বিএন ডেস্কঃ
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২
সেপ্টেম্বর থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সিনারফ্যাক্স কোম্পানির এসপিপিএ
অনলাইন সিস্টেম। নতুন অনলাইন সফটওয়্যার চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত ৩
সেপ্টেম্বর থেকেই ‘ম্যানুয়েলি কলিং ভিসা’ চালুর কথা উল্লেখ করে
শ্রমিকসংক্রান্ত ২৮টি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দেশটির
শ্রম মন্ত্রণালয়।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে গতকাল শুক্রবার
প্রতিষ্ঠিত এক বাংলাদেশী ব্যবসায়ী নিজের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে নয়া
দিগন্তকে বলেন, আমি এই মুহূর্তে মালয়েশিয়া সরকারের সাথে ওতপ্রোতভাবে
সম্পৃক্ত। আমি যতটুকু জানি, ২ সেপ্টেম্বর থেকে সিনারফ্যাক্স কোম্পানির
এসপিপিএ সিস্টেমটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি
মালয়েশিয়ার শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে ২৮টি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছে পাঠানো
হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দাতো মোহাম্মদ জেফরি বিন জোয়াকিম স্বাক্ষরিত এই
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২ সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ার লেবার মিনিস্ট্রি,
(শ্রম মন্ত্রণালয়) অন্যান্য মন্ত্রণালয়সহ ওয়ার্কার সম্পর্কিত যেসব
ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি জড়িত রয়েছে, তাদের সাথে সিনারফ্যাক্স কোম্পানির
এসপিপিএ সিস্টেমের আর কোনো সম্পর্ক থাকছে না। এটা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।
আর এটি বন্ধ হওয়ার কারণে ৩ সেপ্টেম্বর থেকেই অনলাইন পদ্ধতিতে ইন্স্যুরেন্স
আর জমা করা যাবে না। তবে ওইদিন থেকে নিয়োগকারী কোম্পানির মালিকেরা
ম্যানুয়েলি ইন্স্যুরেন্সের ফটোকপি কেডিএনে কলিং ভিসার জন্য জমা করতে পারবে।
ইন্স্যুরেন্স
কোম্পানিগুলো হচ্ছেÑ আমেরিকান ইন্স্যুরেন্স এন্স্যুরেন্স বারহাদ, এক্সা
আফিন জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এআইজি মালয়েশিয়া ইন্স্যুরেন্স, বারজায়া সমপো
ইন্স্যুরেন্স বারহাদ, চুব ইন্স্যুরেন্স, এএম জেনারেল, লোনপ্যাক
ইন্স্যুরেন্স বারহাদ, জুরিচ ইন্স্যুরেন্স মালয়েশিয়া বারহাদ, জুরিচ তাকাফুল
মালয়েশিয়া বারহাদ, ইতিকা ইন্স্যুরেন্স, এমপিআই জেনারেল ইন্স্যুরেন্স,
এমএসআইজি, তুন ইন্স্যুরেন্স, গ্রেট ইস্টার্ন জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, দ্য
প্যাসেফিক ইন্স্যুরেন্স, প্যাসিফিক অ্যান্ড ওরিয়েন্ট ইন্স্যুরেন্স কো
বারহাদ, প্রোগ্রেসিভ ইন্স্যুরেন্স, কিউবি ইন্স্যুরেন্স, আরএইচবি
ইন্স্যুরেন্স, সায়ারিকাত তাকাফুল, তাকাফুল ইখলাস বারহাদ, ইতিকা তাকাফুল
বারহাদ, টোকিও মেরিন ইন্স্যুরেন্স, লিবার্টি ইন্স্যুরেন্স বারহাদ,
এমসিআইএস, হংলিয়ং এমএসআইজি তাকাফুল বারহাদ, প্রুডেনশিয়াল বিএসএন তাকাফুল
বারহাদ।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা
গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে ঢাকায়
বিভ্রান্তিকর রিপোর্ট, আবার টিআইবি ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে রি-অ্যাকশন
দিয়েছে। একেকজন একেক কথা বলে যাচ্ছে। আমরা হাইকমিশনের হয়ে কিচ্ছু জানলাম
না, এখানকার সরকার দুই লাইনের একটা চিঠি দিয়ে আমাদের কাউকে কিছু জানালো না।
বাংলাদেশে মার্কেট বন্ধের খবরটা কিভাবে প্রচার হলো? এসব দেখে আমার কাছে
মনে হয় মালয়েশিয়ার সরকার খুবই বিরক্ত।
এর আগে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের
হাইকমিশনার মো: শহীদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে
বলেন, এই মুহূর্তে আমি ছুটিতে আছি। এখনই কিছু বলতে পারছি না।
তবে
হাইকমিশনের শ্রম বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, আগামী সপ্তাহে মালয়েশিয়া
সরকারের সাথে আমাদের শ্রমবাজারের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা
রয়েছে। তিনি শ্রমবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে শুধু এটুকুই বলেন,
বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে যেটি অধিকতর ভালো সেটি এবার তারা
করতে চাচ্ছে। মালয়েশিয়া গভর্নমেন্ট এবার আরো সুশৃঙ্খলভাবে সব দেশের
ক্ষেত্রে যাতে একই ধরনের সিস্টেম ফলো করা হয় এবং সেই সিস্টেমের আওতায়
বাংলাদেশ তাদের স্বার্থসংরক্ষণ করে যাবতীয় কাজ এক সাথে করবে। মোট কথা একটা
ইউনিফাইড সিস্টেম হতে যাচ্ছে। এর ভেতরে আরো অনেক কথা আছে যেগুলো রাষ্ট্রীয়
স্বার্থে এখনই বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। এক প্রশ্নের উত্তরে ওই
কর্মকর্তা বলেন, প্রায় পৌনে এক লাখের মতো ভিসার এপ্রুভাল হয়ে অলরেডি
বাংলাদেশে চলে গেছে। প্রতিদিন যদি এসব শ্রমিকের মধ্যে গড়ে ৬০০ জন করেও ফাই
করে, তাহলে তাদের মালয়েশিয়ায় আসতেও তো কমপক্ষে চার থেকে ছয় মাস সময় লেগে
যাবে। তাহলে চিন্তার কি আছে?
0 মন্তব্যসমূহ