বাঁশখালীতে অনুমোদন ছাড়া বিশুদ্ধ পানির অবৈধ কারখানা


বিএন ডেস্কঃ বাঁশখালীতে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়া চালু করা হয়েছে ‘ওশান গ্রীণ ড্রিংকিং ওয়াটার’ নামে বিশুদ্ধ পানির অবৈধ কারখানা। অথচ দোকান ও বাসাবাড়িতে সরবরাহ করা পানির জারে বিএসটিআইয়ের লোগো ও রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সম্বলিত স্টিকার লাগানো হয়েছে। পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের নেয়াজর পাড়ার মৌলানা আবুল হোছন সড়কে এ কারখানাটি স্থাপন করা হলেও এটির কোনধরনের লাইসেন্স নেই বলে জানিয়েছেন বিএসটিআই কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) সহকারী পরিচালক মোস্তাক আহমদ পূর্বদেশকে বলেন, ‘ওশান গ্রীণ নামে কোন প্রতিষ্ঠান আমাদের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়নি। এর কারখানার কোন লাইসেন্স নাই। এভাবে বিশুদ্ধ পানির নামে জারে করে পানি বিক্রি করা অনৈতিক। আমাদের অনুমোদন ছাড়া যদি লোগো ও রেজিস্ট্রেশন নাম্বার লাগানো হয় তা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। আমরা শিগগির এ প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করবো। ভ্রাম্যমান আদালত চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে আইনের আওতায় আনা হবে।’ বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার পূর্বদেশকে বলেন, ‘অবৈধ কোনকিছুতেই ছাড় দেয়া হবে না। প্রতিষ্ঠানটি অবৈধ প্রমাণিত হলে অবশ্যই বন্ধ করে দেয়া হবে।’ ওশান গ্রীণ ড্রিংকিং ওয়াটার নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে পরিচিত শহিদুল আলম পূর্বদেশকে বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে আমরা ১২জনের শেয়ার আছে। প্রতিষ্ঠানটি বৈধ নাকি অবৈধ জানি না। তবে যে মেশিনটি দিয়ে পানি আয়রনমুক্ত করি সেটি বৈধ। আপনি নিউজ করলেও করতে পারেন। আমি নিউজের প্রতিবাদ দিব।’ বিএসটিআইয়ের অনুমোদন না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএসটিআইয়ের কাছে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি। হয়তো আগামী মাসেই অনুমোদন পাব। এর আগে বিএসটিআইয়ের কোনো লোগো ও রেজিস্ট্রেশন নাম্বার পানির জারে লাগানো হয়নি।’ পরে এ প্রতিবেদককে ফোন করে তিনি বলেন, ‘আপনি আমার সাথে দেখা করেন। পত্রিকায় নিউজ আসলে প্রশাসন আমাদের ক্ষতি করবে। কারণ, প্রশাসন আসলেই টাকা দিতে হয়।’ সরেজমিনে দেখা যায়, মিয়া বাজারের অর্ধ কিলোমিটার পশ্চিমে মৌলানা আবুল হোছন সড়কের পাশে কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করেছেন কয়েকজন অসাধু সিন্ডিকেট। কারখানার দরজা সবসময় বন্ধ রাখা হয়। কেউ ভিতরে ঢুকতে চাইলেও বাধা দেয়া হয়। সেখানে কয়েকটি ট্যাংক রেখে পানি সংরক্ষণ করা হয়। এসব ট্যাংকের পানি পরবর্তীতে জারে করে বিক্রি করা হয়। তবে পানির উৎস হিসেবে নলকূপের পানি ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। উপজেলা সদরের নামিদামি কয়েকটি হোটেল, ফাস্টফুডের দোকান ও বাসাবাড়িতে পানির জারগুলো সরবরাহ করা হয়। জারের উপর একটি স্টিকার লাগানো হলেও সেটাতে কোনধরনের উৎপাদনের তারিখ উল্লেখ নেই। তবে মেয়াদ লেখা আছে উৎপাদনের তারিখ হতে এক মাস। নেয়াজর পাড়া এলাকার বাসিন্দা আনছুর আলী পূর্বদেশকে বলেন, নলকূপের পানি জারে ভরে মিনারেল ওয়াটারের নামে বিক্রি করা হয়। নলকূপটি বসানোর কারণে আশপাশের এলাকায় অন্যান্য নলকূপগুলোতে পানি উঠছে না। যে কারণে এলাকায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। অবৈধ কারখানাটি বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পানির জারগুলো সরবরাহ করছিলেন আসহাব উদ্দিন নামে এক ভ্যানচালক। উপজেলা সদরে প্রধান সড়কে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় পানির বোতলগুলো পৌঁছে দিই। এখন যে জারগুলো নিয়ে যাচ্ছি তা গ্রীণচিলি হোটেলের জন্য। এ পানির কারখানাতেও গ্রীণচিলির মালিকের শেয়ার আছে।
/দৈনিক পূর্বদেশ!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ