বিএন ডেস্কঃ
আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল
ইসলাম ‘খুবই অসুস্থ’ বলে কয়েকটি গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে সেটিকে নিছক গুজব
বলে আখ্যায়িত করেছেন সৈয়দ আশরাফের পরিবারের ঘনিষ্ঠরা। তারা জানান, সৈয়দ
আশরাফ গুরুতর অসুস্থ নন। তিনি ভালো আছেন। মন্ত্রণালয়ের সব ফাইল বাসায় সই
করছেন। তবে, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকেই টেনশনটা একটু বেশি করছেন। কিন্তু
খবরে যেভাবে এসেছে তেমন কিছুই হয়নি।
আশরাফের পরিবারের ঘনিষ্ঠ একজন জানান, আশরাফ কিছু দিন আগে থাইল্যান্ডে
রুটিন চেক-আপ করিয়েছেন এবং কিছু দিনের মধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন
চেক-আপের জন্য। এক বোন এখন আশরাফের কাছেই আছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সৈয়দ আশরাফের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সাজ্জাদ আলম
শাহীন নয়া দিগন্তকে বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ভালো আছেন। নিয়মিত কাজকর্ম
করছেন। বাসায় বসে মন্ত্রণালয়ের ফাইল দেখছেন।
আশরাফের পারিবারিক ঘনিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম শুধু
আজকে নয়, যখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ছিলেন তখনও বাসায় বসে শত শত ফাইলে সই
করেন। যারা আশরাফুল ইসলামের গুরুতর অসুস্থতার কথা বলছেন তারা সঠিক কথা
বলছেন না। তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ আছে।
সৈয়দ আশরাফ সম্পর্কিত সংবাদটি কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের অংশ বলে দাবিও করেন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন।
সৈয়দ আশরাফ সম্পর্কিত সংবাদটি কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের অংশ বলে দাবিও করেন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন।
সূত্র আরো জানায়, রোববারও সৈয়দ আশরাফ আটটি ফাইল স্বাক্ষর করেছেন।
প্রতিদিনই মন্ত্রণালয়ের ফাইল স্বাক্ষর করছেন। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটেন।
ময়মনসিংহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিনের বরাত দিয়ে যে খবরটি
প্রকাশিত হয়েছে সেটির ব্যাপারে তারা বলেন, নাজিম উদ্দিন আশরাফের সঙ্গে দেখা
করতে এলে আশরাফ তাকে ভাই বলে সম্বোধন করে ভালো-মন্দ জিজ্ঞাসা করেন। পরে
তিনি তার এমপি হবার জন্য আশরাফের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
অবশ্য সৈয়দ আশরাফের এক সময়ের রাজনৈতিক নেতা নাজিম উদ্দিন রোববার
গণমাধ্যমকে বলেন, সৈয়দ আশরাফের শারীরিক অবস্থার কথা আমি যেভাবে বলেছি
গণমাধ্যমে তা অতি রঞ্জিত করা হয়েছে। তারা আশরাফকে একেবারে কঠিন রোগী
বানিয়ে ফেলেছে।
তিনি আরো বলেন, আমি বলেছি আশরাফের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে টেনশনটা
একটু বেশি করছেন। বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে শরীরটা মাঝে মধ্যে একটু খারাপ হয়ে
যায়। ওষুধ খেলে ঠিক হয়। কিন্তু গণমাধ্যমে আমার বরাত দিয়ে যেভাবে লিখেছে তা
মোটেও সঠিক না।
উল্লেখ্য, নাজিম উদ্দিন যখন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, সেই কমিটিরই সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সৈয়দ আশরাফ।
উল্লেখ্য, নাজিম উদ্দিন যখন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, সেই কমিটিরই সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সৈয়দ আশরাফ।
গত বছরের অক্টোবরে লন্ডনের একটি হাসপাতালে আশরাফের স্ত্রী শিলা ইসলামের
মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন সৈয়দ আশরাফ। এরপর থেকে তিনি কিছুটা একাকী সময় কাটান
এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে কম সময় দিতে থাকেন।
আশরাফের একমাত্র কন্যা রিমি ইসলাম লন্ডনে বসবাস করেন এবং এইচএসবিসি ব্যাংকে কর্মরত।
আশরাফের একমাত্র কন্যা রিমি ইসলাম লন্ডনে বসবাস করেন এবং এইচএসবিসি ব্যাংকে কর্মরত।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অসুস্থতার বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মমিনুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘তিনি
(সৈয়দ আশরাফ) তো অফিসের কাজকর্ম রেগুলার করছেন। এই পর্যন্ত জনপ্রশাসন
মন্ত্রণালয়ের কোনো ফাইল পড়ে নেই। অসুখ-বিসুখ তো আমাদের হতেই পারে,
অসুখ-বিসুখ হলেই যে সব অচল হয়ে যাবে বিষয়টি তা নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তো তিনি এমনিতেই মানসিকভাবে
দুর্বল। ফুল টাইম উনি এখন বাসায় থাকেন। ওনার কাজকর্ম উনি ঠিকই চালিয়ে
যাচ্ছেন। তার যদি শারীরিক বড় ধরনের সমস্যা হয় তাহলে তিনি ফাইল সই করছেন
কিভাবে?
উল্লেখ্য ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দলের
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন সৈয়দ আশরাফ। পরে ২০০৯ সালে ও
২০১২ সালে সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি।
২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান সৈয়দ আশরাফ।
২০১৬ সালের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে আশরাফ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।
২০১৬ সালের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে আশরাফ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।
0 মন্তব্যসমূহ