৭ অক্টোবর দেশব্যাপী বিক্ষোভ


বিএন ডেস্কঃ
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ দমন-নিপীড়ন, হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা ও গণগ্রেফতার বন্ধ করে নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তারা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিরোধীদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন অব্যাহত রেখে সরকার আরেকটি একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে।
 মঙ্গলবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় গৃহীত প্রস্তাবে এ আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়।
প্রস্তাবে আরো বলা হয় প্রধানমন্ত্রী বিদেশে বলে এসেছেন, দেশে নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। অথচ তার সরকার দেশে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতারসহ নানাভাবে দমন-নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে।
সাতক্ষীরায় বাম জোট নেতা অ্যাড. খগেন্দ্র নাথ ঘোষ, অধ্যাপক প্রশান্ত রায় ও নিত্যানন্দ সরকারকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মিথ্যা মামলায় এখনও আটক রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আটক রয়েছে চট্টগ্রামের ছাত্র ফেডারেশনের নেতা মারুফ হোসেন। ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মাইদুল ইসলামকে।
আলোকচিত্রি শহীদুল আলমকে এখনও মুক্তি দেয়া হয়নি। প্রস্তাবে বলা হয় জুলুম, সন্ত্রাস ও নিপীড়নকে মহাজোট সরকার তাদের শাসনের বৈশিষ্ট্যে পরিণত করেছে। সভার প্রস্তাবে মহাজোট সরকারের জেল-জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়।
সিপিবি কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাসদ এর কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরাজ, বাসদ (মার্কসবাদী) এর কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, সাজ্জাদ জহির চন্দন, আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, রুহিন হোসেন প্রিন্স, আকবর খান, আলমগীর হোসেন দুলাল, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, ফিরোজ আহমেদ, মমিনুর রহমান বিশাল প্রমুখ।
এদিকে আগামী ৭ অক্টোবর, রবিবার জেল-জুলুমের প্রতিবাদ ও বন্দি মুক্তির দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ওই দিন বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ দিবসের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
আরো পড়ুন : মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে জাতীয় ঐক্য চান ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সাম্যবাদী দলের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহবান জানান।


সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দলের পলিটব্যুরোর সদস্য মো. লুৎফর রহমান ও বিরেন সরকারসহ কেন্দ্রীয় ১৪ দলের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ আমরাও জাতীয় ঐক্য চাই। সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, নষ্ট রাজনীতিক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে আমরাও জাতীয় ঐক্য চাই।’
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। কারণ মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে ও আমাদের অস্তিত্বকে রক্ষা করতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরিহার্য। আর দেশের মানুষ তাঁর ওপর আস্থাশীল।
কাদের বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসেন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিশ্বাস করেন, তারা নিজেদের মধ্যে সামান্য ভুল বুঝাবুঝির জন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে দুর্বল করবেন না। কারণ দুর্বলতার সময় শত্রুরা আঘাত করে।
তিনি বলেন, দেশের কয়েকজন নেতা যতটা না আওয়ামী লীগ বিরোধী, তার চেয়ে তারা বেশী শেখ হাসিনা বিদ্বেষী। তারা আওয়ামী লীগকে নয়, শেখ হাসিনাকে হটাতে চায়।
কাদের বলেন, ‘বিদেশে যে চক্রান্ত হচ্ছে তার মূল টার্গেট বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে হত্যা করারও পাঁয়তারা করছেন তারা। আবারো তাকে ঘিরে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’
দেশের বামপন্থী রাজনীতিকরা যে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে কোনো ধরনের ঐক্যে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা দেশের রাজনীতির একটি বড় ধরনের গুনগত পরিবর্তন বলেও উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে হয়রানী মূলক মামলা দেয়া হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগের জবাবে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা চাই না কারো বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা হোক। পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে বিএনপি-জামায়াত ২০১৪ সালের মতো নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, পুলিশ এ ধরনের তথ্যের ভিত্তিতে মামলা করলে তাকে হয়রানীমূলক মামলা বলা যায় না। কারণ যে কোন ধরনের নাশকতার তথ্য থাকে গোয়েন্দাদের কাছে, আওয়ামী লীগের কাছে নয়।
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা প্রয়োজনে আদালতে যান, নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করুন। আদালত নিরপেক্ষ ও স্বাধীন।
দিলীপ বড়ুয়া বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশের আদর্শের সঙ্গে সবসময় বেঈমানী করেছে এবং সুযোগ পেলে ভবিষ্যতেও করবে। তাদের দিয়ে দেশের কোনো উন্নয়ন হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপিকে পরিচালিত করে তারেক রহমান, আর তারেক রহমানকে পরিচালিত করে জামায়াত। আর তাদের গণতন্ত্র হচ্ছে যে কোনো মূল্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিসর্জন দেয়া।
দিলীপ বড়ুয়া বলেন, তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করতে হবে। কারণ টেকসই উন্নয়নের জন্য টেকসই নেতৃত্ব দরকার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ