কর্ণফুলী উপজেলায় ছাত্রলীগ নেতা মামুন আল রশীদ হত্যাকা-ের মুল ঘাতকেরা ৬দিনেও গ্রেফতার হয়নি। এমনকি ঘটনার আসল রহস্য কী তা ও উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এনিয়ে নিহত মামুনের সহকর্মী ও স্বজনদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এরই মধ্যে আলোচিত এই নির্মম হত্যাকান্ডের নেপথ্যে কারণ হিসেবে এলাকায় দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ আইসি বলেছিলো রাজনৈতিক দলাদলি ও আধিপত্য বিস্তারে কোন ঘটনা এটি। আর নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় ছাত্রলীগের একাংশ দাবি করছে মাদকবিরোধী কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকার কারণে ঘাতকেরা মামুনকে খুন করেছেন।
কর্ণফুলী থানার অপারেশন অফিসার মোঃ হোসাইন জানান, এই মুহুর্তে বেশি কিছু বলতে পারবনা তবে পুলিশ আসামীদের ধরতে অভিযানে রয়েছে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে’।
যদিও ঘটনাস্থলে থাকা আহত আবদুল আজিজ হতে এ ঘটনায় সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অনেকের মতে এটি একটি বিপথে যাওয়া সংঘবদ্ধ মাদকসেবী কিশোর চক্রের বেপরোয়া কান্ড। যাদের নিয়ন্ত্রণ করে এলাকার এক দুর্ধর্ষ ডাকাত। যিনি কিছুদিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে এলাকায় মাদক ব্যবসায় জড়িত।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতার এমন নির্মম মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তীব্র নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড় ওঠেছে। এছাড়া মুল আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় স্বজন ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মামুনের বড় ভাই ইয়াছিন কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, ৬ দিন পেরিয়ে গেছে। মুল আসামীরা এখনো গ্রেফতার হয়নি। আমি সকল আসামীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানাই’।
এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত এলাকায় একটা উড়ো খবর প্রচার হয়। কিশোরগঞ্জ ও ঢাকা হতে পলাতক আসামীদের গ্রেফতার হয়েছে বলে । এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্ণফুলী থানার ওসি তদন্ত মোঃ ইমাম হাসান বলেন, এই মুর্হুতে আমার কাছে এ রকম কোন তথ্য নেই। তবে আসামীদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান চলছে’।
কর্ণফুলী থানায় দায়ের করা হত্যা মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, মামলায় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের পাঁচ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের হয়। আসামিরা হলেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মী আলী নুর, আজম, আলী আজগর, ওমর ও শাহনূর।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনো কেউ গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে অভিযান চলছে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর গ্রামের জমাদর পাড়ায় বাড়ির অদুরে রাস্তায় ৭/৮ জন দুর্বৃত্ত এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে ছাত্রলীগ নেতা মামুন আল রশিদ (২৪) ও বড় উঠান ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আজিজকে। সন্ত্রাসীরা মামুনের দেহ থেকে ডান হাত আলাদা করে ফেলে। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এসে দু’জনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মামুন কর্ণফুলী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। মামুনের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ এবং মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ। মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে মামুনকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে নেতারা খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
0 মন্তব্যসমূহ