বিএন ডেস্কঃ
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য জেলখানায় ডিভিশন চেয়ে হাইকার্টে
আবেদন করা হয়েছে। কাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে শুনানীর জন্য ধার্য্য করা হয়েছে।
মাওলানা সাঈদীর পক্ষে ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন গত রোববার বিচারপতি
সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপাতি মো: ইকবাল কবির এর হাইকোর্ট
বেঞ্চে রিট আবেদন দায়ের করেন।
সোমবার শুনানীর জন্য তালিকায় ছিল আবেদনটি। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের জন্য আবেদন করায় কাল শুনানীর জন্য ধার্য্য করেছেন আদালত।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে ইন্দুরকানী উপজেলা চেয়ারম্যান
মাসুদ সাঈদী নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমার পিতা ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর
গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে সাবেক একজন সংসদ সদস্য হিসেবে ঢাকা কেন্দ্রীয়
কারাগারে ডিভিশন-১ প্রাপ্ত বন্দী হিসেবে ছিলেন’।
‘২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আমার পিতার
ফাঁসির আদেশ ঘোষণা করলে তার ডিভিশন বাতিল হয় এবং কারাগারে ফাঁসির আসামীর
কনডেম সেলে অন্তরীন থাকেন’।
‘এরপর ২০১৩ সালে আমরা ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করি। ২০১৪
সালের ১৭ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আমার পিতার মৃত্যুদণ্ড বাতিল
করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের ফলে আমার পিতা জেল কোডের বিধান অনুযায়ী
ডিভিশন প্রাপ্তির অধিকারী হন’।
‘জেল কোডের ১৯২ পৃষ্ঠার ১৫ নং অধ্যায়ের ক্লাসিফিকেশন শিরোনামের অধীন ৬১৭
নং বিধি অনুযায়ী বিধি অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আমার পিতা ডিভিশন
পাওয়ার অধিকারী।
এসব বিষয় উল্লেখ করে আমরা জেল কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছি আমার পিতাকে ডিভিশন প্রদানের জন্য। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আজ প্রায় চার বছর হতে চলেছে কিন্তু আমার পিতাকে ডিভিশন দেয়া হয়নি’।
এসব বিষয় উল্লেখ করে আমরা জেল কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছি আমার পিতাকে ডিভিশন প্রদানের জন্য। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আজ প্রায় চার বছর হতে চলেছে কিন্তু আমার পিতাকে ডিভিশন দেয়া হয়নি’।
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘২০১৫ সালে স্বরষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রথম আবেদন করি।
কারা কর্তপক্ষের মতামত সমেত আমরা সর্বশেষ গত ৮ মার্চ স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ে আবার আবেদন করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার পিতাকে ডিভিশন না
দেয়ায় আমরা গত রোববার আদালতে রিট পিটিশন দায়ে করি নিরূপায় হয়ে’।
‘জেল কোডের বিধান অনুযায়ী আমার বৃদ্ধ অসুস্থ পিতা যাতে ডিভিশন পান
সেজন্য আমি আমার পক্ষ তেকে গত প্রায় চার বছর ধরে সকল প্রকার চেষ্টা করেছি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনেকবার যোগাযোগ করেছি। সকল প্রকার অনুনয় বিনয় আমি
করেছি সকল কর্তৃপক্ষের কাছে। প্রতিবার তারা আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন,
দিচ্ছি, দেব, হচ্ছে, হবে। এভাবে প্রায় চার বছর পার হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত আর
কোনো উপায় না দেখে আদালতে যেতে বাধ্য হয়েছি’।
মাওলানা সাঈদী বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে বন্দী রয়েছেন। ডিভিশনের জন্য
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়ের করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে তার বয়স
বর্তমানে ৭৯ বছর। তিনি দীর্ঘদিন হৃদরোগে আক্রান্ত। তার হার্টের করোনারীতে
৫টি রিং পড়ানো রয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার পর কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় তার
হার্টে ৩টি রিং পড়ানো হয়। তিনি আর্থাইটিস রোগে ভুগছেন। তার হাটু ও কোমরে
প্রচন্ড ব্যাথা। বর্তমানে অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি উঠতে বসতে ও চলাফেরা
করতে দারুণ কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছেন। ইদানীং তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করছেন
বলে কারা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
0 মন্তব্যসমূহ