পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র
ফিড়িয়ে নিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে গুলতি আর পাথর। এমন ঘটনার জন্ম
দিয়েছে মেক্সিকোর উপকূলীয় পৌর শহর আলভারাদোর কর্তৃপক্ষ।
সঙ্ঘাত ও অপরাধ কবলিত এই শহরটিতে যেখানে
প্রতিনিয়ত পুলিশ বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করা দরকার, সেখানে উল্টো কেড়ে নেয়া
হয়েছে তাদের অস্ত্র। আর প্রাদেশিক সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ হিসেবেই
শহরটির মেয়ার পুলিশ বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন গুলতি আর পাথর। গুলতি দিয়ে
পাথর ছুড়েই এখন তাদের কাজ করতে হবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে।
অবশ্য ঘটনাটি নিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি হলেও
যথাযথ কারণও আছে এর- ভেরাক্রুজ প্রদেশের ছোট্ট শহর আলভারাদোর পুলিশ বাহিনীর
সদস্য সংখ্যা ১৩০ জন। সম্প্রতি এক ‘কন্ট্রোল টেস্টে’ দেখা গেছে তাদের
মধ্যে মাত্র ৩০ জন সঠিকভাবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে জানে, বাকি একশ জন
অস্ত্র তো ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেই না, এছাড়াও অনেকে আছে এমন যারা পুলিশ
বাহিনীতে চাকুরি করার মতো শারীরিকভাবে ফিটও নয়। এরপর ভারাক্রুজ প্রদেশের
গভর্ণর মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল উনেস লিনারেসের নিদের্শে তাদের অস্ত্র ফিরিয়ে
নেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয়।
কিন্তু এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য
প্রণোদিত বলে দাবি করছেন শহরটির মেয়র বোগার রুইজ রোসাস। তাইতো প্রতিবাদ
হিসেবে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন গুলতি আর পাথর। আলভারাদো শহরের মেয়র
বোগার রুইজ রোসাস বলেছেন, এখানকার পুলিশ বাহিনীর বেশিরভাগ সদস্যই নতুন
নিয়োগকৃত, যাদেরকে প্রাদেশিক পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেয়া দরকার; কিন্তু
তার আগেই তাদের দায়িত্ব পালন করতে পাঠানো হয়েছে। ফলে তারা অস্ত্র
ব্যবহারের দক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি।
মেয়র বলছেন, আগামী ১ জুলাই জাতীয় ও
প্রাদেশিক নির্বাচনের আগে উদ্দেশ্যমূলকভাবে পুলিশ বাহিনীর কাছ থেকে অস্ত্র
কেড়ে নেয়া হয়েছে। প্রাদেশিক গর্ভনর মিগুয়েল বিরোধী দল সমর্থক। তাই এই
সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে বলে দাবি মেয়রের।
আর প্রাদেশিক গর্ভনরের এই সিদ্ধান্তকে
রাজনৈতিক আখ্যা দিয়ে তিনি এর প্রতিবাদেই শুরু করেছন অভিনব কর্মসুচি। একটি
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পুলিশ বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন গুলতি আর পাথরের
টুকরা। ভারাক্রুজ রাজ্যটি গত এক দশক ধরেই সহিংসতা আর সঙ্ঘাতময়। গুম,
গণহত্যা, খুন সেখানে নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। গত এক দশকে প্রদেশটিতে খুন
হয়েছে অন্তত ২০ সাংবাদিক।
মেয়র যেখানে পুলিশের হাতে গুলতি ও পাথর
তুলে দেয়ার অনুষ্ঠান করেছেন তার ঠিক কাছেই কিছুদিন আগে একটি গণকবর থেকে
আবিষ্কৃত হয়েছে ৪৭টি মাথার খুলি।
আরো পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার নারী গুপ্তচর গ্রেপ্তার
যুক্তরাষ্ট্রে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় রাশিয়া সরকারের এক নারী গুপ্তচরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ২৯ বছর বয়সী ওই রুশ নারী গুপ্তচরের নাম মারিয়া বুটিনা। যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান দলের সাথে মারিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও সংগ্রহে রাখার অধিকারের পক্ষে কাজ করেন।
২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ রয়েছে,
তার সাথে মারিয়ার অভিযোগের সম্পর্ক নেই। তিনি রাশিয়ার উচ্চ পর্যায়ের
নেতাদের নির্দেশে কাজ করতেন। সোমবার মারিয়া বুটিনার আইনজীবী রবার্ট ড্রিসকল
এব বিবৃতিতে বলেন, তার মক্কেল ‘এজেন্ট’ নন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের
ছাত্রী, আর ব্যবসায় তিনি তার ক্যারিয়ার গড়তে চান।যুক্তরাষ্ট্রে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় রাশিয়া সরকারের এক নারী গুপ্তচরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ২৯ বছর বয়সী ওই রুশ নারী গুপ্তচরের নাম মারিয়া বুটিনা। যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান দলের সাথে মারিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও সংগ্রহে রাখার অধিকারের পক্ষে কাজ করেন।
আইনজীবী আরো বলেন, মারিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত। তিনি কোনো নীতি বা আইনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছেন সে বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই। মারিয়া বুটিনা থাকেন ওয়াশিংটনে। গত রোববার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আগামী বুধবার তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের শুনানি হবে।
কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (এফবিআই) স্পেশাল এজেন্ট কেভিন বলেন, মারিয়া বুটিনার দায়িত্ব ছিল মার্কিন রাজনীতিতে যাদের প্রভাব রয়েছে, তাদের সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ তৈরি করা এবং তা কাজে লাগানো। এর মধ্যে রাশিয়ার স্বার্থ চরিতার্থ করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। ফরেন এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী কেউ যুক্তরাষ্ট্রে গোয়েন্দা তৎপরতা চালালে তাকে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু মারিয়া তা করেননি। মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয় বলছে, যেসব সংগঠন আগ্নেয়াস্ত্রের অধিকারের পক্ষে কাজ করে, তাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করেন মারিয়া।
0 মন্তব্যসমূহ