দুর্গাপূজায় কোনো নিরাপত্তার ঝুঁকি নেই : ডিএমপি কমিশনার

বিএন ডেস্কঃ
আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো নিরাপত্তার ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। রোববার দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মন্দিরের নিরাপত্তার স্বার্থে পূজা মণ্ডপে কোনো ধরনের ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ বহন না করারও অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতিটি মণ্ডপ ঘিরে আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। আমরা ঢাকাবাসীকে জানাতে চাই, কোনো ধরণের কোনো নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। তবে আমরা সতর্ক থাকবো, যাতে জনগণের জানমালের কোনো ক্ষতি না হয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, এবার ঢাকা মহানগর এলাকায় ২৩৪টি মণ্ডপে পূজা উদযাপিত হবে। সবচেয়ে বড় ৯টি ম-পে বিশেষ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সবগুলো মণ্ডপে আমাদের পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। বড় মণ্ডপগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা, প্রবেশদ্বারে আর্চওয়ে মোতায়েন করা হবে। পোশাকি পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা তৎপর থাকবেন। মণ্ডপগুলোর পাশে ফায়ার টেন্ডার থাকবে।
এছাড়া ঢাকেশ্বরী মন্দিরে একটি কেন্দ্রীয় কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। এখানে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন। পূজা চলাকালে পটকা, আতশবাজি ও মাদকদ্রব্যের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। যেসব জায়গায় বিসর্জন দেওয়া হবে সেসব জায়গায় বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। পূজা চলাকালে মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য নামাজ ও আজানের সময় বাদ্যযন্ত্র না বাজানো বা সীমিত রাখার জন্য বলা হয়েছে।
এছাড়া আগামী শুক্রবার জুম্মার নামাজ উপলক্ষে দুপুর ১২ টা থেকে ২টা পর্যন্ত সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পূজা শুরুর আগে থেকেই বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা চেকপোস্ট চালু করা হয়েছে। পূজা মণ্ডপগুলোতে ব্যাগ, ব্যাগপ্যাক,ছুরি, চাকু ও দাহ্যপদার্থ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া শোভাযাত্রায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। শোভাযাত্রার পথে কোনও ধরনের হকার বা অস্থায়ী দোকান থাকতে দেওয়া হবে না। এসব নিরাপত্তার মাধ্যমে পূজা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
আরো পড়ুন : ২৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে ভাসানচরে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে


ঘূর্ণিঝড় তিতলি মোকাবিলার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে উপকূলীয় ১৯ জেলার সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র সার্বিক পরিস্থিতি ও প্রস্তুতি নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম একই মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ মন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি সকালে ভারতে আঘাত হেনেছে। তিতলির মোকাবেলায় আমরা ব্যাপক প্রস্তিুতি নিয়েছি। উপকূলীয় ১৯জেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি আজ ভোররাত থেকে ভারতের উড়িষ্যা ও অন্ধ্র প্রদেশের উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এই ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় আমাদের সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রয়েছে। এছাড়া সিপিপির ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার-ভিডিপি, স্কাউট প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, তলির পূর্বাভাস পাওয়ার পর সে মোতাবেক দক্ষিণাঞ্চলের ঘূর্ণিঝড় প্রবণ জেলাসমূহকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিতলির সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে মায়া বলেন, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত হ্যারিকেনের তীব্রতা সম্পন্ন এ ঘূর্ণিঝড় উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ ভোর রাতে ভারতের গোপালপুরের নিকট দিয়ে উড়িষ্যা ও অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানলে এর মোকাবেলায় প্রত্যেকটি উপজেলায় এবং জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা এবং তাদেরকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রেলরুম এনডিআরসিসি এর সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে ২৫ হাজার পরিবারকে ভাসানচরে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। প্রথম দফায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে নেওয়া হবে। তবে সেটা অস্থায়ী। আমরা আশা করছি, মিয়ানমার সরকার খুব শিগগির তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেবে।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শাহ্ কামাল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এজাজুল বার, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ, সিপিপির পরিচালক আহমাদুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ