নিরাপত্তাহীনতায় নিহত কাউন্সিলর একরামের স্ত্রী



বিএন ডেস্কঃ ‘স্কুলপড়ুয়া দুই কিশোরী মেয়ে নিয়ে চট্টগ্রামে লুকিয়ে আছি। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সময় পার করছি।’ গতকাল রোববার মুঠোফোনে এই প্রতিবেদকের কাছে এভাবে অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন আয়েশা বেগম।
আয়েশা বেগম গত ২৬ মে র‍্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরামুল হকের স্ত্রী।
আয়েশা বলেন, ‘তিন নারী (তিনি ও দুই মেয়ে) ছাড়া ঘরে আর কেউ নেই। মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে যে থানা-আদালতে দৌড়াদৌড়ি করব, সেই সুযোগ ও পরিস্থিতি কোনোটি নেই। মেয়ে দুটো সারাক্ষণ বাবার জন্য কান্নাকাটি করছে, ক্ষণে ক্ষণে মূর্ছা যাচ্ছে, কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’
আয়েশার প্রশ্ন, ইয়াবা ব্যবসায়ীর তকমা দিয়ে একরামুলকে হত্যা করা হলেও টেকনাফে কি আদৌ ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ হবে? ইয়াবা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত আসল হোতাদের কি গ্রেপ্তার কিংবা আইনের আওতায় আনা হবে? তিনি বলেন, ‘একরামুলকে হত্যার বিনিময়ে যদি টেকনাফকে ইয়াবামুক্ত অঞ্চল ঘোষণা দেওয়া যেত, তবে মনকে কিছুটা সান্ত্বনা দিতে পারতাম। এখন সময় যত গড়াচ্ছে, হতাশা তত বাড়ছে। একরামুলকে হত্যা করে সরকারের মাদকবিরোধী সফল অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য সীমান্তের কেউ চক্রান্তে লিপ্ত ছিল কি না, তা খুঁজে দেখা জরুরি।’
আয়েশা বেগম কান্নারত অবস্থায় বলেন, দুই মেয়ের লেখাপড়ার কী হবে? কীভাবে সংসার চালাব?
একরামুল হককে হত্যার পর সাংবাদিকেরা ছাড়া প্রশাসনের কেউ তাঁদের খোঁজ নেয়নি। একরামের দুই মেয়ে তাহিয়াত হক ও নাহিয়ান হক টেকনাফ বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুলের অষ্টম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। তাহিয়াত জানায়, ‘বাবা সব সময় আমাদের মোটরসাইকেলে তুলে স্কুলে নিয়ে যেতেন, তখন তাঁর শরীর থেকে সুগন্ধ নাকে আসত। বাবা তো বেঁচে নেই, এখন কে আমাদের স্কুলে নিয়ে যাবে? সুগন্ধটা কোথায় পাব?’।
একরামের বড় ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সবাই মামলার কথা বলছে। আমরা কার বিরুদ্ধে মামলা করব? পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’
/প্রথমআলো

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ