মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলনের ২৬ প্রস্তাব


আজকের পদক্ষেপ আগামীর মাদক মুক্ত ও পরিকল্পিত বাংলাদেশ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এগিয়ে যায়। মাদক দ্রব্যের ব্যবহার বর্তমানে দেশে একটি ভয়াবহ সামাজিক সমস্যা। মাদকাসক্তির কারণে দেশের যুবসমাজ তথা যুবশক্তি দ্রুত ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলছে। মাদকদ্রব্য মৃত্যু ও ধ্বংস ডেকে আনে। মানুষের  দৈহিক সুস্থতা, নৈতিকতা ধ্বংস করে যুব সমাজ এবং রাষ্ট্রকে অধঃপতনের মুখ ঠেলে দিচ্ছে।
মাদক মুক্ত করা শুধু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর চাপিয়ে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করলে হবে না। চলমান মাদক অভিযানকে সফল করতে সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে এক যোগে এগিয়ে আসতে হবে যার যার অবস্থান থেকে। ইতোমধ্যো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলার আহবান জানান। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়ে পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলন জাতির সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ন প্রস্তবনা তুলে ধরেন।
মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে আমাদের করণীয় নি¤েœ উল্লেখ করা হলো ঃ
১। সমাজের সকল ধরনের মাদক বিরোধী  প্রচারনায় ছাত্র ও যুবকদেরকে সম্পৃক্ত করা।
২। নিজে ধূমপান/ মাদকদ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকা  এবং সরকারী অফিস ধূমপান মুক্ত ঘোষণা করা।
৩। সন্তানদের দিয়ে বিড়ি/ সিগারেট ক্রয় না করা।
৪। সন্তানদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
৫। সন্তানদের খেলাধূলা / সাংস্কৃতিক চর্চায় উৎসাহিত করা।
৬। অবসর সময় সন্তানদের সাথে কাটান এবং তাদেরকে ভাল বই পড়তে উৎসাহিত করুন।
৭। সন্তানদেরকে ধর্মীয় মূল্যবোধ শিক্ষা দেয়া এবং মাদকের কূ-ফল সর্ম্পকে ধারনা প্রদান।
৮। নিজ নিজ এলাকায় মাদক চোরাচালান, বিক্রয় ও বিতরণের ঘাটি উচ্ছেদ কার্যক্রমের সক্রিয় অংশগ্রহণ করা।
৯। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদক বিরোধী সভা, সমাবেশ, র‌্যালি, রচনা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা।
১০। চিকিৎসকদের চিকিৎসাপত্র ব্যতিরেকে কোন প্রকার নেশা জাতীয় ঔষধ বিক্রি না করা।
১১। ঔষধ বিক্রেতা কর্তৃক ক্রেতাদেরকে মাদক জাতীয় দ্রব্য ক্রয়ে নিরুৎসাহিত করা।
১২। স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও কুফল সম্পর্কে তুলে ধরা।
১৩। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাদক বিরোধী আইন প্রয়োগে সচেতন থাকা, নিরপাদ কেউ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়
১৪। এনজিও প্রতিনিধিদের স্ব-স্ব এলাকায় মাদক বিরোধী প্রচার অভিযানে সংশ্লিষ্ট করা (যেমনঃ পোষ্টার, ব্যানার, র‌্যালি)
১৫। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মাদকের কুফল সম্পর্কে তুলে ধরা ও ধর্মীয় অনুশাসন পালনে উদ্বুদ্ধ করা।
১৬। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে মাদক  প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা।
১৭। গণমাধ্যমে মাদক বিরোধী প্রচারণা ও প্রতিবেদন বেশী বেশী প্রকাশ করা। জেলা প্রশাসন কর্তৃক আদেশ জারি করা।
১৮। প্রত্যেক নাগরিকের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ইত্যাদি রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা।
১৯। সমাজে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা ও মাদক মুক্ত এলাকার সমাজপ্রতি ও জনপ্রতিনিধিদেরকে সম্মানা প্রদান।
২০। অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মাদকের কালো টাকাকে না বলা।
২১। যুবসমাজের অনুকূল সুস্থ নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা ও মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনা বৃদ্ধি করা।
২২। মাদক এর ব্যাপারে নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকা ও মাদক কে সর্বদা ‘না’ বলা। মাদক থেকে যুবসমাজ দূরে রাখা।
২৩ আলেমদের সম্পৃক্ত করা, মসজিদে জুমার দিন মাদক বিষয়ে বিশেষ আলোচনা রাখা।
২৪ সকল রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন নিজ নিজ ব্যানারে মাদক বিষয়ে সভা সেমিনার করা।
২৫ পুলিশ প্রশাসন ও কমিনিউটি পুলিশদেরকে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনা বৃদ্ধিতে কাজে লাগা।
২৬ তালিকা ভুক্ত মাদকাবারীদের সমাজিকভাবে বয়ক ও আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের অর্জিত সম্পদ ক্রোক করা।
মাদক একটি সামাজিক সমস্যা। তাই সামাজিকভাবে এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে। সকল প্রশাসন, রাজনৈতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, ডাক্তার, আইনজীবি, ব্যবসায়ী, ছাত্র সবাই এই সমাজের বাসিন্দা। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে। এই ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সকলের প্রচেষ্টায় মাদক দ্রব্যের ব্যবহার নির্মূল করার জন্যে আসুন দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই।
পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলনের পক্ষে প্রস্তাবকারী ,আব্দুল আলীম নোবেল,সমন্বয়ক,পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ