বিএন ডেস্কঃ
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক
পরিচালক ব্রড অ্যাডামসের মতে, উত্তর কোরিয়া একটি সর্বগ্রাসী রাষ্ট্র।
পরমাণু কর্মসূচির পিছনে অর্থ ঢালতে গিয়ে সরকার দেশের ক্ষুধার্ত মানুষের
খাবার কেড়ে নিচ্ছে। প্রত্যেক নাগরিকের ওপরই ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি
রয়েছে।
একের পর এক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে গোটা বিশ্বে সাড়া
ফেললেও নিজের দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারেন নি কিম জং
উন। উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা নিজ দেশেই মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত
হচ্ছেন। তারা শিকার হচ্ছেন মানবাধিকার লংঘনের।
দেশটিতে গণমাধ্যমও পুরোপুরি সরকারের পুরো নিয়ন্ত্রণে। সেখানে গণমাধ্যমের
বিন্দুমাত্র স্বাধীনতা নেই। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়
কঠিনভাবে। দেশটিতে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম থেকেই নাগরিকদের খবর, বিনোদন বা সব
ধরণের তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু তাতে থাকে শুধু সরকারের প্রশংসা।
পরিস্থিতি সেখানে এতটাই ভয়াবহ যে কেউ দেশের বাইরের বা আন্তর্জাতিক
গণমাধ্যম থেকে কিছু জানার চেষ্টা করলে তাকে জেলে যেতে হয়। অভিজাতরা মোবাইল
ফোন ব্যবহার করেন। তাতেও নজরদারি আছে। দেশের বাইরে ফোন করা যায় না।
ধর্ম নিয়ে সেখানে লোকদেখানো কিছু কর্মকান্ড আছে। প্রকৃত পক্ষে উত্তর
কোরিয়ার নাগরিকদের কিম পরিবারের বন্দনা করা ছাড়া ধর্মীয় কোনো স্বাধীনতা
নেই। উত্তর কোরিয়ায় বন্দীদের জন্য শর্তও অনেক কঠিন। সামান্য বিষয়ে কারাদন্ড
হতে পারে।
মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা সেখানে কোনো বিষয়ই নয়। প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদও করা
হয়। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হলে তাঁর পুরো পরিবারকেই চিহ্নিত করে
শাস্তি দেয়া হয়। কেউ যদি দক্ষিণ কোরিয়ার সিনেমা বা ডিভিডি বা কিছু দেখে,
তাহলে তাকেও বন্দী করা হয়।
দেশের জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশকে বছরের কোনো না কোনো সময় সরকারের কাছে
বিনামূল্যে শ্রম দিতে হয়। চীন, কুয়েত এবং কাতারে উত্তর কোরিয়ার হাজার হাজার
নাগরিককে ক্রীতদাসের মতো নামমাত্র পারিশ্রমিকে কাজ করতে পাঠানো হয়। তারা
নামমাত্র যে পারিশ্রমিক পান, তারও বড় অংশ সরকার নিয়ে নেয়।
নারীরা চরম বৈষ্ণ্যমের শিকার। তাদের শিক্ষা এবং কাজের সুযোগ নেই বললেই
চলে। আর আহরহ ঘটে যৌন হয়রানির ঘটনা। ফলে নারীদের জীবন সবসময় ঝুঁকির মধ্যে
থাকে। উত্তর কোরিয়ার দুই লাখ শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত।
0 মন্তব্যসমূহ