বিএন ডেস্কঃ
ছাত্রলীগের হাতুড়িপেটার ঘটনায় আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তরিকুল
ইসলামের পায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সর্বশেষ এক্স-রে দেখে বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকেরা বলেছেন, তরিকুলের পায়ে অস্ত্রোপচার লাগবে।
কৃষক পরিবারের সন্তান তরিকুলের সহপাঠীদের চাঁদার টাকায় তাঁর চিকিৎসার খরচ চলছে। সহপাঠীরাই হাসপাতালে সার্বক্ষণিক
তাঁর সেবা-শুশ্রূষা করছেন। চিকিৎসার জন্য তোলা টাকার হিসাব রাখছেন তরিকুলের
সহপাঠী মনজুরুল আলম। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এক্স-রেসহ সাতটি পরীক্ষার পর তাঁদের হাতে আছে মাত্র ১ হাজার ৩০০ টাকা।
এদিকে গাইবান্ধার গ্রামে তরিকুলের বাবা খোরশেদ আলমকে (৬০) হয়রানি ও ভয় দেখানোর অভিযোগ করেছে পরিবার। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘জোরপূর্বক’ ছাড়পত্র দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে যন্ত্রণাকাতর তরিকুলকে যখন বের করে দেওয়া হয়, প্রায় একই সময় গাইবান্ধার গ্রামে তাঁর বাবাকে জেরা করছিলেন অচেনা এক ব্যক্তি।
কৃষক পরিবারের সন্তান তরিকুলের সহপাঠীদের চাঁদার টাকায় তাঁর চিকিৎসার খরচ চলছে। সহপাঠীরাই হাসপাতালে সার্বক্ষণিক
তাঁর সেবা-শুশ্রূষা করছেন। চিকিৎসার জন্য তোলা টাকার হিসাব রাখছেন তরিকুলের
সহপাঠী মনজুরুল আলম। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এক্স-রেসহ সাতটি পরীক্ষার পর তাঁদের হাতে আছে মাত্র ১ হাজার ৩০০ টাকা।
এদিকে গাইবান্ধার গ্রামে তরিকুলের বাবা খোরশেদ আলমকে (৬০) হয়রানি ও ভয় দেখানোর অভিযোগ করেছে পরিবার। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘জোরপূর্বক’ ছাড়পত্র দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে যন্ত্রণাকাতর তরিকুলকে যখন বের করে দেওয়া হয়, প্রায় একই সময় গাইবান্ধার গ্রামে তাঁর বাবাকে জেরা করছিলেন অচেনা এক ব্যক্তি।
তরিকুলের বোন ফাতেমা খাতুন বলেন, তাঁর বাবা বৃহস্পতিবার
বিকেলে বাড়ির পাশে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলপুকুরিয়া বাজারে যান।
সেখানে এক ব্যক্তি তাঁর বাবাকে জেরা করতে থাকেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের
সঙ্গে যুক্ত কি না, তা জানতে চান। অতীতে কখনো জামায়াতের রাজনীতি করতেন কি
না, তরিকুল কোন দল করত—এ রকম নানা প্রশ্নে ভয় পেয়ে যান তাঁর বাবা। তখন
তাঁকে (ফাতেমা) ফোন করেন তিনি। পরে তাঁর পরামর্শে দ্রুত বাড়ি ফিরে যান বাবা
খোরশেদ আলম।
ফাতেমা বলেন, তাঁদের খেটে খাওয়া পরিবার। কেউ রাজনীতি করেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা তিন ভাই-বোন, সবাই লেখাপড়ায় আছি। আমাদের তো তেমন জমিজমাও নেই যে বিক্রি করে ভাইয়ের চিকিৎসা করাব। এ ঘটনার পর মা ভেঙে পড়েছেন। ভাইয়ের ক্লাসমেটরা (সহপাঠী) না থাকলে চিকিৎসা করানো মুশকিল হতো।’
পরিবারে ফাতেমা সবার ছোট। তিনি বগুড়ার একটি মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক পরীক্ষা দিয়েছেন। বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম পরিবারকে সহায়তা করতে গিয়ে লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়েন। এখন তিনি বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে স্নাতক পড়ছেন। মেজ ভাই তরিকুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শেষ বর্ষের ছাত্র। পরিবারের বেশি আশা ছিল তরিকুলকে নিয়ে। ফাতেমা ও বড় ভাই এখন রাজশাহীতে তরিকুলের পাশেই আছেন।
গত সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তরিকুলকে মারাত্মক আহত করেন। ওই দিন বিকেলে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পতাকা মিছিল বের করেছিলেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে এলে ছাত্রলীগ হামলা করে। ভয়ে শিক্ষার্থীরা দৌড়াতে থাকেন। তখন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল মাটিতে পড়ে যান। এরপর তাঁকে হাতুড়ি এবং লাঠি দিয়ে পেটান ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। হাতুড়ির আঘাতে তরিকুলের ডান পা মারাত্মক জখম হয়। ওই দিনই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক্স-রেতে দেখা যায়, তাঁর পায়ের হাড় আড়াআড়িভাবে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মাথায় কয়েকটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। পরিবার বলছে, পায়ের স্থানচ্যুত হাড় ঠিক জায়গায় না বসিয়ে ব্যান্ডেজ প্যাঁচানো অবস্থায় বৃহস্পতিবার তরিকুলকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল থেকে সহপাঠীরা তরিকুলকে একটি ভ্যানে করে নিয়ে যান রাজশাহী শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁর সহপাঠী মতিউর রহমান বলেন, প্রক্টর স্যার আশ্বাস দিয়েছিলেন চিকিৎসায় সহযোগিতা করবেন। কিন্তু সেটা তো দূরের কথা তরিকুলকে প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েও পাননি তাঁরা।
ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে গতকাল তরিকুলের পা, বুক, মেরুদণ্ডের এক্স-রেসহ সাতটি পরীক্ষা করানো হয় একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রে। সেখানে তাঁর সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। জানালেন, পা ছাড়াও পিঠ, কাঁধ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা।
তরিকুলের পায়ের গতকালের এক্স-রে ফিল্মের ছবি তুলে তা ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) একজন সহযোগী অধ্যাপককে দেখানো হয়। তিনি বলেন, রোগীর হাঁটুর নিচে পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। পা ফুলে গেছে। এর প্রধান চিকিৎসা অস্ত্রোপচার। সেটা করতে হবে পা ফোলা কমার পর।
এক্স-রে ফিল্মের ছবি দেখে একই কথা বলেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সাবেক এক সহকারী অধ্যাপকও। তিনি বলেন, রোগীর কেবল পায়ের হাড় ভাঙেনি, রক্তক্ষরণও হয়েছে। সেই ক্ষত শুকানো এবং ফোলা কমার আগে অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। তিনি বলেন, হাড় আড়াআড়িভাবে ভেঙে গেছে, এটা টেনে বসিয়ে শুধু প্লাস্টার করিয়ে দিলে থাকবে না, সরে যাবে। এ জন্য অস্ত্রোপচার করতে হবে।
ফাতেমা বলেন, তাঁদের খেটে খাওয়া পরিবার। কেউ রাজনীতি করেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা তিন ভাই-বোন, সবাই লেখাপড়ায় আছি। আমাদের তো তেমন জমিজমাও নেই যে বিক্রি করে ভাইয়ের চিকিৎসা করাব। এ ঘটনার পর মা ভেঙে পড়েছেন। ভাইয়ের ক্লাসমেটরা (সহপাঠী) না থাকলে চিকিৎসা করানো মুশকিল হতো।’
পরিবারে ফাতেমা সবার ছোট। তিনি বগুড়ার একটি মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক পরীক্ষা দিয়েছেন। বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম পরিবারকে সহায়তা করতে গিয়ে লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়েন। এখন তিনি বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে স্নাতক পড়ছেন। মেজ ভাই তরিকুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শেষ বর্ষের ছাত্র। পরিবারের বেশি আশা ছিল তরিকুলকে নিয়ে। ফাতেমা ও বড় ভাই এখন রাজশাহীতে তরিকুলের পাশেই আছেন।
গত সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তরিকুলকে মারাত্মক আহত করেন। ওই দিন বিকেলে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পতাকা মিছিল বের করেছিলেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে এলে ছাত্রলীগ হামলা করে। ভয়ে শিক্ষার্থীরা দৌড়াতে থাকেন। তখন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল মাটিতে পড়ে যান। এরপর তাঁকে হাতুড়ি এবং লাঠি দিয়ে পেটান ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। হাতুড়ির আঘাতে তরিকুলের ডান পা মারাত্মক জখম হয়। ওই দিনই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক্স-রেতে দেখা যায়, তাঁর পায়ের হাড় আড়াআড়িভাবে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মাথায় কয়েকটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। পরিবার বলছে, পায়ের স্থানচ্যুত হাড় ঠিক জায়গায় না বসিয়ে ব্যান্ডেজ প্যাঁচানো অবস্থায় বৃহস্পতিবার তরিকুলকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল থেকে সহপাঠীরা তরিকুলকে একটি ভ্যানে করে নিয়ে যান রাজশাহী শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁর সহপাঠী মতিউর রহমান বলেন, প্রক্টর স্যার আশ্বাস দিয়েছিলেন চিকিৎসায় সহযোগিতা করবেন। কিন্তু সেটা তো দূরের কথা তরিকুলকে প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েও পাননি তাঁরা।
ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে গতকাল তরিকুলের পা, বুক, মেরুদণ্ডের এক্স-রেসহ সাতটি পরীক্ষা করানো হয় একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রে। সেখানে তাঁর সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। জানালেন, পা ছাড়াও পিঠ, কাঁধ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা।
তরিকুলের পায়ের গতকালের এক্স-রে ফিল্মের ছবি তুলে তা ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) একজন সহযোগী অধ্যাপককে দেখানো হয়। তিনি বলেন, রোগীর হাঁটুর নিচে পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। পা ফুলে গেছে। এর প্রধান চিকিৎসা অস্ত্রোপচার। সেটা করতে হবে পা ফোলা কমার পর।
এক্স-রে ফিল্মের ছবি দেখে একই কথা বলেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সাবেক এক সহকারী অধ্যাপকও। তিনি বলেন, রোগীর কেবল পায়ের হাড় ভাঙেনি, রক্তক্ষরণও হয়েছে। সেই ক্ষত শুকানো এবং ফোলা কমার আগে অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। তিনি বলেন, হাড় আড়াআড়িভাবে ভেঙে গেছে, এটা টেনে বসিয়ে শুধু প্লাস্টার করিয়ে দিলে থাকবে না, সরে যাবে। এ জন্য অস্ত্রোপচার করতে হবে।
0 মন্তব্যসমূহ