গাজী গোফরানঃ চারিদিকে নারীদের উপর যৌন আগ্রাসন, ধর্ষণ,
এমনকি হত্যার ছড়াছড়ি মনকে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলছে। অথচ সাম্প্রতিক
বছরগুলোতে, বিশেষ করে ২০১২–তে দিল্লীর বাসে এক মেয়েকে নির্মমভাবে গণ-ধর্ষণ ও
নৃশংসভাবে হত্যার পর, নারীদের উপর যৌন হয়রাণী, আগ্রাসন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে
বাংলাদেশ-ভারতের ফেসবুক থেকে রাজপথ বিক্ষোভ, প্রতিবাদ ও নিন্দায় সোচ্চার
হচ্ছে; অপরাধীদের শাস্তি কঠোর থেকে কঠোরতর হচ্ছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে
বাড়ছে নারীদের উপর যৌন হয়রাণী, আগ্রাসন ও ধর্ষণ। এমনটা কেন হচ্ছে? ভেবে
ভেবে হয়রাণ হচ্ছি!
সম্প্রতি ফেসবুকে মেয়েদের সম্পর্কে বন্ধুদের পোস্টগুলো মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছি। মেয়েদের চরিত্র অঙ্কন করতঃ বন্ধুদের পোস্টগুলো থেকে ইঙ্গিত পাচ্ছি – কেন নারীদের উপর এভাবে যৌন আগ্রাসন ও অত্যাচার ক্রমাগত বেড়েই চলছে। বিগত ২-৩ দিনের চোখে পড়া কয়েকটি পোস্ট নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
(১) “কিছু কিছু মেয়েদের প্রেম শীতকালীন পরিযায়ী পাখির মতো, উত্তরী হাওয়ায় আসে, দখিনা বাতাসে ফিরে যায়।”
মর্মাথঃ কিছু মেয়েদের প্রেম স্বল্পস্থায়ী, এক মৌসুম পার হতেই মজা লয়ে উধাও হয়ে যায়।
(২) “আমার সামাজিক নিরীক্ষণ নিশ্চিত করে যে, বেশীরভাগ মেয়েরাই বদ। তারা শুধুই মজা লইতে চায়।” (অনুবাদিত)
মর্মাথঃ বেশীরভাগ মেয়েরা বদ; শুধুই আনন্দ-ফূর্তি করতে চায়।
(৩) “তৃতীয় বিশ্বের নারীবাদ মানেই উচ্চফলনশীল পতিতাবৃত্তি!”
মর্মাথঃ আমাদের দেশের মত তৃতীয় বিশ্বের নারীবাদীরা পতিতাদের মত শুধুই অধিক সংখ্যক গ্রাহক খুঁজে, তথা নারীবাদীরা ইচ্ছেমত পছন্দের পুরুষের সাথে মেলামেশা করতে চায়।
প্রশ্ন হচ্ছে – পুরুষরা ভিন্ন কিভাবে? কিছু মেয়েরা এক মৌসুমের জন্য প্রেমে বিশ্বাসী হলে দোষ কোথায়, যেখানে বেশীরভাগ পুরুষরা এক রাতের প্রেমে বিশ্বাসী। বেশীর ভাগ মেয়েরা শুধুই মজা লইতে চায় তা ঠিক, পুরুষরা কি মজা লইতে চায় না? নারীবাদীরা অধিক সংখ্যক গ্রাহক খুঁজলে দোষ কোথায়, যেখানে বেশীরভাগ পুরুষ যতটা সম্ভব যৌনসঙ্গী পেতে আগ্রহী।
এই তিনজন বন্ধুই মার্কবাদী ধারার প্রগতিশীল। নারী অধিকার ও সাম্যবাদে বিশ্বাসী। এবং উনারা যেসব প্রশ্নে মেয়েদেরকে ধিক্কার দিচ্ছেন, তার প্রত্যেকটি প্রশ্নেই পুরুষরা অধিক ধিক্কার পাওয়ার যোগ্য। শুধু তাই নয়, পুরুষরা তাদের যৌন কামনা, আনন্দ-ফূর্তি পূরণে মেয়েদেরকে বলাৎকার করতে, জোর-পূর্বক ধর্ষণ করতে, এমনকি ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করতেও দ্বিধা করছে না। অথচ তাদের ধিক্কার, নিন্দা শুধুই মেয়েদের জন্য বরাদ্দ। এটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সেই চিরাচরিত ভাবনার প্রতিধ্বনি মাত্র যে, ‘নারী ছলনাময়ী, সম্মোহনী, প্রলুব্ধকারী’।
আমার এ বন্ধুগুলো আসলেই প্রগতিশীল, নারী-পুরুষের তথা সকল মানুষের জন্য সমান অধিকারে বিশ্বাসী। তাদের এ জ্ঞানগর্ব উক্তিগুলোর মানবজীবনের এক কঠিন বাস্তবতা লুকিয়ে। তা হচ্ছে – সমাজ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বুনিয়াদ ও শিক্ষা থেকে বেরিয়ে আসা আমাদের জন্য খুবই কঠিন।
আর যখন প্রগতিশীল ও সাম্যবাদীদের মনে নারীদের সম্পর্কে এমন ভাবনা বদ্ধমূল, তখন সহজেই উপলব্ধি করা যায় সাধারণ মানুষ (পুরুষ) নারীদেরকে কেমন দৃষ্টিতে দেখে। বর্তমানে এ অঞ্চলে নারীদের উপর যৌন আগ্রাসন ও অত্যাচার প্রকট থেকে প্রকটতর হয়ে মহামারীতে রূপ নেওয়ার রহস্য সেখানেই।
যতদিন আমরা নারীদেরকে সত্যিকার অর্থে পুরুষের সমান অধিকারের দাবীদার হিসেবে ভাবতে না শিখব, যে একজন পুরুষের ১০ জন নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন আর একজন নারীর ১০ জন পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের মাঝে কোন তফাৎ নেই, ততদিন নারীর উপর পুরুষের যৌন আগ্রাসন রহিত হবার নয়। এখানে বড় সমস্যা শিক্ষামূলক, মনস্তাত্যিক; আইনী বিষয়টি গৌণ।
সম্প্রতি ফেসবুকে মেয়েদের সম্পর্কে বন্ধুদের পোস্টগুলো মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছি। মেয়েদের চরিত্র অঙ্কন করতঃ বন্ধুদের পোস্টগুলো থেকে ইঙ্গিত পাচ্ছি – কেন নারীদের উপর এভাবে যৌন আগ্রাসন ও অত্যাচার ক্রমাগত বেড়েই চলছে। বিগত ২-৩ দিনের চোখে পড়া কয়েকটি পোস্ট নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
(১) “কিছু কিছু মেয়েদের প্রেম শীতকালীন পরিযায়ী পাখির মতো, উত্তরী হাওয়ায় আসে, দখিনা বাতাসে ফিরে যায়।”
মর্মাথঃ কিছু মেয়েদের প্রেম স্বল্পস্থায়ী, এক মৌসুম পার হতেই মজা লয়ে উধাও হয়ে যায়।
(২) “আমার সামাজিক নিরীক্ষণ নিশ্চিত করে যে, বেশীরভাগ মেয়েরাই বদ। তারা শুধুই মজা লইতে চায়।” (অনুবাদিত)
মর্মাথঃ বেশীরভাগ মেয়েরা বদ; শুধুই আনন্দ-ফূর্তি করতে চায়।
(৩) “তৃতীয় বিশ্বের নারীবাদ মানেই উচ্চফলনশীল পতিতাবৃত্তি!”
মর্মাথঃ আমাদের দেশের মত তৃতীয় বিশ্বের নারীবাদীরা পতিতাদের মত শুধুই অধিক সংখ্যক গ্রাহক খুঁজে, তথা নারীবাদীরা ইচ্ছেমত পছন্দের পুরুষের সাথে মেলামেশা করতে চায়।
প্রশ্ন হচ্ছে – পুরুষরা ভিন্ন কিভাবে? কিছু মেয়েরা এক মৌসুমের জন্য প্রেমে বিশ্বাসী হলে দোষ কোথায়, যেখানে বেশীরভাগ পুরুষরা এক রাতের প্রেমে বিশ্বাসী। বেশীর ভাগ মেয়েরা শুধুই মজা লইতে চায় তা ঠিক, পুরুষরা কি মজা লইতে চায় না? নারীবাদীরা অধিক সংখ্যক গ্রাহক খুঁজলে দোষ কোথায়, যেখানে বেশীরভাগ পুরুষ যতটা সম্ভব যৌনসঙ্গী পেতে আগ্রহী।
এই তিনজন বন্ধুই মার্কবাদী ধারার প্রগতিশীল। নারী অধিকার ও সাম্যবাদে বিশ্বাসী। এবং উনারা যেসব প্রশ্নে মেয়েদেরকে ধিক্কার দিচ্ছেন, তার প্রত্যেকটি প্রশ্নেই পুরুষরা অধিক ধিক্কার পাওয়ার যোগ্য। শুধু তাই নয়, পুরুষরা তাদের যৌন কামনা, আনন্দ-ফূর্তি পূরণে মেয়েদেরকে বলাৎকার করতে, জোর-পূর্বক ধর্ষণ করতে, এমনকি ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করতেও দ্বিধা করছে না। অথচ তাদের ধিক্কার, নিন্দা শুধুই মেয়েদের জন্য বরাদ্দ। এটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সেই চিরাচরিত ভাবনার প্রতিধ্বনি মাত্র যে, ‘নারী ছলনাময়ী, সম্মোহনী, প্রলুব্ধকারী’।
আমার এ বন্ধুগুলো আসলেই প্রগতিশীল, নারী-পুরুষের তথা সকল মানুষের জন্য সমান অধিকারে বিশ্বাসী। তাদের এ জ্ঞানগর্ব উক্তিগুলোর মানবজীবনের এক কঠিন বাস্তবতা লুকিয়ে। তা হচ্ছে – সমাজ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বুনিয়াদ ও শিক্ষা থেকে বেরিয়ে আসা আমাদের জন্য খুবই কঠিন।
আর যখন প্রগতিশীল ও সাম্যবাদীদের মনে নারীদের সম্পর্কে এমন ভাবনা বদ্ধমূল, তখন সহজেই উপলব্ধি করা যায় সাধারণ মানুষ (পুরুষ) নারীদেরকে কেমন দৃষ্টিতে দেখে। বর্তমানে এ অঞ্চলে নারীদের উপর যৌন আগ্রাসন ও অত্যাচার প্রকট থেকে প্রকটতর হয়ে মহামারীতে রূপ নেওয়ার রহস্য সেখানেই।
যতদিন আমরা নারীদেরকে সত্যিকার অর্থে পুরুষের সমান অধিকারের দাবীদার হিসেবে ভাবতে না শিখব, যে একজন পুরুষের ১০ জন নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন আর একজন নারীর ১০ জন পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের মাঝে কোন তফাৎ নেই, ততদিন নারীর উপর পুরুষের যৌন আগ্রাসন রহিত হবার নয়। এখানে বড় সমস্যা শিক্ষামূলক, মনস্তাত্যিক; আইনী বিষয়টি গৌণ।
0 মন্তব্যসমূহ