বি,এন ডেস্কঃ
নিয়মিত দান খয়রাত করেন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। রমজানের ঈদে এলাকার গরীব
লোকজনকে নতুন কাপড়-চোপড়ও দেন। শঙ্খতীরের ধোপাছড়ির গ্রামে রয়েছে চারপাশে
ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) নিয়ন্ত্রিত দোতলা নিজস্ব বাড়ি। দুই
একর জমিজুড়ে রয়েছে মাছের খামার। একাধিক সিএনজিচালিত ট্যাক্সিরও মালিক।
চলাফেরা করেন প্রাইভেট কারে। বিলাসবহুল চলাফেরা অর্থসম্পদ সবই করেছেন চুরির
টাকায়। তিনি হলেন, চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব ধোপাছড়ি গ্রামের
সুন্দরকুল গ্রামের মৃত জান বক্সের ছেলে বদিউল হক ওরফে নাছির। এলাকার লোকজন
জানেন চট্টগ্রামে ব্যবসা করেন নাছির। চলতি বছরের ২৩ মে আগ্রাবাদ শেখ মুজিব
রোডের সিএন্ডএফ টাওয়ারের চতুর্থ তলায় কিউসি মেরিটাইম লিমিটেড, কিউসি
লজিস্টিক ও আরকে ক্যাপিটাল লিমিটেড নামে তিনটি প্রতিষ্ঠানে একই রাতে চুরির
ঘটনা ঘটেছে। তিন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় বিশ লাখ টাকা নিয়ে যায় চোরের দল।
ভবনটির ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে সম্প্রতি পূর্ব ধোপাছড়ি
গ্রামের আবছার উদ্দিনের ছেলে মো. হেলালকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে ডবলমুরিং
থানা পুলিশ। হেলাল পেশাদার চোর নাছিরের ভাগিনা। এর আগে গত ২১ এপ্রিল রাত
আটটায় আগ্রাবাদ স্ট্যান্ড রোডে বারেকবিল্ডিং চেয়ারম্যান মেরিন
ইলেক্ট্রনিক্স সার্ভিস নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি করে।
ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (ওসি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম জানান, নাছির পেশাদার চোর। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। তার সহযোগী জামালের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় আটটির অধিক মামলা রয়েছে। দু’জনেই চুরি করা অর্থে বেশ অর্থ-সম্পদ গড়ে তুলেছে। সিএন্ডএফ টাওয়ার ছাড়াও বারিক বিল্ডিং মোড়ের একটি শিপিং অফিসেও চুরির ঘটনায় নাছির ও তার সহযোগীরা অংশ নিয়েছিল এমন তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে।
তিনটি স্থানে চুরির ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে নাছিরের ভাগিনা গ্রেপ্তার হেলাল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ওসি মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, নাছির দুর্ধর্ষ চোর। ইতিমধ্যে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে। জামিনে বের হয়ে ফের চুরি করে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হেলাল জানায়, নাছির সম্পর্কে তার মামা হয়। ধোপাছড়ির সুন্দরকুল গ্রামে নাছিরের মালিকানাধীন মাছের খামারে চাকুরি করে। আগ্রাবাদের সিএন্ডএফ টাওয়ারের চুরির ঘটনায় হেলাল নিজেও অংশ নিয়েছিল।
হেলাল বলেছে, সিএনএফ টাওয়ারে চুরির ঘটনার আগের দিন নাছিরের ফোন পেয়ে ধোপাছড়ি থেকে নগরীতে আসে। তিনপুলের মাথায় মুসলিম হোটেলে একটি রুমে তাকে থাকতে দেয়া হয়। আসার সময় ব্যাগে ভরে চুরির সরঞ্জাম রেঞ্চ, একটি ছোট আকারের লোহার রড, দুটি স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে আসে। গ্রাম থেকে লুঙ্গি শার্ট পরে আসা হেলালকে রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে ৩৫০ টাকা দিয়ে একটি শার্ট ও ৬০০ টাকা দিয়ে প্যান্ট কিনে দেয় মামা।
হেলাল বলেছে, সিএন্ডএফ টাওয়ারের চুরির ঘটনায় সে ছাড়াও তার মামা নাছির, কুমিল্লার উত্তর বেতিয়ার মৃত আবুল বশরের ছেলে জামাল হোসেন অংশ নিয়েছিল। হেলাল বাইরে পাহারায় ছিল। ওই ভবনের দুটি অফিসে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তারা চুরি করে ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে বের হয়। চুরির টাকা থেকে ১৫০০ টাকা দিয়ে হেলালকে ধোপাছড়ি চলে যেতে বলে নাছির।
হেলাল জানিয়েছে, ধোপাছড়িতে নাছিরের দুই তলা পাকা ঘর রয়েছে। ঘরের চারপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। দুই একর জমি নিয়ে তৈরি করা মাছের খামার দেখাশোনা করে হেলাল। মামার ফোন পেলে নগরীতে এসে চুরিতে সহযোগিতা করে। মামা গ্রামের মসজিদে নিয়মিত দান খয়রাত করে। এলাকার দরিদ্র লোকজনকে আর্থিক সহযোগিতাও করে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় বর্তমান চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলমের পক্ষে কাজ করেছিল। সিএন্ডএফ টাওয়ারে চুরির ঘটনার পর থেকে নাছির আতœগোপনে আছে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ধোপাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম জানান, নাছিরকে তিনি খুব একটা বেশি চিনেন না। তবে সে নিয়মিত এলাকায় থাকে না। মাঝে মাঝে আসে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চুরি করাই নাছিরের প্রধান পেশা। গত বাইশ বছরে ধরে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, বরিশালসহ দেশের বিভিন্নস্থানে শতাধিক চুরির নেতৃত্বে দিয়েছে নাছির। নগরীর বিভিন্ন কর্পোরেট হাউসে চুরির সাথেও নাছির, জামাল ও সহযোগী আজিজ জড়িত। দরিদ্রতার মাঝে বেড়ে ওঠা নাছির দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে চন্দনাইশের ধোপাছড়ি বাজারে একটি চা দোকানে কাজ করতো। ১৯৯৬ সালের দিকে চট্টগ্রাম শহরে আসে। নগরীতে এসে ষোলশহর এলাকায় একটি চা দোকান দেয়। সেখান থেকেই চুরির সাথে জড়িত হয়। ২০১১ সালের ৩১ মে মিশম্যাক অফিসে চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় অংশ নিয়ে আলোচনায় আসে নাছির। সেখানে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা নিষ্ক্রিয় করে ভল্ট ভেঙে ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা চুরি করেছিল। ২০১১ সালের ৬ জুন বিকেলে জিইসি মোড় থেকে সহযোগী আজিজসহ নাছিরকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। জামিনে বের হয়ে ২০১২ সালের ৮ আগস্ট দামপাড়া টেলিটকের পরিবেশকের অফিস থেকে এক লাখ ২০ হাজার চুরি করে। ঐ ঘটনায়ও আবার গ্রেপ্তার হয়। এর আগেও পাঁচবার গ্রেপ্তার হয়েছিল নাছির।
গত বছরের ৩০ অক্টোবর দেওয়ানহাট পোস্তারপাড় এলাকায় ইউনিলিভারের পরিবেশক প্রাইম কর্পোরেশনের অফিসেও সিসি ক্যামেরা নিষ্ক্রিয় করে ভল্ট ভেঙে ৩০ লাখ টাকা লুট করে।
ওসি মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, নাছিরের সহযোগী আজিজ, শুক্কুর, হেলাল, শওকত গ্রেপ্তার হয়েছে। জামাল ও নাছির পলাতক রয়েছে।
সুত্রঃদৈনিক পূর্বকোণ
ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (ওসি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম জানান, নাছির পেশাদার চোর। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। তার সহযোগী জামালের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় আটটির অধিক মামলা রয়েছে। দু’জনেই চুরি করা অর্থে বেশ অর্থ-সম্পদ গড়ে তুলেছে। সিএন্ডএফ টাওয়ার ছাড়াও বারিক বিল্ডিং মোড়ের একটি শিপিং অফিসেও চুরির ঘটনায় নাছির ও তার সহযোগীরা অংশ নিয়েছিল এমন তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে।
তিনটি স্থানে চুরির ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে নাছিরের ভাগিনা গ্রেপ্তার হেলাল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ওসি মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, নাছির দুর্ধর্ষ চোর। ইতিমধ্যে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে। জামিনে বের হয়ে ফের চুরি করে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হেলাল জানায়, নাছির সম্পর্কে তার মামা হয়। ধোপাছড়ির সুন্দরকুল গ্রামে নাছিরের মালিকানাধীন মাছের খামারে চাকুরি করে। আগ্রাবাদের সিএন্ডএফ টাওয়ারের চুরির ঘটনায় হেলাল নিজেও অংশ নিয়েছিল।
হেলাল বলেছে, সিএনএফ টাওয়ারে চুরির ঘটনার আগের দিন নাছিরের ফোন পেয়ে ধোপাছড়ি থেকে নগরীতে আসে। তিনপুলের মাথায় মুসলিম হোটেলে একটি রুমে তাকে থাকতে দেয়া হয়। আসার সময় ব্যাগে ভরে চুরির সরঞ্জাম রেঞ্চ, একটি ছোট আকারের লোহার রড, দুটি স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে আসে। গ্রাম থেকে লুঙ্গি শার্ট পরে আসা হেলালকে রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে ৩৫০ টাকা দিয়ে একটি শার্ট ও ৬০০ টাকা দিয়ে প্যান্ট কিনে দেয় মামা।
হেলাল বলেছে, সিএন্ডএফ টাওয়ারের চুরির ঘটনায় সে ছাড়াও তার মামা নাছির, কুমিল্লার উত্তর বেতিয়ার মৃত আবুল বশরের ছেলে জামাল হোসেন অংশ নিয়েছিল। হেলাল বাইরে পাহারায় ছিল। ওই ভবনের দুটি অফিসে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তারা চুরি করে ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে বের হয়। চুরির টাকা থেকে ১৫০০ টাকা দিয়ে হেলালকে ধোপাছড়ি চলে যেতে বলে নাছির।
হেলাল জানিয়েছে, ধোপাছড়িতে নাছিরের দুই তলা পাকা ঘর রয়েছে। ঘরের চারপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। দুই একর জমি নিয়ে তৈরি করা মাছের খামার দেখাশোনা করে হেলাল। মামার ফোন পেলে নগরীতে এসে চুরিতে সহযোগিতা করে। মামা গ্রামের মসজিদে নিয়মিত দান খয়রাত করে। এলাকার দরিদ্র লোকজনকে আর্থিক সহযোগিতাও করে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় বর্তমান চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলমের পক্ষে কাজ করেছিল। সিএন্ডএফ টাওয়ারে চুরির ঘটনার পর থেকে নাছির আতœগোপনে আছে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ধোপাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম জানান, নাছিরকে তিনি খুব একটা বেশি চিনেন না। তবে সে নিয়মিত এলাকায় থাকে না। মাঝে মাঝে আসে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চুরি করাই নাছিরের প্রধান পেশা। গত বাইশ বছরে ধরে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, বরিশালসহ দেশের বিভিন্নস্থানে শতাধিক চুরির নেতৃত্বে দিয়েছে নাছির। নগরীর বিভিন্ন কর্পোরেট হাউসে চুরির সাথেও নাছির, জামাল ও সহযোগী আজিজ জড়িত। দরিদ্রতার মাঝে বেড়ে ওঠা নাছির দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে চন্দনাইশের ধোপাছড়ি বাজারে একটি চা দোকানে কাজ করতো। ১৯৯৬ সালের দিকে চট্টগ্রাম শহরে আসে। নগরীতে এসে ষোলশহর এলাকায় একটি চা দোকান দেয়। সেখান থেকেই চুরির সাথে জড়িত হয়। ২০১১ সালের ৩১ মে মিশম্যাক অফিসে চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় অংশ নিয়ে আলোচনায় আসে নাছির। সেখানে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা নিষ্ক্রিয় করে ভল্ট ভেঙে ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা চুরি করেছিল। ২০১১ সালের ৬ জুন বিকেলে জিইসি মোড় থেকে সহযোগী আজিজসহ নাছিরকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। জামিনে বের হয়ে ২০১২ সালের ৮ আগস্ট দামপাড়া টেলিটকের পরিবেশকের অফিস থেকে এক লাখ ২০ হাজার চুরি করে। ঐ ঘটনায়ও আবার গ্রেপ্তার হয়। এর আগেও পাঁচবার গ্রেপ্তার হয়েছিল নাছির।
গত বছরের ৩০ অক্টোবর দেওয়ানহাট পোস্তারপাড় এলাকায় ইউনিলিভারের পরিবেশক প্রাইম কর্পোরেশনের অফিসেও সিসি ক্যামেরা নিষ্ক্রিয় করে ভল্ট ভেঙে ৩০ লাখ টাকা লুট করে।
ওসি মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, নাছিরের সহযোগী আজিজ, শুক্কুর, হেলাল, শওকত গ্রেপ্তার হয়েছে। জামাল ও নাছির পলাতক রয়েছে।
সুত্রঃদৈনিক পূর্বকোণ
0 মন্তব্যসমূহ