আব্দুল আলীম নোবেলঃ চলমান কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে মেয়র কাউন্সিলর মোট ১০৪জন প্রার্থী নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিল। ছেড়ে বা ঝড়ে গিয়ে এখন ৯০এর কোটায় এসে থেমেছে প্রার্থীর সংখ্যা। গত কয়েক দিনের ভোট প্রত্যাশী পৌর প্রার্থীদের যে দৌড়ঝাপ দেখে মনে হয়েছে এরা জনসেবা দিতে মহান ব্রত নিয়ে নেমেছেন। আদতে কতটুকু সেবার মনমানসিকতা আছে এরাই ভাল জানে। দৃশ্যত দেখে বুঝা যায়, কারো কাছে এই পৌর নগরীর জন্য সমৃদ্ধ উন্নয়নের কোন রোডম্যাপ নেই, নেই কোন পরিকল্পনা, কোন সুনিদৃষ্ট প্রস্তাবনা। ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে তাদের ছোট বড় মহড়া তো কম দেখছিনা প্রতিদিন। ঠিক আগের মতন নিব্র্াচনের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি। নতুন মানুষের পুরাতন ডায়লগ। মনে রাখবেন এইসবতো আমি আপনার চেয়ে সাধারণ মানুষ ভাল বুঝে। গতবারে যারা ছিল তারাইতো এমনটি বলে সাধারণ মানুষের ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়ে এসেছিল, কয় তেমন তো পরির্বতন আসেনি। জনসেবায় গরিব অসহায় নির্যাতিত,নিপিড়িত মানুষের কাছে কে কতটুকু ছিল কম জানে না পৌরসভার মানুষ। এবার রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থীর অংশ গ্রহণ বরাবরের মতো একটু আলেদা বৈশিষ্ট হতো পারতো। কারণ বেশিভাগ প্রার্থী নতুন ও তরুণ এবং শিক্ষিত। এই জনপদের সচেতন নাগরিক আশা করেছিল তাদের ভোট করার কায়দা কৌশল হবে ভিন্ন, থাকবে নতুত্ব। সাধারণ মানুষের সামনে গ্রাউন্ড লেভেলে চেপে থাকা অসংখ্য সমস্যার কথা গুলো কারো না কারো নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির প্রস্তবনার মধ্যে ওঠে আসবে। যেটি নতুনদের করা উচিত ছিল। সেই কথা গুলো যদি প্রকাশ পেতো জনগণের সামনে মুখোশ খুলে যেতো দুর্নীতিবাজ, অযোগ্য, জনবিছিন্ন, ঠিকাদার র্মাকা জনপ্রতিনিধিদের।। প্রার্থীদের লক্ষ্যহীন দৌড়ে উন্নয়নের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির মহড়া দেখতে চাই না আমরা।
কার হাতে দায়িত্ব দিলে এই এই শহরের উন্নয়ন হবে নতুন করে সিন্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে আবার। আগামী ২৫জুলাই কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন। কারণ কক্সবাজার পৌরসভার জন্ম ১৮৬৯ সাল, সেই যাত্রার ১৪৮ বছর পার হলেও আশানুরূপ পরির্বতন দেখেনি। সেই হিসাবে যেখানে ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ার কথা সেই তুলনায় বলতে গেলে এই শহরে কিছুই হয়নি। সাধারণ মানুষের ম্যান্ডেড নিয়ে পরিবর্তনের ন্বপ্ন দেখিয়ে কত রথিমহারথি চলে গেছে। রেখে গেছে একটি অপরিছন্ন, অনিরাপদ,গিঞ্জি,অপরিকল্পিত অনুউন্নত একটি পৌরশহর। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, পরিবেশ প্রতিবেশের কথা বাদেই দিলাম, কক্সবাজার পৌরসভার অবকাঠামোগত উন্নয়নের যে যাত্রা আগামী প্রজন্মের বসবাসের জন্য হয়ে ওঠবে একটি বিষফোঁড়া। মাত্র ৩২.৯০ কিমিলোমিটার আয়তনের কক্সবাজার পৌসভার ২০০১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী কক্সবাজারের জনসংখ্যা ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪৭৭ জন বলা হলেও বর্তমানে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি জনসংখ্যার বসবাস এই শহরে। নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ আপডেট মতে ভোটার প্রায় ৮৪ হাজার।
একটি কথা আছে, কেউ আপনার সুখের দায়িত্ব নিয়ে বসে নেই। আপনার কাজই আপনাকে সুখ এনে দেবে। মনে রাখবেন সময় যতই ভাল বা খারাপ হোক তা বদলাবেই। প্রাকৃতিক নৈর্সগিক বহু বিশেষনে বিশেষিত এই আমাদের কক্সবাজার। বর্তমানে স্বল্প মেয়াদি অল্প পরিকল্পনার কক্সবাজারের প্রেক্ষাপটে অগ্রযাত্রা ভাবিয়ে তুলছে চিন্তাশীলদের। যোগ্য জনপ্রতিনিধিদেরকে বাদ দিয়ে, নগদ লাভের অলিক সুখের আশায় কিছু সরকারী বেসরকারী কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তির উপর দায় চাপিয়ে দায়িত্ব শেষ করতে চাই আমারা। এখানে তো আমাদের চিন্তা শক্তির বড় বিপর্যয়। দৃষ্টি শক্তি বদলায় বদলে যাবে জীবন মান। কথায় কথায় আমরা দিবাস্বপ্ন দেখি, একটি সুখি সমৃদ্ধ অনন্য একটি জনপদ। নিজেকে কি কোন দিন প্রশ্ন করে দেখিছি, এই নগরের উন্নয়নে আমি কতবার চিন্তা করেছি। আগামীর প্রজম্মের জন্য একটি বাস যোগ্য কক্সবাজার পৌরসভা গড়তে। আমার স্বপ্ন, আমার প্রত্যাশা, আমার মননের চিন্তার কতটা অংশ গ্রহন আছে এখানে। জানি এমন প্রশ্নের উত্তরে বেশির ভাগই নিশ্চিত ফেল করবে। আর আমরা বড় বড় কথা বলে দুষ চাপায় চেয়ার ওয়ালেদের উপর। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, পরিকল্পিত, সমৃদ্ধ পর্যটন নগরী গড়তে হাত লাগায়, তাদের কাঁেধ কাধঁ মিলায় এতে এগিয়ে যাবে আমাদের প্রিয় এই নগরী।
বিশেষ করে শহরের অপরিকল্পিতভাবে বেড়ে ওঠা নগারয়ণ মোটেও আমাদের জন্য সুখের নয়। পরিবেশ প্রতিবেশের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা নেই কারো। যে, যেভাবে পারে অনেকটা অনিয়মের প্রতিযোগিতার নেমে পড়েছি। আমি যদি নিজেই সেখান থেকে বের না হতে পারি কেইতো আমাকে বের করতে পারবে না। সাবার আগে আমাকে সচেতন হতে হবে। এখানে কোন সুখ নেই দৃশ্যত সাময়িক রং মাখানো সুখ দেখলেও বরাবরেই চরম ক্ষতি করে চলছি আমার স্বজাতির। এই ক্ষেত্রে দেশ প্রেমের জাগ্রতবোধ না হলে, কারো উপর কুড়াল মারলেও কাজ হবে না। নিতে হবে আজকের পদক্ষেপ আগামীর পরিকল্পিত কক্সবাজার। আসুন শপথ নিই। একটি সমৃদ্ধ ও পরিকল্পিত কক্সবাজার বিনার্মাণে সবার আগে আমাদের অংশ গ্রহণ জরুরী। কেউ আমাদের রাতারাতি পরিবর্তন করে দিবে না, পরিবর্তনের ডাক কারো না কারো দিতে হবে।
লেখক- সাংবাদিক ও সমন্বয়ক, পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলন, ০১৮২৪৪০৩০৮৩
0 মন্তব্যসমূহ