বিএন ডেস্কঃ
জাতীয় নির্বাচনের বাকি আর মাত্র তিন মাস। শাসক দল আওয়ামী লীগ যেখানে ওই
নির্বাচনকে সামনে রেখে নানামুখী প্রচারণা এবং ফের ক্ষমতায় আসার কৌশল
নির্ধারণে ব্যস্ত; সেখানে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি রয়েছে
চতুর্মুখী চাপে। পদে পদে হয়রানির শিকার হওয়ায় নির্বাচন ইস্যুতে দলটি ফোকাস
দেয়ার কোনো সুযোগ পাচ্ছে না। দলটির প্রধান বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির একটি
মামলায় ছয় মাসের বেশি সময় ধরে কারাভোগ করছেন। দলের শীর্ষপর্যায়ের আরো
কমপক্ষে দুই ডজন নেতা জেলে রয়েছেন কিংবা মামলার কারণে দেশের বাইরে থাকতে
বাধ্য হচ্ছেন।
বেগম খালেদা জিয়া যে মামলায় কারাভোগ করছেন, সেটিতে জামিন পাওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনের আগে তার মুক্তি মিলবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে রয়েছে বিএনপি। দলীয় প্রধানের মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেয়ার মতও আছে দলটিতে।
নির্বাচনী বছরে অনেকটাই সঙ্কুচিত করে রাখা হয়েছে বিএনপির সভা-সমাবেশের অধিকার। ঘরোয়া বৈঠকও রাখা হয়েছে কঠোর প্রহরার মধ্যে। মামলার কারণে এই আদালত, এই কারাগারÑ এভাবে দিন কাটছে বহু নেতা-কর্মীর। আন্দোলনের মাঠে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারেনÑ এমন সব নেতাও রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠিন প্রহরার মধ্যে।
রাজনীতি বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনী বছরে একটি বড় দলকে এমনভাবে কোণঠাসা করে রাখা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে বড় বাধা। তাদের মতে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একটি বিতর্কিত নির্বাচনের প্রেক্ষিত থাকার পরেও একাদশ নির্বাচন নিয়ে সরকারি দলের মধ্যে কট্টর অবস্থার পরিবর্তন না হওয়া অশনি সঙ্কেত।
আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একাদশ সংসদ নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। সে হিসেবে নির্বাচনের খুব একটা সময় নেই। নির্বাচন প্রস্তুতির এই সময় রাজনীতির মাঠ দারুণভাবে অসমান্তরাল। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা তুমূল শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা এক বছর আগে থেকেই নির্বাচনী সমাবেশ করছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও রয়েছেন নির্বাচনী মাঠে। ঠিক বিপরীত চিত্র বিএনপিতে।
বিএনপিপ্রধান বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় দলটির নির্বাচন প্রস্তুতিতে বড় ধরনের ছন্দপতন ঘটেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির একটি মামলায় কারাদণ্ড হয় বেগম জিয়ার। এর ফলে চেয়ারপারসনের মুক্তি দাবি এখন দলটির প্রধান এজেন্ডা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এ দাবিতে দলটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়েও মাঠে নামতে পারছে না। গত তিন-চার মাসে বিএনপির কর্মসূচিতে আরো বেশি বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকায় বলতে গেলে কোনো কর্মসূচিরই অনুমতি পাচ্ছে না তারা। ঢাকার বাইরে যেসব সমাবেশ হচ্ছে, তাও বিধিনিষিধে মোড়া।
বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন দলীয় পরিসংখ্যান তুলে ধরে নয়া দিগন্তকে বলেন, গত সাড়ে ৯ বছরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৬০ হাজার। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ২০ লাখ। ইতোমধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার নেতাকর্মী জেল খেটেছেন। তিনি বলেন, বিএনপির ৩ হাজার নেতাকর্মীকে এই সময়ে খুন করা হয়েছে। গুম করা হয়েছে ৭২৮ জনকে। গুম হওয়া কিছু নেতাকর্মীর লাশ পাওয়া গেলেও অধিকাংশেরই কোনো হদিস নেই। বিএনপির তথ্য অনুযায়ী, বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের পর গ্রেফতার করা হয়েছে ১০ হাজার নেতাকর্মীকে। বেগম খালেদা জিয়া ছাড়াও সিনিয়র নেতাদের মধ্যে প্রায় দুই ডজন নেতা কারাগারে রয়েছেন কিংবা দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এদের মধ্যে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারতে, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ড. ওসমান ফারুক যুক্তরাষ্ট্রে, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ বিদেশে, আব্দুস সালাম পিন্টু জেলে, উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে, যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী জেলে, আন্তর্জাতিক সম্পাদক এহছানুল হক মিলন যুক্তরাষ্ট্রে, নাসির উদ্দিন অসীম লন্ডনে, সহসাংগঠনিক সম্পাদক নান্নু জেলে, নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবর জেলে, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম এ কাইয়ুম মালয়েশিয়ায়, মহানগর দক্ষিণের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব জেলে এবং যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু কারাগারে রয়েছেন। ঢাকা মহানগরে কোনো নেতাই বাসায় থাকতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার।
পুলিশের গ্রেফতার অভিযানের বাইরে দলের সিনিয়র বহু নেতা দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশন) জালে রয়েছেন। তাদেরকে আদালতে যেমনি হাজিরা দিতে হচ্ছে, দুদকের তলবিতেও সাড়া দিতে হচ্ছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও দল পুনর্গঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো: শাহজাহান নয়া দিগন্তকে বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নয়, সরকার বিরোধী দলকে নির্মূল করার এজেন্ডা হাতে নিয়ে ফের ক্ষমতায় আসার নীলনকশা প্রণয়ন করছে। দেশের জনগণ যেখানে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে, সেখানে সরকার আবারো ভোটছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায়। বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সব ধরনের দাবি আদায়ের পক্ষে রয়েছে। কিন্তু যেভাবে বিরোধী দলকে হেনস্তা করা হচ্ছে, তাতে করে তাদের আন্দোলন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা ছাড়া উপায় নেই।
বেগম খালেদা জিয়া যে মামলায় কারাভোগ করছেন, সেটিতে জামিন পাওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনের আগে তার মুক্তি মিলবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে রয়েছে বিএনপি। দলীয় প্রধানের মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেয়ার মতও আছে দলটিতে।
নির্বাচনী বছরে অনেকটাই সঙ্কুচিত করে রাখা হয়েছে বিএনপির সভা-সমাবেশের অধিকার। ঘরোয়া বৈঠকও রাখা হয়েছে কঠোর প্রহরার মধ্যে। মামলার কারণে এই আদালত, এই কারাগারÑ এভাবে দিন কাটছে বহু নেতা-কর্মীর। আন্দোলনের মাঠে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারেনÑ এমন সব নেতাও রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠিন প্রহরার মধ্যে।
রাজনীতি বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনী বছরে একটি বড় দলকে এমনভাবে কোণঠাসা করে রাখা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে বড় বাধা। তাদের মতে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একটি বিতর্কিত নির্বাচনের প্রেক্ষিত থাকার পরেও একাদশ নির্বাচন নিয়ে সরকারি দলের মধ্যে কট্টর অবস্থার পরিবর্তন না হওয়া অশনি সঙ্কেত।
আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একাদশ সংসদ নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। সে হিসেবে নির্বাচনের খুব একটা সময় নেই। নির্বাচন প্রস্তুতির এই সময় রাজনীতির মাঠ দারুণভাবে অসমান্তরাল। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা তুমূল শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা এক বছর আগে থেকেই নির্বাচনী সমাবেশ করছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও রয়েছেন নির্বাচনী মাঠে। ঠিক বিপরীত চিত্র বিএনপিতে।
বিএনপিপ্রধান বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় দলটির নির্বাচন প্রস্তুতিতে বড় ধরনের ছন্দপতন ঘটেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির একটি মামলায় কারাদণ্ড হয় বেগম জিয়ার। এর ফলে চেয়ারপারসনের মুক্তি দাবি এখন দলটির প্রধান এজেন্ডা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এ দাবিতে দলটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়েও মাঠে নামতে পারছে না। গত তিন-চার মাসে বিএনপির কর্মসূচিতে আরো বেশি বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকায় বলতে গেলে কোনো কর্মসূচিরই অনুমতি পাচ্ছে না তারা। ঢাকার বাইরে যেসব সমাবেশ হচ্ছে, তাও বিধিনিষিধে মোড়া।
বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন দলীয় পরিসংখ্যান তুলে ধরে নয়া দিগন্তকে বলেন, গত সাড়ে ৯ বছরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৬০ হাজার। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ২০ লাখ। ইতোমধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার নেতাকর্মী জেল খেটেছেন। তিনি বলেন, বিএনপির ৩ হাজার নেতাকর্মীকে এই সময়ে খুন করা হয়েছে। গুম করা হয়েছে ৭২৮ জনকে। গুম হওয়া কিছু নেতাকর্মীর লাশ পাওয়া গেলেও অধিকাংশেরই কোনো হদিস নেই। বিএনপির তথ্য অনুযায়ী, বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের পর গ্রেফতার করা হয়েছে ১০ হাজার নেতাকর্মীকে। বেগম খালেদা জিয়া ছাড়াও সিনিয়র নেতাদের মধ্যে প্রায় দুই ডজন নেতা কারাগারে রয়েছেন কিংবা দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এদের মধ্যে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারতে, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ড. ওসমান ফারুক যুক্তরাষ্ট্রে, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ বিদেশে, আব্দুস সালাম পিন্টু জেলে, উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে, যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী জেলে, আন্তর্জাতিক সম্পাদক এহছানুল হক মিলন যুক্তরাষ্ট্রে, নাসির উদ্দিন অসীম লন্ডনে, সহসাংগঠনিক সম্পাদক নান্নু জেলে, নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবর জেলে, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম এ কাইয়ুম মালয়েশিয়ায়, মহানগর দক্ষিণের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব জেলে এবং যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু কারাগারে রয়েছেন। ঢাকা মহানগরে কোনো নেতাই বাসায় থাকতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার।
পুলিশের গ্রেফতার অভিযানের বাইরে দলের সিনিয়র বহু নেতা দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশন) জালে রয়েছেন। তাদেরকে আদালতে যেমনি হাজিরা দিতে হচ্ছে, দুদকের তলবিতেও সাড়া দিতে হচ্ছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও দল পুনর্গঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো: শাহজাহান নয়া দিগন্তকে বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নয়, সরকার বিরোধী দলকে নির্মূল করার এজেন্ডা হাতে নিয়ে ফের ক্ষমতায় আসার নীলনকশা প্রণয়ন করছে। দেশের জনগণ যেখানে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে, সেখানে সরকার আবারো ভোটছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায়। বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সব ধরনের দাবি আদায়ের পক্ষে রয়েছে। কিন্তু যেভাবে বিরোধী দলকে হেনস্তা করা হচ্ছে, তাতে করে তাদের আন্দোলন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা ছাড়া উপায় নেই।
0 মন্তব্যসমূহ