বি,এন ডেস্কঃ
উন্নয়নশীল বিশ্বের পর এবার ইউরোপে ব্যবসা বাড়াতে নজর দিয়েছে চীনের
স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শাওমি। এ জন্য পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করা
৬১০ কোটি মার্কিন ডলারের একটি বড় অংশ ইউরোপের বাজারে খরচ করার পরিকল্পনা
করছে তারা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ৯ জুলাই হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হতে
যাচ্ছে শাওমি। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) ২১৮
কোটি সাধারণ শেয়ার ছাড়ছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিটি শেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২ দশমিক
১৫ থেকে ২ দশমিক ৮০ মার্কিন ডলারে।
রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, শাওমির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা (সিইও) লি জুন গত শনিবার হংকংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘একজন
আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন, আমরা ব্যবসা শুধু উন্নয়নশীল দেশেই বাড়াব কি না? গত
বছর আমরা ইউরোপের বাজারে প্রবেশ করেছি। এরপর থেকেই বুঝতে পেরেছি, সেখানে
আমাদের “এমআই” ফ্যান রয়েছে।’
পুঁজিবাজার থেকে তোলা অর্থ দিয়ে মূলত তিনটি দেশ স্পেন, রাশিয়া ও
ইন্দোনেশিয়ায় খরচ করবে শাওমি। চীনের বাজারে জোর দেওয়া শাওমি সম্প্রতি
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে তাদের প্রথম ফ্ল্যাগশিপ স্টোর বা বিক্রয়কেন্দ্র
খুলেছে।
ইউরোপের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও আসার পরিকল্পনা আছে
প্রতিষ্ঠানটির। এ প্রসঙ্গে শাওমির সহপ্রতিষ্ঠাতা ওয়্যাং চুয়ান বলেন,
‘যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নত হওয়ার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।’
এএফপির এক খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বাজারে ঢুকতে সিকে
হাচিসনের সঙ্গে চুক্তি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরে স্পেনের বাজারে
কার্যক্রম শুরু করার পর ইতিবাচক সাড়া পায় শাওমি। এখন সিকে হাচিসনের সঙ্গে
মিলে ইউরোপের অন্য বাজারগুলোয় স্মার্টফোন বিক্রি করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, শুরুতে সিকে হাচিসনে টেলিকম
প্রতিষ্ঠানের অধীনে যুক্তরাজ্যে তিনটি দোকান খুলবে শাওমি। সেখান থেকে
শাওমির পণ্য বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া থ্রি গ্রুপস স্টোরের মাধ্যমে
অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, হংকং, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, সুইডেনের বাজারেও
স্মার্টফোন বিক্রি করবে চীনা প্রতিষ্ঠানটি।
গত বছরে শাওমির চেয়ারম্যান লেই জুন ইউরোপের বাজারে কার্যক্রম শুরু করার
ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের শেষ দিকে বা ২০১৯ সালের শুরুতে
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আসবে শাওমি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যান্ড্রয়েড
টিভি সেট-টপ বক্স ‘মি টিভি’ বিক্রি করে শাওমি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে
সফলতার বিষয়টি সেখানকার আইন ও মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর
করছে।
২০১০ সালে যাত্রা শুরু হয় শাওমির। এরপর মাত্র আট বছরের কম সময়ে বিশ্বের
সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল একটি স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে
শাওমি। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ২ কোটি ৮০ লাখ
স্মার্টফোন বিক্রি করেছে শাওমি, যা আগের বছরের চেয়ে ৮৮ শতাংশ বেশি।
পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করা অর্থের ৩০ শতাংশ চীনের বর্তমান গ্রাহকদের সেবার
মান বাড়াতে খরচ করবে শাওমি।
/প্রথম আলো
0 মন্তব্যসমূহ