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বিকালে নগরীর ১৩ নং ওয়ার্ডে গাজীপুরের গোয়েন্দা পুলিশ বিএনপির কর্মী কোরবান আলী ও জাহিদকে গ্রেপ্তার করে। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সম্পাদক মনির হোসেনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে হয়রানি করেছে। ছাত্রনেতা আতাউর ও মুকুল এর বাড়িতেও পুলিশ হয়রানি করেছে।

আওয়ামী লীগ
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, গাজীপুরে টঙ্গী-চান্দনা চৌরাস্তা হাইওয়েতে মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে বসে থাকেন। আমি সেই যানজট থেকে আপনাদেরকে মুক্ত করে দেব। আমি নির্বাচিত হওয়ার ৯০দিনের মধ্যে ওই পথের ৫০পারসেন্ট যানজট মুক্ত করে দেব। শনিবার সকালে তিনি নগরীর টঙ্গীর খৈরতুল এলাকার এক পথসভায় ওই কথা বলেন। এসময় গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কাজী ইলিয়াস, গাজীপুর মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, গাজীপুর সিটিতে আগে যিনি মেয়র ছিলেন। তাকে এবার বিএনপি মনোনয়ন দেয়নি। যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, সেই হাসান উদ্দিন সরকার টঙ্গী পৌরসভার দুইবার চেয়ারম্যান ছিলেন, গাজীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন, দুইবার পার্লামেন্ট মেম্বার ছিলেন। কিন্তু আমাদের এই এলাকার মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। যার বয়স আজ ৭৪ বছর হয়ে গেছে, যিনি চল্লিশ বছরে কিছু করেনি, তিনি দুই এক বছরে কিছু করবেন না। ’গাজীপুরে লক্ষ লক্ষ মানুষকে কষ্ট না দিয়ে আমি তাকে পরামর্শ দিয়েছি আপনি হসপিটালে ভর্তি হন’ আপনি একা চলতে পারেন না। আপনি এখন চারজনের উপর ভর করে চলেন। সিটি করপোরেশনের যারা আপনার উপর ভর করে চলবে তাদের ভর আপনি কিভাবে বহন করবেন ?
গণসংযোগে জাঙ্গীর আলম
আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম শনিবার সকালে নিজ বাসভবনে ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন। পরে বেলা ১১ টায় খরতৈলে গণসংযোগ ও পথসভার মাধ্যমে দিনের কর্মসুচি শুরু করেন। সাতাইশ স্কুলের সামনে, সাতাইশ চৌরাস্তা, ৫২ নম্বর মুদাফা, ৫৩ নম্বরে দেওড়া ফকির মার্কেট, ৫৫ নম্বর মিলগেট এলাকায় পথসভায় ভোট প্রার্থনা করেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী মোঃ আতিকুল ইসলাম পথসভায় বক্তব্য রাখেন এবং গণসংযোগে করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, মোঃ জালাল উদ্দিন মাষ্টার, কাজী ইলিয়াস আহমেদ, মোস্তফা হুমায়ুন হিমু, মোঃ সাইফুল ইসলাম, আব্দুল কাইয়ুম, নীলিমা আক্তার লিলি, মোঃ নুরুল ইসলাম নুরু, মোঃ আলী মিয়া, মোঃ সোলেমান হায়দার, মোঃ সেলিম মিয়া, এম এম হেলাল উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, আব্দুল আলীম, মোঃ কামাল হোসেন, মাসুম বিল্লাহ বিপ্লব, কাজী মঞ্জুর, রেজাউল করিম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উপ-নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী মোঃ আতিকুল ইসলাম আওয়ামীলীগ মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে শনিবার সকালে সাতাইশ স্কুলের সামনে, সাতাইশ চৌরাস্তা, ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের মুদাফা, ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের দেওড়া ফকির মার্কেট, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিলগেট এলাকায় পথসভায় ভোট প্রার্থনা করেন ও পথসভায় বক্তব্য রাখেন।
অপরদিকে বেলা ৩ টায় নগরীর টঙ্গী নওয়াগাও এলাকায় গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জাহিদ আহসান রাসেলের বাসভবনে ঈদ পরবর্তী পারিবারিক দাওয়াতে যোগ দেন স্থানীয় মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া সেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম রিয়াজুল কবীর কাওছার, সাবেক এমপি কাজী মোজাম্মেল হক, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র প্রার্থী মোঃ আতিকুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মোঃ ইকবাল হোসেন সবুজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাং সম্পাদক কাজী ইলিয়াস আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা দাওয়াত পরবর্তী এক বৈঠকশেষে সিটি নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এক ব্রিফিং দেয়া হয়। এসময় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আজমত ভাই আমাদের অভিভাবক। তার কাছ থেকেই রাজনীতি শিখেছি। সিটি নির্বাচনে তার পরামর্শ এবং নির্দেশেই সকল নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। আজকে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মেও মাধ্যমে গাজীপুরে নৌকার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আপনাদের মিডিয়ার মাধ্যমে আগামী ২৬ জুন নির্বাচনে নৌকা মার্কায় সকলের দোয়া, সহযোগীতা ও ভোট চাই।’
ব্রিফিংকালে মোঃ আজমত উল্লাহ খান বলেন, ‘নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগের সকল নেতৃবৃন্দ নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের প্রার্থী ৫৭ ওয়ার্ডে বার বার ভোটারের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন। আমাদের কর্মীরা কাজ অব্যাহত রেখেছেন। আগামী ২৬ জুন নির্বাচনে নৌকা মার্কায় জাহাঙ্গীর আলমের বিজয় সুনিশ্চিত করে আমরা ঘরে ফিরবো। গাজীপুর বাসী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নৌকার বিজয় উপহার দিতে প্রস্তুত।’

গাজীপুরে নির্বাচনী সরঞ্জাম কেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মালামাল বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়। শনিবার সকাল থেকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে মালামাল গুছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামের দ্বিতীয় তলায় তারা নির্বাচনী সরঞ্জামগুলো পৃথক ব্যাগে করে প্রস্তুত করছেন।
গাজীপুর সিটি নির্বাচন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল জানান, রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জামসমূহ এসে পৌঁছেছে। সিটি কর্পোরেশনের ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রে এ সব নির্বাচনী সরঞ্জাম সোমবার থেকে পাঠানো শুরু হবে। ভোট কেন্দ্রসমূহের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা এসব সরঞ্জাম কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, নির্বাচনী সরঞ্জামের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্তৃক সরবরাহ করা হয়েছে সিলসহ স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা, অমোচনীয় কালির কলম, রাবারের অফিসিয়াল সিল (কোড বা গোপন চিহ্ন সম্বলিত), রাবারের মার্কিং সিল (ভোটার কর্তৃক ব্যালট পেপার চিহ্নিতের জন্য), গালা, সিল গালা করার জন্য পিতলের সিল (ব্রাস সিল), স্ট্যাম্প প্যাড, চটের বা গানি ব্যাগ (ভোট কেন্দ্রের নির্বাচনী সরঞ্জাম বহনের জন্য) ও চটের ছোট থলি বা হোসিয়ান ব্যাগ (অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, পিতলের সিল, স্ট্যাম্প প্যাড, অমোচনীয় কালির কলম ইত্যাদি ভর্তি করে রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট আলাদা ভাবে ফেরত প্রদানের জন্য)। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে বল পয়েন্ট কলম, সাদা কাগজ, কার্বন কাগজ, ছুরি, সুঁই (বড় সাইজ), সুতা, মোমবাতি, দিয়াশলাই, আলপিন, গামপট, সুপার গøু, লোহা/প্লাস্টিক/ বাঁশের পাত এবং প্রিন্ট করা দেয়ালপত্র যাতে প্রবেশ, বাহির, ভোটকক্ষ নং, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট ইত্যাদি লেখা থাকবে।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব সরঞ্জাম ৪২৫টি কেন্দ্রের জন্য পৃথকভাবে সাজাচ্ছেন।
টঙ্গীর ভোট অন্যতম ফ্যাক্টর
মোট ৫৭টি ওয়ার্ড নিয়ে সিটি করপোরেশন গঠিত। ভোটারের সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। ভোটার হিসাবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে মোট আটটি বিশেষ অঞ্চলে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে আছে কাশিমপুর, কোনাবাড়ী, বাসন, কাউলতিয়া, গাজীপুর পৌর এলাকা, গাছা, পুবাইল ও টঙ্গী। তবে আটটি বিশেষ অঞ্চলের মধ্যে টঙ্গীতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৯৫২। অর্থাৎ মোট ভোটারের ৩২ শতাংশ টঙ্গীর। বাকি সাত অঞ্চলের কোনোটিরই ভোটার দেড় লাখও পার হয় না। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোটার গাছায় ১ লাখ ৪৭ হাজার এবং তৃতীয় কাশিমপুরে ১ লাখ ১৬ হাজার জন। সবচেয়ে কম ভোটার পুবাইলে ৬০ হাজার। তাই এ হিসেবে টঙ্গীর ভোট একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে দেখছে বড় দু’দলই।
সূত্রঃ ডি/এন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ