বিএন ডেস্কঃ
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও আন্দোলনের একজন যুগ্ম-আহ্বায়ক
গ্রেপ্তার হওয়াকে কেন্দ্র করে আবারো নতুন করে তৈরী হয়েছে উত্তেজনা।
রোববার সকালে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী
শাহবাগ থানায় আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় দায়ের করা এক মামলায় রাশেদ খানকে
গ্রেফতার করা হয়। মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন যে রাশেদ খান ফেসবুক
লাইভে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে আইন-শৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
রোববার সকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের একটি ফেসবুক গ্রুপে লাইভের
মাধ্যমে রাশেদ খানকে সাহায্য চাইতে দেখা যায়। সেই লাইভে তিনি তাকে ‘ধরে
নিয়ে যাওয়া হবে’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক ও
আন্দোলনের নেতাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এর আগে শনিবার সকালে
বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কয়েকজন নেতা
জড়ো হলে সেখানে তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়। এসংক্রান্ত বেশ কিছু ভিডিও
এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
অন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বক্তব্য অনুযায়ী আক্রমণকারীদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
কোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামের
সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বিবিসি’কে বলেন শনিবার সকালে তিনিসহ কোটা
আন্দোলনের তিনজন নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে পৌঁছালে তাদের
ওপর হামলা চালায় সেখানে আগে থেকে জড়ো হয়ে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এসময় তিনি এবং আরেকজন নেতা লাইব্রেরির ভেতরে আশ্রয় নিলেও নুরুল হককে
মারধর করা হয়। আল মামুন বলেন, ‘একপর্যায়ে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় আমরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা
নিতে যাই।’
তবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজেও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হুমকির মুখে চিকিৎসা
নিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন হাসান আল মামুন। পরে তারা বেসরকারি হাসপাতালে
চিকিৎসা গ্রহণ করেন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল
হাসান এসব ঘটনায় ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আল মামুন বলেন, ‘রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধনের পরিকল্পনা থাকলেও
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস হওয়ায় আজ সেই কার্যক্রম স্থগিত করা
হয়েছে। তবে দিনাজপুরে হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয় আর রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।’
তবে আল মামুন বলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রলীগ কর্মীদের সাথে
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এই ধাওয়া-পাল্টা
ধাওয়ারও বেশকিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
হাসান আল মামুন অভিযোগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রবিবার কোটা সংস্কার
আন্দেোলন সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম ছির না। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যেন
কোনো ধরণের কর্মসূচী পরিচালনা করতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে সারাদিনই
ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিল ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। হাসান আল মামুন জানান
সোমবার পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ
কর্মসূচী পালন করবেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
0 মন্তব্যসমূহ