বি,এন ডেস্কঃ
বঙ্গোপসাগর বাঁশখালীর লক্ষাধিক জেলেদের জীবন যাপনের অন্যতম ভরসাস্থল হলেও সেখানে জেলেরা প্রাকৃতিক মানুষসৃষ্ট দুর্যোগে বার বার নি:স্ব
ও হারিয়ে যাচ্ছে । ফলে যে সব জেলেরা অন্য কোন পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়
তাদের জীবনে অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে। জেলেরা যদি সাগর বিমুখ হয় তাহলে দেশের
প্রচুর মাছের চাহিদা কে যোগান দেবে তা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন ।
বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুরা জেলেদের উপর নানাভাবে হামলা অপহরণ ও খুনের শিকার
হওয়ার পরেও জীবনের তাগিদে বারবার ছুটে যেতে হয় বঙ্গোপসাগরে। কাঁচা মাছের
চেয়ে শুকানো মাছে অনেক বেশি দাম পাওয়া যায় বিধায় জেলেরা কাঁচা মাছের শুটকি
শুকানোতেই সময় দিয়ে থাকে। তবে এ কাজ করতে অনেক সময় প্রয়োজন হলেও বেশী
মুনাফার আশায় এই কাজ করতে বাধ্য হয় তারা। বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া, পুঁইছড়ি, নাপোড়া, শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ, মনকিচর, সরল, বাহারছড়া
ও খানখানাবাদের লক্ষাধিক জেলের জীবন জীবিকার অন্যতম স্থান হচ্ছে
বঙ্গোপসাগর। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের জরদস্যুদের তাণ্ডবের কাছে বার বার হার
মানতে হয় জেলেদের। একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি অপরদিকে মানুষ
সৃষ্ট দুর্যোগে প্রাণহানি থেকে শুরু করে সবকিছু ছিনিয়ে নেয় জেলেদের জীবন
থেকে। বঙ্গোপসাগর ভিত্তিক চিহ্নিত জলদস্যুরা জেলেদের কাছ থেকে আহরিত মাছ
ছিনিয়ে থেকে শুরু করে জেলেদের হত্যা করছে প্রতিনিয়ত।সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে
মাছ ধরতে গিয়ে বর্তমানে ২১ জেলে নিখোঁজ রয়েছে । প্রথমে এ সংখ্যা ২০ জন
হিসাবে থানায় ডায়েরি করলেও পরে জানা সেখানে বাঁশখালীর, চকরিয়া, কুতুবদিয়াসহ
২১জন জেলে এখনও নিখোঁজ রয়েছে। জেলে পরিবারগুলো বর্তমানে পরিবারের
উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারিয়ে চরম অনিশ্চতায় দিন পার করলেও কোন ধরনের
সুরাহা তারা পাচ্ছে না। বাঁশখালী বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবদু শুক্কুর
বলেন সাগর এখন জেলেদের জন্য নিরাপদ নয় । একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অপরদিকে
জলদস্যুদের তাণ্ডব সবমিলিয়ে দু:সহ
জীবন যাপন জেলেদের । বাঁশখালীর বেশ কয়েকটি ঘটনা বিশেষ করে ২০১১ সালে
মার্চে ১২ জন এবং নভেম্বরে ১৪ জন জেলেকে হত্যা করা হয় এবং ২০১৩ এর ২৫শে
মার্চ বাঁশখালীর ৩১ জেলেকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
তারপরেও থেমে নেই জীবনের তাগিদে জেলেদের মৎস্য আহরণ। বিগত দিনে বাঁশখালীর
বড় বড় খুনের ঘটনার পর বঙ্গোপসাগরে দায়িত্বরত প্রশাসনিক কর্মকর্তারা
বঙ্গোপসাগরকে জেলেদের জন্য নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবে তৈরী করার অঙ্গিকার
করলেও বাস্তবে দেখা যায় অন্য চিত্র। জেলেদের জীবনে বিভিন্ন সমস্যা নেমে
এলে অনেকক্ষেত্রে প্রশাসনিক জটিলতায় কোন ধরনের সহযোগিতা ও পাওয়া যায় না।ফলে
বার বার বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জীবন মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরতে জীবন যাপন
করতে বাধ্য হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরকে জেলেদের জন্য নিরাপদ করতে জেলেদের আকুতি
কিছুতেই সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌছেঁ না । বর্তমান ২১ জেলে নিখোঁজ এর ব্যাপারে
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন খবর পেয়ে কোষ্টগার্ড় ও নৌ–বাহিনীকে অবহিত করাসহ উপকূলীয় সকল উপজেলার সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে তাদের খবর পেতে।
\দৈনিক আজাদী
0 মন্তব্যসমূহ