৪ অক্টোবর লালদীঘিতে সমাবেশের ঘোষনা চট্টগ্রাম বিএনপির

মোহাম্মদ এরশাদঃ
কোন প্রকার অভিযোগ ছাড়াই চট্টগ্রামে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা এবং গ্রেফতারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।

শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা: শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বিনাভোটে স্বনির্বাচিত ক্ষমতালিপ্সু সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের গুম, খুন, মামলা হামলার পর এখন নতুন এক কৌশলে গায়েবী মামলা দিয়ে হয়রাণীর পথ বেঁচে নিয়েছে। তারা বিএনপিকে নির্মূল করে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে নানাবিধ অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে।।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, প্রতিহিংসার বশবর্তি হয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত এক সাজানো মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা অভিযোগে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে নির্জন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। অসুস্থ খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থ না নিয়ে সরকার তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও সরকারী নির্দেশে তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না।

অনুগত নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের সহায়তায় জাতীয় সংসদসহ সবগুলো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দখল করে রেখেছে সরকার। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য রাষ্ট্রীয় সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং জনগণের মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে হুমকীর মুখে পদত্যাগ ও দেশত্যাগে বাধ্য করে গোটা বিচার বিভাগকে অনুগত করার অভিযোগে আজ বর্তমান সরকার দেশবাসীর কাছে অভিযুক্ত। সরকারের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলা কিংবা লেখালেখি আজ বিরোধী দল ও সচেতন জনগণ এমনকি লেখক সাংবাদিকদের জন্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ ।

সরকার আসন্ন নির্বাচনের আগে তাদের এমপি মন্ত্রীদের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাটের কাহিনী প্রকাশ করতে না পারার জন্য দুরভিসন্ধিমূলকভাবে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ করেছে। এই আইনের মাধ্যমে সরকার গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরেছে। আমরা এই আইন বাতিল করার দাবী জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমরা যে বিষয়টি উল্লেখ করতে চাই তা হচ্ছে, বর্তমান অবৈধ সরকার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন তারপরও শহীদ জিয়ার এই দলকে কোনভাবে দমাতে না পেরে বিএনপির তৃণমূলের নেতৃবৃন্দকে মানসিক হয়রাণীর পথ বেচে নিয়েছে।

গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মহাসমাবেশে জনগণের স্বত:স্ফূর্ত উপস্থিতি দেখে সরকার দিশেহারা হয়ে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের নামে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে গায়েবী মামলা ও গণগ্রেফতার অভিযান শুরু করে। চট্টগ্রামের প্রতিটি থানায় মিথ্যা কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এখনো অব্যাহত রেখেছে।

গত ১০ দিনে শুধু চট্টগ্রামে ২০ টির অধিক নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ সব মামলায় পুলিশ রাতের আধারে হানাদার বাহিনীর মতো গুমন্ত নেতাকর্মীদের বাসবাড়ী থেকে অমনাবিকভাবে গ্রেফতার করে নাশকতার ষড়যন্ত্রের মামলায় কারাগারে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এই পর্যন্ত চট্টগ্রামে শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সব মামলা থেকে আইনজীবিসহ পেশাজীবী নেতারাও রেহাই পাচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বিলম্ব করার সরকারী অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার এবং অন্যান্য সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবী করছি। বহুদলীয় গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দল ও দেশবাসীর প্রতি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে পুনরায় বিনাভোটে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানাচ্ছি।

এদিকে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি, গায়েবী মামলা প্রত্যাহার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আগামী ৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) লালদীঘি ময়দানে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছে মহানগর বিএনপি।

এ জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়ার আগেই দলীয়ভাবে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তবে নেতারা আশাবাদী, সমাবেশের জন্য প্রশাসন সহযোগিতা করবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম,নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর ও নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান প্রমুখ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ