বিএন ডেস্কঃ
যাত্রী চাপ যতই বাড়ছে ফেরি সংকট ও নাব্যতা সংকট ততই বেড়ে যাচ্ছে। আর
নাব্যতা সংকট কাটিয়ে যাত্রী ও পরিবহন পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছে
বিআইডব্লিউটিএ।
সোমবার দুপুরে যাত্রী চাপ বেড়ে গেলে বিআইডাব্লিউটিএ নতুন একটি বিকল্প
পথে ৪টি ডাম্প ফেরি ও দুটি রো রো ফেরি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে।
তবে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ৮টি ড্রেজার দিয়ে লৌহজং চ্যানেলমুখ থেকে যে
চ্যানেলটি তৈরি করতে ড্রেজিং করা হচ্ছে সেটি কোনোভাবেই চালু করতে পারছে না
কর্তৃপক্ষ।
কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নাব্যতা সংকটের কারণে
কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া
নৌরুটে আটকে আছে ৫ শতাধিক যানবাহন। এর মধ্যে বেশির ভাগই প্রাইভেটকার ও
মাইক্রোবাস।
ঢাকার উদ্দেশে যাত্রীদের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে এসে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ঈদের দুই সপ্তাহ আগে নাব্যতা সংকট চরম আকার ধারণ করে। এতে করে ফেরি মাঝ
নদীতে আটকে পড়ছে। ফেরিগুলো তার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অর্ধেক যানবাহন ও যাত্রী
নিয়ে কোনোমতে চলছে।
নদীর তলদেশের বালু ঘেঁষে চলছে ফেরিগুলো। যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা নদীর
মাঝে আটকে থাকছে। প্রথম দিকে সকল ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। পরে শুধুমাত্র ছোট
ফেরি চলাচল শুরু করে।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে কাঁঠালবাড়ি ঘাট এলাকায় গেলে যাত্রীরা ফেরি না
পাওয়ার কষ্ট আর পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে যেতে পারার নতুন অনুভূতির কথা বলেন।
ঘাটে আটকেপড়া যাত্রীরা জানান, ঈদের দুই সপ্তাহ আগে নাব্য সংকট চরম আকার
ধারণ করে। প্রথমদিকে সকল ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। সকাল থেকে ৫-৬টি ছোট ও
মাঝারি ফেরি নদীর তলদেশ ঘেঁষে ধারণ ক্ষমতার হালকা যানবাহন নিয়ে কোনোমতে
চলছে। নাব্য সংকট ফিরিয়ে আনতে খনন কাজ চালিয়ে ঈদের ৩-৪ দিন আগে সকল ফেরি
চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়। ঈদের পর ফের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের চ্যানেল
মুখে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট। এর কারণে ফেরি চলাচলে অচলাবস্থা সৃষ্টি
হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার যাত্রীকে।
পদ্মা উত্তাল তাই লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। তাই কষ্ট হলেও
ফেরিতে যেতেই অপেক্ষা করছে সবাই। খননকাজ চালিয়ে ফেরি চলাচল কিছুটা
স্বাভাবিক রাখলেও ঢাকামুখী যানবাহন ও যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ এখন চরমে।
বরিশাল থেকে আসা যাত্রী প্রকৌশলী মো: কামাল হোসেন জানান, শ্বশুরবাড়ি ঈদ
করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এখন ফিরে যাওয়ার সময় অতিরিক্ত কষ্ট হচ্ছে।
যাত্রীদের চাপে ফেরিতে কোনো পরিবহনই উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই প্রাইভেটকার
রেখেই সাধারণ যাত্রী হয়ে ফেরিতে চলে যাচ্ছি। ড্রাইভার পরে সুবিধামতো গাড়ি
পাড় করে নিয়ে আসবে। আর ফেরিতে বসা তো দূরের কথা দাঁড়ানোর মতো সামান্য একটু
জায়গা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ৮৭টি লঞ্চ ২ শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে ও ১৭টি ফেরির মধ্যে বেশির ভাগ ফেরিই বন্ধ রয়েছে।
কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ব্যবস্থা আবদুস সালাম মিয়া জানান, রোববার দুপুর থেকে
কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট থেকে শরীয়তপুরের মাঝিকান্দি-পালেরচর হয়ে যাত্রা শুরু
করে বেশ কয়েকটি ফেরি। শাহপরানসহ ২টি রো রো ফেরি এবং ৫টি ডাম্প ফেরি চালু
করা হয়। পদ্মা সেতুর স্প্যানের নিচ দিয়ে গিয়ে শিমুলিয়া থেকে প্রায় ৫
কিলোমিটার ভাটিতে মূল পদ্মায় গিয়ে পৌঁছে। সেখান থেকে উত্তাল পদ্মা পাড়ি
দিয়ে শিমুলিয়া প্রান্তে পৌঁছে ফেরিগুলো। এতে ফেরি গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায়
তিনগুণ সময় লাগে। আগে কাঁঠালবাড়ি থেকে শিমুলিয়া পৌঁছাতে যেখানে সময় লাগে
মাত্র এক ঘণ্টা। সেখানে নতুন ওই বিকল্প নৌ-পথে সময় লাগছে প্রায় ৩ থেকে সোয়া
তিন ঘণ্টা। এতে করে যাত্রীদের অনেক বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ