বিএন ডেস্কঃআওয়ামী
লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুর্নীতিবাজদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না।’ নিজ নিজ এলাকায় যারা জনপ্রিয় শুধুমাত্র তাদেরকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।
শনিবার আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গণভবনে দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘যেসব এমপি টাকা নিয়ে কাজ করেন, দুর্নীতি করেন, তারা নমিনেশন পাবেন না। নমিনেশন দেওয়া হবে এলাকায় যার জনপ্রিয়তা আছে তাকেই।’
কেউ দলের বিরুদ্ধে কথা বললে তার মনোনয়ন পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভোটের রাজনীতি করতে হলে উন্নয়নের কথা জনগনের সামনে তুলে ধরতে হবে।’
দুঃসময়ে দলের হাল ধরে রাখা কর্মীরা যাতে অবহেলিত না হয় সেদিকে নজর রাখা হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনের স্বার্থে মহাজোট করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি লীগের।’
আওয়ামী লীগ যাকে মনোনয়ন দিবে তার হয়ে সবাইকে কাজ করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশও দেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া আওয়ামী লীগে সুযোগ সন্ধানীদের প্রতি নজর রাখার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধীরা যাতে ভোট না পায় সে ব্যাপারে সজাগ থাকারও নির্দেশ দেন তিনি।
বাঙালির যা কিছু অর্জন সবই আওয়ামী লীগের শাসনামলে এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য। সব ধর্মের মানুষের দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই দল।’
তিনি আরও বলেন, ৭৫ এর পর এদেশের ক্ষমতা ছিল ক্যান্টনমেন্টে বন্দী। রাজনীতি জনগণের কল্যাণে না হলে তা দিয়ে জনগণের জন্য কিছু করা যায় না। ক্ষমতা নিজেদের ভোগ দখলের জন্য না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় কাজ করেছে জনগণের জন্য। রাজনীতি সঠিক হলে এবং দেশের কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করলে দেশের উন্নয়ন হয় এটি প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ কথা দিলে কথা রাখে।’
বিএনপির রাজনীতির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দূর্নীতিবাজদের দলে রাখার জন্য দলের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে বিএনপি নিজেদের দূর্নীতিবাজ দল হিসেবে প্রমান করেছে।’
দেশে কোনো ভিক্ষুক থাকবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো ভিক্ষুক থাকবে না। আমরা ভিক্ষুকমুক্ত বাংলাদেশ গড়বো। জাতির পিতা বলেছিলেন “ভিক্ষুক জাতির কোনো সম্মান থাকে না।”’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯ বছরে আমরা সমুদ্র তলদেশ থেকে মহাকাশে চলে গেছি। বাংলাদেশ এখন স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য। এটা আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, এতো উন্নয়নের পরও যদি জনগণ ভোট না দেয় তাহলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দায়ী থাকবেন। কারণ তখন বুঝতে পারবো ক্ষমতায় থাকতে আপনি জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। টাকার বিনিময়ে কাজ করেছেন। এ কারণে জনগণ আপনাকে ভোট দেয়নি।
তিনি বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছেন। তার পরে তাকে হত্যা করা হলো। পরিবার হারিয়ে আওয়ামী লীগ হয়ে গেছে আমার পরিবার। এখানে আমি বাবা-মায়ের আদর ও ভাইবোনের ভালবাসা পেয়েছি।
তিনি বলেন, একজন রাজনীতিবিদের চিন্তা ভাবনা থাকবে কীভাবে আমরা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি। নিজের ভাগ্য নয়, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনেই আমাদের কাজ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। তারা আমাকে দুর্নীতিবাজ প্রমাণের ষড়যন্ত্র করেছিল । আজ আমরা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করতে পারছি। এ সময় তিনি দেশের উন্নয়নের কথা জনগণের মধ্যে তুলে ধরতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
এসময় আওয়ামী লীগ সরকার যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অর্থনৈতিক নীতিমালাকে সময় উপযোগী করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম, কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ও দফতর সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
0 মন্তব্যসমূহ